Chinese Heliport in Arunachal Pradesh: আস্ত হেলিকপ্টার বন্দর তৈরি করছে চিন, অরুণাচল সীমান্তে আরও আগ্রাসী ড্রাগন
India-China Conflict: সেনা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য হেলিকপ্টার ওঠানামার বন্দরটি তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে
নয়াদিল্লি: সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ল আরও। কারণ এবার অরুণাচল প্রদেশের কাছে হেলিকপ্টার বন্দর গড়ে তোলার কাজ শুরু করল তারা। অরুণাচলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ২০ কিলোমিটার পূর্বে চিন নয়া হেলিকপ্টার বন্দর গড়ে তুলছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে চিনাবাহিনীর গতিবিধি ধরা পড়েছে কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে। দ্রুত সেনা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য হেলিকপ্টার ওঠানামার বন্দরটি তৈরি করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। (Chinese Heliport in Arunachal Pradesh)
Maxar Technologies-এর কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে অরুণাচল সীমান্তে হেলিপোর্ট তৈরির বিষয়টি ধরা পড়েছে। তিব্বতের স্বয়ত্তশাসিত অঞ্চলের অন্তর্গত গোংরিগাবু চু নদীর তীরে নিংচি এলাকায় হেলিপোর্টটি তৈরি হচ্ছে। ওই এলাকা চিনা ভূখণ্ডের মধ্যেই পড়ে। ভারত ওই জমির উপর দখল নেই ভারতের। কিন্তু যেভাবে ভারতের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে চিন, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। (India-China Conflict)
কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবি এবং সেই সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকায় কোনও নির্মাণকার্য চলছিল না। হঠাৎ করেই সেখানে হেলিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বরের ছবিতে নির্মাণের জন্য জায়গা পরিষ্কার করতে দেখা গিয়েছে। এর পর, ১৬ সেপ্টেম্বর MAXAR-এর কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা যায়, নির্মাণকার্য অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।
China is constructing a new heliport near Arunachal Pradesh's ‘Fishtails’ sector, merely 20 kilometers from the Indian border, this facility will likely enhance China’s ability to swiftly mobilize troops to forward positions & would improve its border patrols pic.twitter.com/xpSSQGLkS4
— Damien Symon (@detresfa_) September 16, 2024
নির্মীয়মান হেলিপোর্টটিতে ৬০০ মিটার দীর্ঘ রানওয়ে রয়েছে। সেখান থেকেই ওঠানামা করবে হেলিকপ্টার, যা উঁচু পার্বত্য এলাকার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বেশি ওজনের সরঞ্জামও ওঠানামা করতে পারবে সেখানে। হেলিপোর্টে কমপক্ষে তিনটি হ্যাঙ্গারও দেখা গিয়েছে, একটি অ্যাপ্রন এলাকা, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল পরিষেবা এবং একাধিক ভবনও রয়েছে।
ভৌগলিক স্থান নিয়ে গবেষণা করেন ডেমিয়েন সাইমন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনিও ওই ছবি শেয়ার করেছেন। চিনা হেলিপোর্টটি ঠিক কোথায় নির্মিত হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করে দেখিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, হেলিপোর্টটি তৈরি হলে নজরদারি চালানো থেকে তথ্য সংগ্রহ, সেনা সরঞ্জান সরবরাহের কাজ আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে চিন। ঘন জঙ্গল এবং বন্ধুর পার্বত্য অঞ্চলে এতদিন বিচরণে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল তাদের। এবার সেই সমস্যা ঘুচতে চলেছে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সেনার বিশেষ সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, চিনের গতিবিধির উপর তাঁদেরও নজর রয়েছে। চিনের হেলিপোর্ট তৈরির বিষয়টি সম্পর্কে তাঁরা অবগত বলে জানিয়েছেন। হেলিপোর্টটি দুই কাজে ব্যবহৃত পারে বলে জানা যাচ্ছে, প্রত্যন্ত এলাকায় চিনা নাগরিকদের সরিয়ে এনে গ্রাম গড়ে তোলা এবং সেখান থেকে সামরিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া। হঠাৎ করে যুদ্ধ বাধলে, সেখান থেকে মোকাবিলা করা লক্ষ্য ড্রাগন বাহিনীর।
অরুণাচল প্রদেশের কাছে যেখানে হেলিপোর্টটি তৈরি করছে চিন,সেটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। ওই এলাকাটি অঞ্চলের মধ্যে পড়ে, সীমান্ত অঞ্চলের আকারের নিরিখে এমন নামকরণ। Fishtail 1 এবং Fishtail 2 নিয়ে গঠিত। Fishtail 1 ডিবাং উপত্যকার অন্তর্গত, Fishtail 2 আঞ্জো জেলার অন্তর্গত, যা অরুণাচলের অংশ। দুই এলাকাই স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত। ওই অঞ্চলে চিব এবং ভারতের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার সংজ্ঞা পৃথক। ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রবীণ বক্সি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর।
এই হেলিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগের আরও একটি কারণ হল, সীমান্তের কাছে বর্তমানে শতাধিক গ্রাম গড়ে তুলছে চিন। বিতর্কিত অঞ্চলের উপর নিজেদের দখলদারি কায়েম করতেই এমন পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে, ভুটানেও একই পন্থা নিয়েছিল তারা। রাজ পরিবার যে এলাকাগুলির উপর দখল দাবি করেনি, যে এলাকার উপর কোনও পক্ষ দাবি জানায়নি, তা কার্যত গায়ের জোরে দখল করে চিন। সেখানে শহর গড়ে তুলেছে তারা। চওড়া রাস্তা গড়ে তুলে হয়েছে। শুধু অরুণাচলই নয়, লাদাখেও সীমান্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে ভারত ও চিনের।