![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
CPIM Election Analysis Exclusive: হারের কারণ খুঁজতে বুথ স্তরের কর্মী, সদস্যদের মতামত চাইছে সিপিএম
প্রাপ্ত ভোটের শতাংশের হারেও পূর্ববর্তী বছরগুলির তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে বাম দলগুলি। আর স্বাধীনোত্তর ভারতে এই প্রথম বাম, কংগ্রেস শূন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা দেখছে এরাজ্যের মানুষ।
![CPIM Election Analysis Exclusive: হারের কারণ খুঁজতে বুথ স্তরের কর্মী, সদস্যদের মতামত চাইছে সিপিএম ABP Exclusive: CPIM is seeking views of grass root level party workers and members to find out the reason to lose in recent assembly election CPIM Election Analysis Exclusive: হারের কারণ খুঁজতে বুথ স্তরের কর্মী, সদস্যদের মতামত চাইছে সিপিএম](https://static.abplive.com/wp-content/uploads/sites/7/2017/10/17161200/cpm-flagjpgimage784410.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: লক্ষ্য ছিল ২০২১-এ রাজ্যের পট পরিবর্তন। আর তাই আসরে নেমেছিল রাজ্যের বাম দলগুলি। হাতে হাত মিলিয়েছিল কংগ্রেস, আইএসএফ। আড়ালে, আবডালে বিরোধিতা থাকলেও, শেষমেশ তিন পক্ষ এক ছাতার তলায় এসেই একুশের মহারণে লড়াই করেছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটের ফল বলল অন্য কথা। সরকার গঠন তো দূরের কথা, শুধুমাত্র একটি কেন্দ্রে জিততে পেরেছিল সংযুক্ত মোর্চা। প্রাপ্ত ভোটের শতাংশের হারেও পূর্ববর্তী বছরগুলির তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে বাম দলগুলি। আর স্বাধীনোত্তর ভারতে এই প্রথম বাম, কংগ্রেস শূন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা দেখছে এরাজ্যের মানুষ।
৩৪ বছর এই বাংলাতেই ক্ষমতায় ছিল বামেরা। সিপিএম সহ রাজ্যের বাম দলগুলির এই বিপর্যয়ের কারণ কী? কেন বামেদের প্রাপ্ত ভোটের হার ৭ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে? এই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আলিমুদ্দিনের অন্দরে। আর তাই এই হার পর্যালোচনা করার আসরে নেমেছে সিপিএম। হারের কারণ পর্যালোচনার জন্য মতামত জানতে চাওয়া হচ্ছে একেবারে বুথ স্তরের কর্মী, সদস্যদের। কেন এই পরিস্থিতি তা জানতে চাওয়া হচ্ছে এরিয়া কমিটি, ব্রাঞ্চ কমিটির সদস্যদের কাছে। এর পাশাপাশি একাধিক বিষয়ে নেওয়া হচ্ছে তাঁদের মতামত। একেবারে প্রশ্নের আকারে পার্টি সদস্যদের ফর্ম দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলি।
কী জানতে চাওয়া হচ্ছে কর্মী-সদস্যদের কাছে? আলিমুদ্দিনের গাইডলাইন মেনে একাধিক প্রশ্ন তৈরি করেছে বিভিন্ন কমিটি। সিপিএম বিরাটি বিশরপাড়া পশ্চিম এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে একটি ফর্ম বিলি করা হয়েছে পার্টির কর্মী-সদস্যদের মধ্যে। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিষ্ঠান বিরোধী মানসিকতা কি আসলে গড়ে উঠেছিল? এর উত্তর দেওয়ার জন্য হ্যাঁ, না, আংশিক, বোঝা যায়নি এই অপশনগুলি রয়েছে। এছাড়াও প্রশ্ন করা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিকে কি খাটো করে দেখা হয়েছিল? তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি-র আঁতাঁত সম্পর্কিত প্রচার কি গ্রহণ করেননি সাধারণ মানুষ? একইসঙ্গে সংযুক্ত মোর্চা গড়ে তোলা নিয়ে বাম মনোভাবাপন্ন মানুষের মনোভাব সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে কর্মী সদস্যদের কাছে। পাশাপাশি আইএসএফ সম্পর্কেও ধারণা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে কর্মী, সদস্যদের উদ্দেশে। একইসঙ্গে সংগঠন চাঙ্গা করতে পার্টির সদস্য সহ কর্মীদের কোনও মতামত থাকলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিপিএম বিরাটি বিশরপাড়া পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক পিন্টু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কেন এই ফলাফল হল তা প্রকৃতভাবে জানতে চাওয়ার উদ্দেশেই এই ফর্ম তৈরি করা হয়েছে। তাই একেবারে দলের তৃণমূল স্তরের কর্মী, সদস্যদের কাছে তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। প্রত্যেককে স্বাধীনভাবে তাঁর মতামত দিতে পারবেন। রাজনৈতিক দিক সহ সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করাই লক্ষ্য।
৮ দফায় একমাসের বেশি সময় ধরে একুশের নির্বাচন হয়েছে। ২ মে ভোটের ফলাফল ঘোষণা হয়। আর সেই ফল দেখে হতবাক আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। ফল ঘোষণার দিন কয়েক পরেই বৈঠকে বসে রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। এই বিপর্যয়ের কারণ কী তা খতিয়ে দেখতে পার্টির নিচু স্তরের কর্মীদের কাছে মতামত চাওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়। এরপরই আলিমুদ্দিন থেকে বিভিন্ন জেলা কমিটিগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয় হারের কারণ পর্যালোচনা করতে হবে। কীভাবে পর্যালোচনা করা হবে তার জন্য দেওয়া হয় গাইডলাইনও। তা মেনেই একাধিক প্রশ্ন তৈরি করেছে বিভিন্ন এরিয়া, শাখা কমিটি। আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, কর্মী, সদস্যদের মতামত নিয়ে এরিয়া, শাখা কমিটিগুলি তার সারাংশ পাঠাবে সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির কাছে। এরপর জেলা কমিটিগুলি তা ৫ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠাবে রাজ্য কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, এরপর সাধারণ মানুষের থেকেও মতামত জানতে চাইবে আলিমুদ্দিন। স্পষ্টতই, এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে সিপিএম।
২০২০ সালের লকডাউন থেকে শ্রমজীবি ক্যান্টিন শুরু করে বামেরা। আমফান দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতেও দেখা গিয়েছিল তাদের। করোনাকালে রেড ভলেন্টিয়ারের ভূমিকাও দেখেছে সাধারণ মানুষ। বৃদ্ধতন্ত্রদের দুর্নাম ঘুচিয়ে মীনাক্ষি, সৃজন, দীপ্সিতা, ঐশিদের মতো তরুণ মুখদেরও প্রার্থী করেছিল সিপিএম। কিন্তু ভোট বাক্সে তার বিন্দু মাত্র প্রভাব পড়েনি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতা হয়েছিল বাম এবং কংগ্রেসের। ওই ভোটে বাম কংগ্রেস দুই দল মিলিয়ে পেয়েছিল ৪০ শতাংশের বেশি। ৭৭টি আসনে জিতেছিল। প্রথম ধাক্কাটা আসে ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে। বাংলা থেকে একজন সাংসদও লোকসভায় পাঠাতে পারেনি বামেরা। এমনকি লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভাভিত্তিক ফলের নিরিখে কংগ্রেস ৯টি আসনে এগিয়ে থাকলেও বামেরা একটিতেও লিড পায়নি। আরও বড় ধাক্কাটা এল বিধানসভা ভোটে।
বাংলার নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে ভোটগ্রহণ হয়েছে ২৯২টি আসনে। বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত ধরল আইএসএফও। ব্রিগেডের ময়দানে নির্বাচনের আগে মিটিং হল।আশা ছিল হাল ফিরবে। কিন্তু এবার আরও ধরাশায়ী পরিস্থিতি তিন দলের জোট সংযুক্ত মোর্চার। সংযুক্ত মোর্চার ঝুলিতে এসেছে মাত্র একটা আসন। ভাঙড় থেকে জয়ী হয়েছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী। এমনকি অধীর-গড় বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদেও দাঁত ফোঁটাতে পারেনি কংগ্রেস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের মতে তিন পক্ষ হাত ধরাধরি করে ভোটে লড়লেও বিকল্প হিসেবে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে পারেনি। আর এই আবহে ধাপে ধাপে পর্যালোচনা, হারের অনুসন্ধান করাই এখন প্রধান লক্ষ্য আলিমুদ্দিনের।
(তথ্য সাহায্য-উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়)
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)