Sunita Williams Health Problem Issue: শিশুরা যেভাবে হাঁটতে শেখে, সেভাবেই শুরু করতে হবে সুনীতা উইলিয়ামসদের, পরবর্তী সময়ে হতে পারে ক্যানসারও !
International Space Station : ন'মাস পরে পৃথিবীতে ফিরছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর।

নয়াদিল্লি : দীর্ঘ ন-মাস মহাকাশে বন্দিদশা কাটানোর পর আজ ভোররাতে পৃথিবীতে ফিরতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাশ থেকে ফিরলেও এখনই ঠিক ভাবে হাঁটার ক্ষমতা থাকবে না সুনীতাদের। বসে থাকা বা শুয়ে থাকার আলাদা অনুভূতিটুকুও তাঁদের হবে না। নানা শারীরিক জটিলতায় জর্জরিত হতে হবে তাঁদের। শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি, হাড়ের শক্তি কমার পাশাপাশি, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা এবং প্লাজ়মা বা রক্তরসের তারতম্য হতে পারে। এছাড়াও এতদিন তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মধ্যে থাকার ফলে পরবর্তী সময়ে ক্যানসারও হতে পারে মহাকাশচারীদের।
কেন বেবি ফিট তৈরি হয় ?
নাসার একজন প্রাক্তন মহাকাশচারী একটি নিউজ চ্যানেলের সঙ্গে কথোপকথনে বলেছিলেন যে, মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ অনুপস্থিতির কারণে যাত্রীদের কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীতে হাঁটতে খুব অসুবিধা হয়। এটি ঘটে কারণ তাঁরা পৃথিবীতে ফিরে আসার পরে তাঁদের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন না। যে সমস্ত মহাকাশচারী সেখানে দীর্ঘ সময় থাকেন, তাঁদের শিশুর পায়ের মতো অবস্থা হয়ে যায় এবং তাঁদের পক্ষে হাঁটা কঠিন হয়ে পড়ে। পায়ের ত্বকের পুরু অংশ হারিয়ে যায়। ফিরে আসার পর ফের শিশুর পায়ের মতো হয়ে যায়। অবশ্য কিছু সময় পরে আবার স্বাভাবিক হয়ে যায় হাঁটা।
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, "আপনি একটা লম্বা লিফ্টে নামছেন, যে লিফ্টটা হয়ত হাজার মাইলের লিফ্ট। অর্থাৎ আপনি একটা জিরো গ্র্যাভিটি থেকে হঠাৎ করে যখন গ্র্যাভিটিতে নামলেন আপনি সেই ফোর্সটা নিতে পারবেন না। আপনি উল্টে পড়ে যাবেন। যখন উনি পা-টা রাখলেন, রক্তটা পায়ের দিকে চলে যাবে। ব্রেনের দিকে কম যাবে। ফলে, মাথা ঘুরে যাওয়া একদমই স্বাভাবিক। আবার উল্টে পড়ে যাওয়ার কথা। যখন এখানে এসে পৌঁছবেন তাঁদের ইমিউন সিস্টেম সম্পূর্ণ অন্যভাবে রিঅ্যাক্ট করবে। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ...প্রত্যেকটিকেই অভ্যস্ত হতে আবার দুই থেকে তিন মাস সময় দিতে হবে।"
পেশি ও হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে
দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকার পর যাত্রীদের হাড় ও পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় তাঁদের শরীরে অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। মহাকাশে বায়ু এবং মাধ্যাকর্ষণ অনুপস্থিতির কারণে নভশ্চররা মহাকাশে কোনো ওজন অনুভব করেন না। তাঁদের পায়ের উপরের চামড়া চলে যায় এবং তাঁদের পা শিশুদের মতো নরম হয়ে যায়, তাই হাঁটতে অসুবিধা হয়। শিশুর পা ছাড়াও, তাঁদের হাড়ের ঘনত্ব ক্ষয়ের সমস্যায় পড়তে হয়। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে এঁদের হাড়ের ঘনত্ব নষ্ট হয়ে যায় এবং হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এছাড়া শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে পা ও পিঠের পেশিও দুর্বল হয়ে পড়ে। এটি প্রতিরোধ করতে, মহাকাশচারীরা নিয়মিত স্পেস স্টেশনেই আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করেন। নিয়মিত স্কোয়াট, বেঞ্চ প্রেসিং, ডেডলিফ্ট ইত্যাদি ব্যবহার করেন, যার জন্য মহাকাশ স্টেশনে একটি বিশেষ স্থান তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত ট্রেডমিল চালান। হাড় মজবুত রাখতে তিনি সাপ্লিমেন্টও নেন। মহাকাশ থেকে ফেরার পর নভশ্চরদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকর্ষীয় তরঙ্গের বিকিরণও অত্যন্ত ক্ষতি করতে পারে। মহাকাশ স্টেশনের দেওয়াল তেজস্ক্রিয় বিকিরণকে ঠেকাতে পারে না। এই বিকিরণ স্পেস স্টেশনের দেওয়াল ভেদ করে ঢোকে এবং নভশ্চরদের শরীরেও প্রভাব ফেলে। এর জেরে পরবর্তী সময়ে ক্যানসারও হতে পারে।
চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ওঁর পেশি, হাড়কে আবার রি-ট্রেন করতে হবে। স্নায়ুকে রি-ট্রেন করতে হবে। সময়টা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল, কতটা রিহ্যাব উনি করতে পারবেন। সাইকোলজিক্যাল চ্যালেঞ্জও থাকবে। শারীরিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জ। তবে, যে সময়টা উনি কাটিয়েছেন, তাতে মোটামুটি তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগবে।"
বিশেষজ্ঞদের মতে, এতদিন মহাকাশে থাকার ফলে সুনীতাদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হবে। রক্তের ঘনত্বও কমে যাবে। প্লাজ়মা বা রক্তরসের তারতম্য হতে পারে।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
