Xi Jinping: গণহারে উড়ান বাতিল চিনে, গৃহবন্দি চিনপিং! সেনা-অভ্যুত্থান জল্পনা
Alleged PLA Coup: চিনের মানবাধিকার কর্মী জেনিফার জেং সর্বপ্রথম সেনা অভ্যুত্থান ঘটছে বলে দাবি করেন।
বেজিং: মায়ানমার, শ্রীলঙ্কার পর ভারতের আর এক পড়শি দেশে অশান্তির আশঙ্কা। এ বার চিনের অভ্যন্তরীণ (China Coup) রাজনীতি উথালপাথাল হওয়ার মুখে বলে খবর উঠে আসছে। শোনা যাচ্ছে, দেশের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংকে (Xi Jinping)গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। চিনের সেনাবাহিনী, পিপলস লিবারেশন (People's Liberation Army) আর্মি তাঁকে গৃহবন্দি করে রেখে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। শনিবার তা নিয়ে উত্তাল ট্যুইটার-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এ নিয়ে বেজিংয়ের তরফে কোনও বিবৃতি না দেওয়ায় আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। তার পর থেকেই ট্যুইটার-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে জোর চর্চা চিনপিংকে নিয়ে। তবে গোটাটাই জল্পনা, বেজিংয়ের তরফে এ নিয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
চিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সেনা অভ্যুত্থানের ছায়া!
চিনের মানবাধিকার কর্মী জেনিফার জেং সর্বপ্রথম সেনা অভ্যুত্থান ঘটছে বলে দাবি করেন। সেই মর্মে ট্যুইটারে একটি ভিডিও-এ তুলে ধরেন তিনি, যার সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তাতে রাস্তা দিয়ে সেনার কনভয় ছুটতে দেখা গিয়েছে। প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেনার কনভয় বেজিংয়ের রাস্তায় বলে জানান তিনি। শি চিনপিংকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। এমনকি সরকারের তিন আধিকারিককে হত্যাও করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। চিনপিংকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধু ঘোষণা বাকি বলে দাবি জেনিফারের।
পড়শি দেশে কিছু যে ঘটছে, তার ইঙ্গিত যদিও তিন দিন আগে থেকেই মিলতে শুরু করেছিল বলে দাবি করছেন কেউ কেউ। তাঁদের দাবি, অজ্ঞাত কারণে চিনের সর্বত্র গণহারে বিমান বাতিল হচ্ছে বলে বুধবার খবর সামনে আসে। দেশের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম, china.com জানায়, ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা বেজে ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ৯ হাজার ৫৮৩টি বিমানের উড়ান বাতিল হয়। দেশের সর্বত্র ওইদিন ৫৬.৬৬ শতাংশ বিমানের উড়ানই বাতিল হয় বলে জানানো হয়।
#PLA military vehicles heading to #Beijing on Sep 22. Starting from Huanlai County near Beijing & ending in Zhangjiakou City, Hebei Province, entire procession as long as 80 KM. Meanwhile, rumor has it that #XiJinping was under arrest after #CCP seniors removed him as head of PLA pic.twitter.com/hODcknQMhE
— Jennifer Zeng 曾錚 (@jenniferatntd) September 23, 2022
চিনে বিমান সংক্রান্ত খবর সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরে ফ্লাইট মাস্টার নামের একটি সংস্থা। তাদের কাছ থেকেই এই তথ্য সামনে এসেছে বলে নিজেদের প্রতিবেদনে জানায় china.com। পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, বেজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৬২২টি বিমান বাতিল হয়েছে। সেখানে বিমান বাতিলের হার ৬০ শতাংশ। শাংহাই পুদং বিমানবন্দর ৬৫২টি বিমান বাতিল করেছে। শেনঝেং বাওয়াং বিমানবন্দর উড়ান বাতিল করেছে ৫৪২টি বিমানের।
This video of military vehicles moving to #Beijing comes immediately after the grounding of 59% of the flights in the country and the jailings of senior officials. There’s a lot of smoke, which means there is a fire somewhere inside the #CCP. #China is unstable. https://t.co/hSUS3210GR
— Gordon G. Chang (@GordonGChang) September 24, 2022
গত কয়েক দিনে গণহারে বিমান বাতিল চিনে
এ ছাড়াও, দেশের পশ্চিমের গুইয়াং লংদোংবাও বিমানবন্দর ৫৩৯টি, লাহ্সা গোংগা বিমানবন্দর ১৫৭টি, চেংদু তিয়াংফু বিমানবন্দর ৭৫২টি বিমান বাতিল করে বলে জানা যায়। এ ছাড়াও বুধবারই উরুমকি দিওবো বিমানবন্দর ৪৭৬টি, তিয়ানজিন বিমানবন্দর ৩৫৩টি, হারবিন তাইপিন বিমানবন্দর ২৭৫টি, শিয়ান শিয়ানিয়াং বিমানবন্দর ৫৫টি, নানজিং লুকোও বিমানবন্দর ৩৭৮টি, গুয়াংঝো বায়ুন বিমানবন্দর ৫৬০টি বিমান বাতিল করে বলে জানা যায়। এ নিয়ে দিল্লির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও, মোদি সরকারের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বিষয়টি নিয়ে ট্যুইট করেছেন। একটি ভিডিও পোস্ট করে চিনের পরিস্থিতি যে টালমাটাল, সেই দাবিকে সমর্থন করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
শনিবার পর্যন্ত এ নিয়ে বেজিংয়ের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। দেশের একটি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম শুক্রবার জানায়, করোনার বাড়-বাড়ন্তের জেরেই অনেক বিমান বাতিল করতে হয়েছে। তবে সন্দেহ দানা বাধছে সর্বত্রই। চিনের প্রাক্তন সাংবাদিক ঝাও লানজিয়ান জানিয়েছেন, বিমান পরিবহণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে কিছু জানা যাচ্ছে না। আগে কখনও এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।
তবে সেনা অভ্যুত্থানের জল্পনা খারিজ করে দিয়েছেন কূটনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি শাংহাই সম্মেলন থেকে ফিরেছেন চিনপিং। তাই নিয়ম অনুযায়ী, এই মুহূর্তে কোয়রান্টিনে থাকার কথা তাঁর। সেই কারণেই হয়ত জনসমক্ষে সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। একই সঙ্গে চিনে প্রশাসনিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক সবকিছুর উপরই যেভাবে কর্তৃত্ব স্থাপন করেছেন চিনপিং, তাতে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের যুক্তি, চিনা সেনা সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের অধীনস্থ। কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক চিনপিং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের প্রধান। চিনে সেনাবাহিনী সরকার নয়, পার্টির অধীনস্থ। তাই চিনপিং সরকারকে উৎখাত করতে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।