Science News: আচমকাই আঁচড়, কামড়, পথকুকুররা এখন বেশিই আগ্রাসী, নেপথ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, দাবি গবেষকদের
Climate Change: হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণাতেই এমন দাবি করা হচ্ছে। যেভাবে কুকুড়ের কামড়ে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সর্বত্র।
নয়াদিল্লি: রাস্তাঘাটে যাকে তাকে কামড়, শিশুর উপর হামলা, পথকুকুরদের নিয়ে বার বার এমন ঘটনা সামনে এসেছে। এমনকি বাড়িতে পোষা সারমেয় মালিককে কামড়ে রক্তাক্ত করে দিয়েছেন, তা থেকে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে (Dog Temper)। তাই বেশ কিছু রাজ্যেই সারমেয়দের নিয়ে কড়া আইন চালু হয়েছে। আচমকা সারমেয়দের এমন আগ্রাসী আচরণের নেপথ্য় কারণ সামনে এল এবার। জানা যাচ্ছে, শুধু পরিবেশ বা মনুষ্য সমাজই নয়, জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change) প্রভাব ফেলছে সারমেয়দের আচরণেও। তীব্র দাবদাহই আরও আগ্রাসী করে তুলছে তাদের (Science News)।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণাতেই এমন দাবি করা হচ্ছে। যেভাবে কুকুড়ের কামড়ে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সর্বত্র। আচমকা কেন এত আগ্রাসী হয়ে উঠছে সারমেয়রা, তা নিয়ে বিশদ গবেষণ শুরু হয়, যার রিপোর্ট সামনে এসেছে সম্প্রতি। তাতে জলবায়ু পরিবর্তনকেই সারমেয়দের আগ্রাসী আচরণের জন্য দায়ী করা হয়েছে।
সায়েন্টিফিক রিপোর্ট জার্নালে ওই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। কুকুরের কামড়ের সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সংযোগ নিয়ে গবেষণাটি চালায় হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল। তাতে বলা বয়েছে, 'তাপমাত্রার যত বৃদ্ধি ঘটে এবং ওজন স্তর যত বাড়তে থাকে, ততই আগ্রাসী হয়ে ওঠে সারমেয়রা। তাতেই কুকুরের কামড়ে দেওয়ার ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। গোড়াতেই অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ এবং কুকুরের কামড়ের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ ধরা পড়ে। তবে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা PM 2.5-এর কোনও ভূমিকা নেই এর নেপথ্যে'।
আরও পড়ুন: Science News: সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত চাঁদ, ২৪ নয়, দিনের দৈর্ঘ্য ছিল ১৯ ঘণ্টা, গবেষণায় খোলসা
গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবীতে বসবাসকারী সব প্রজাতির প্রাণীর মধ্যেই আগ্রাসন রয়েছে। এলাকা দখলের লড়াই, সম্পদ রক্ষার লড়াই, প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে এবং আত্নরক্ষায় এই আগ্রাসন কাজে লাগে। তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটলে মানুষও বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। বাঁদর, ইঁদুর, ছুঁচোর মধ্যে তীব্র গরমে আগ্রাসী আচরণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এক প্রজাতির প্রতি অন্য প্রজাতির আগ্রাসী আচরণ, যেমন মানুষকে কুকুরের কামড়ে দেওয়ার নেপথ্যেও রয়েছে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
২০০৯ সালে থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চালানো একটি সমীক্ষার রিপোর্টও তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্ট। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকায় ৬৯ হাজার ৫২৫টি কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা সামনে আসে। তা নিয়ে বিশদ রিপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বর্ষা এবং শীতের তুলনায়, তীব্র গরমের দিনগুলিতে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা ছিল বেশি।
গবেষকদের দাবি, বেশি পরিমাণ অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে গরমে যৌন স্টেরয়েডের মাত্রা বেড়ে যায়। তাতে আরও মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে ওঠে। মানুষ এবং ইঁদুরের মধ্যেও এমন লক্ষণ দেখা যায়। কারণ এই সময় বায়ুমণ্ডলে ওজনের স্তর অত্যধিক বেড়ে যায়। এর তীব্র গন্ধে প্রতিক্রিয়াও হয় তীব্রতর। কারণ এর ফলে প্রাণীর শ্বাসনালিতে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয় এবং ফুসফুসের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সরাসরি প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপরও। জয়বায়ু পরিবর্তন যে ভাবে পৃথিবীকে গ্রাস করছে, এই সময়ে পশুদেরও নিরীক্ষণে রাখা প্রয়োজন।