(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Dev in Ghatal: 'যে মারছে, যে মার খাচ্ছে, সব আমার, আমি স্তম্ভিত', ঘাটালে ধুন্ধুমার, মুখ খুললেন দেব
Ghatal News: শিশুমেলা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। একতরফা ভাবে বৈঠক করে মেলার কমিটি থেকে শঙ্কর দেবকে বাদ দেন বলে অভিযোগ।
ঘাটাল: তাঁর উপস্থিতিতে ঘাটালে ধুন্ধুমার, রক্তারক্তিকাণ্ড। সেই নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দেব। গোটা ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত, আগে কখনও এমন ঘটেনি বলে জানান তিনি। ১১ বছর ধরে রাজনীতি করছেন। কিন্তু আজকের ঘটনায় অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছেন বলে জানালেন দেব। বিষয়টি নিয়ে যেখানে যা বলার, যা করণীয়, তা তিনি করবেন বলেও জানালেন। যাঁর সঙ্গে সংঘাত, সেই শঙ্কর দলুইকে নিয়েও মুখ খুললেন দেব। (Dev in Ghatal)
শিশুমেলা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। একতরফা ভাবে বৈঠক করে মেলার কমিটি থেকে শঙ্কর দেবকে বাদ দেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই রবিবার ঘাটালের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে মেলা নিয়ে বৈঠক করতে পৌঁছন দেব। আর সেখানেই ধুন্ধুমার বাধে। দুই পক্ষের অনুগামীরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড নিয়ে তেড়ে যান পরস্পরের দিকে। হাতাহাতি, মারামারিতে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যায়। মধ্যস্থতা করতে গিয়ে বিফল হন দেবও। (Ghatal News)
গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শঙ্করকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়াও। আর এর পরই মুখ খোলেন দেব। তিনি বলেন, "আজ আমি খুবই দুঃখিত। আমার ১১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি। শুধু ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র বলে নয়, গত ১১ বছর ধরে যেখানেই গিয়েছি শান্তি বজায় রাখতে চেয়েছি। এমন কোনও কথা বলিনি, যাতে আমার দলকে অন্য দলের সঙ্গে মারামারি করতে হয়। আমি মানুষকে এক রাখার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি আমি। বিভাজন, ৭মতার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না আমি, আমার নেত্রীও করেন না।"
যে শিশুমেলাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা, দেবের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছিল। তিনি কোথাও সেই নিয়ে মুখ খোলেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই আজ ঘাটাল পৌঁছন। সকাল থেকে ভাল ভাবেই এগোচ্ছিল সব কিছু। এমনকি দু'পক্ষের অনেক দাবিদাওয়া নিয়েই একমত হনসকলে। তার পর হঠাৎ করেই ঝামেলা বাঁধল। আগে থেকে তারা লাঠিসোঁটা, রড এনে রেখেছিল, তা নিয়েও এদিন বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
দেব জানিয়েছেন, ঘাটালের এই শিশুমেলা ঐতিহাসিক। কোনও রাজনৈতিক দলের নয়, এই মেলা মানুষের মেলা। বাইরে থেকেও মানুষ মেলা দেখতে পৌঁছন। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে যাতে বেশি টাকা না বেরিয়ে যায়, তাতে গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। দেব জানিয়েছেন, বেশি দরে টেন্ডার দিলে, স্টলে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যেতে পারে, তাতে সাধারণ মানুষের পকেটে টান পড়বে। তাই দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেই চেষ্টাই করছিলেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতি হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি।
দেব আরও বলেন, "আমার রাজনীতিতে আবারও ফিরে আসার কারণ ছিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান, স্বাধীনতার পর থেকে যা নিয়ে সরব ঘাটালের মানুষ। চেষ্টা করেছি, যতদিন রাজনীতিতে থাকব, মানুষকে এক করে রাখব। যে মারছে, যে মার খাচ্ছে, সব আমারই। যাঁরা তৃণমূলকে ভোটও দেননি, ঘাটালের সেই সব মানুষও আমার। আজ যা ঘটল, তা ঘাটালের রাজনৈতিক চরিত্র নয়। ঘাটালে শিক্ষিত, শান্তিপ্রিয় মানুষের বাস। আমার কারও উপর রাগ, অভিমান নেই। কিন্তু আজ যা ঘটল, তার জন্য যা করণীয় করব।" প্রশাসন কেন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারল না, এত মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে একত্রিত হলেন কেন, সেই জবাব প্রশাসনকে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন দেব।
এদিনের এই ঝামেলার দায় এড়িয়েছেন শঙ্কর। তাঁর দাবি, দেববে ওই বৈঠকের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেব শঙ্করের দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, "আমাকে ডাকা হয়নি, জানানো হয়নি। আমি তা-ও একদিন আগে ফোন করে বলেছিলাম, আমাকে রাখতে হবে না। কিন্তু বাকি সকলকে রেখে বৈঠক হোক, সকলের কথা শোনা হোক। কিন্তু দেখলাম একতরফা বৈঠক হয়েছে। সাংসদ হিসেবে সকলকে নিয়ে চলাই আমার দায়িত্ব। শঙ্করবাবুর মান রক্ষা করাও আমার কাজ, বাকিদেরও, যাঁরা সারা বছর ঘাটালের মানুষকে পরিষেবা দেন।"
দেবের দাবি, আজ কোলাঘাট থেকে যখন বৈঠক শেষ করে বেরোন, সেই সময়ও সব ঠিক ছিল। ঝামেলা হলে দেখতে হবে বলে জানিয়েছিলেন শঙ্করকে। সবকিছু ভাল ভাবেই মেটে। তার পরও এই ঘটনা ঘটল।