Howrah News : মোটা টাকার বিনিময়ে জাল বার্থ সার্টিফিকেট তৈরির রমরমা ব্যবসা ! অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা
নকল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করছিলেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। সম্প্রতি এই ঘটনা সামনে আসলেই এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
নকল নথি দিয়ে আসল ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরির বিরাট চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে বাংলায়। আশঙ্কা এই পাসপোর্টে পৌঁছে গিয়েছে শয়ে শয়ে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশির হাতে। এই আবহেই এবার আরও এক কেলেঙ্কারির হদিশ হাওড়ায়। গ্রামের মধ্যে সাইবার কাফে খুলে নকল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করছিলেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য। সম্প্রতি এই ঘটনা সামনে আসলেই এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
ঠিক কী অভিযোগ? ডোমজুড়ের কেশবপুর দক্ষিণ মাঠ এলাকায় একটি সাইবার কাফে চালান বেগরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রবিয়াল খাঁ। ওই ক্যাফেতে নতুন প্যান কার্ড তৈরি করা, তার সংশোধনের কাজ হত। প্যান কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড করিয়ে দেওয়ার কাজও হত ওই অফিস থেকেই। এছাড়া স্থানীয় সূত্রে দাবি, সেখান থেকে আধার কার্ডের মাধ্যমে যে কোনও ব্যাঙ্কের টাকা তোলা এবং জমা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, নিজের সাইবার ক্যাফে থেকে মোটা টাকার বিনিময় নকল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করে দিতেন রবিয়াল।
কুকীর্তি প্রকাশ্যে এল কীভাবে? গ্রামবাসীদের ছেলে-মেয়েদের জন্ম সার্টিফিকেট করিয়ে দেওয়ার জন্য মোটা টাকা নিতেন তিনি। তারপর যখন তাঁরা ওই জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে আলমপুরে শিশুর আধার কার্ড তৈরির জন্য যান তখন সরকারি আধিকারিকরা তাদের বলেন, এগুলো নকল জন্ম সার্টিফিকেট। আসল সার্টিফিকেট পাওয়া যায় একমাত্র পঞ্চায়েত অফিস থেকে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ডোমজুড়ের কেশবপুরে। মন্ত্রী অরূপ রায়ও জানিয়েছেন এটা পুরোপুরি বেআইনি কাজ। তাঁর বিরুদ্ধে যাতে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা তিনিই পুলিশকে বলবেন। মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন," এভাবে জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করা যায় না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। দল কখনও এইসব বেআইনি কাজ সমর্থন করে না। পুলিশকে বলব যাতে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়।" গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডোমজুড় থানার পুলিশ।
শেখ হাফিজুল নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, বেগরি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রবিয়াল। তাই তাঁকে তাঁরা বিশ্বাস করেছিলেন । তাঁর সাইবার ক্যাফেতে মোটা টাকা দিয়ে ছেলের জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করেন। পরে তিনি জানতে পারেন ওটা ভুয়ো। এই ঘটনার পর তিনি ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ডোমজুড় থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। ডোমজুড় থানার পুলিশ খবর পেয়ে ওই সাইবার ক্যাফে থেকে কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন ফাইল থানায় পরীক্ষার জন্য তুলে নিয়ে আসে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রবিয়াল খাঁ বলেন, মাস চারেক ধরে এই সাইবার ক্যাফে চালান তিনি। তাঁর কাছে আধার কার্ডে নাম তোলা এবং সংশোধন ছাড়াও আধার কার্ডের মাধ্যমে ব্যাঙ্কের টাকা তোলা এবং জমা দেওয়া হয়। নিজে জন্ম সার্টিফিকেট তৈরির কাজ করেন না, অন্যকে দিয়ে করিয়েছিলেন। তিনি কোনও বেআইনি কাজ করেন না বলেই এখনও দাবি করছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য।