শীতলকুচির গুলি চালানোর ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠাবে সিআইডি
আজ ২ অফিসার-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জওয়ানের সঙ্গে মাথাভাঙার সাব-ইনস্পেক্টরকেও তলব করেছে সিআইডি। এই সাব-ইনস্পেক্টর আর টি মোবাইল ভ্যানের দায়িত্বে ছিলেন। গুলিচালনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি সিআইডি-র।
কলকাতা: কোচবিহারের শীতলকুচির গুলিকাণ্ডে কোচবিহারের তৎকালীন পুলিশ সুপার দেবাশিস ধরকে ডেকে পাঠাবে সিআইডি। গতকাল মাথাভাঙার আইসি-কে দুঘন্টা জেরার পর, তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই প্রাক্তন পুলিশ সুপারকে ডাকছে সিআইডি। আজ ২ অফিসার-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জওয়ানের সঙ্গে মাথাভাঙার সাব-ইনস্পেক্টরকেও তলব করেছে সিআইডি। এই সাব-ইনস্পেক্টর আর টি মোবাইল ভ্যানের দায়িত্বে ছিলেন। গুলিচালনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি সিআইডি-র।
ভোট পরবর্তী অশান্তির খবর পেয়ে, গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি দল। আর এবার শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে দুই অফিসার-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬জনকে তলব করেছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি। আজ ভবানীভবনে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। সোমবার মাথাভাঙা থানার আইসি এবং সেক্টর ও কিউআরটি অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।
গত ১০ এপ্রিল, চতুর্থ দফার ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলকুচির জোর পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় চারজনের।সিআইডি সূত্রে খবর, ঘটনার দিন ১২৬ নম্বর বুথে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জওয়ান কর্তব্যরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ডেপুটি কম্যাড্যান্ট, একজন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার এবং চারজন কনস্টেবল ছিলেন।কী কারণে গুলি চালানো হয়েছিল, তা জানতে ওই ৬জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে সিআইডি।
সূত্রের খবর, করোনা আবহে ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানিয়েছিলেন সিআইএসএফের আইজি।কিন্তু তা খারিজ করে দিয়ে আজ ভবানীভবনে সশরীরে ৬ জনকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
শীতলকুচিতে গুলিকাণ্ডে প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তৃণমূল। সেদিনের ঘটনাকে এদিন ফের গণহত্যা বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাল্টা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসারদের ডেকে ভয় দেখানো হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তলব করার আগেই এদিন শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে, মাথাভাঙার আই-সহ আরও ২ জন পুলিশ অফিসারকে তলব করেছিল সিআইডি। সূত্রের খবর, আইসি বিশ্বেশ্রয় সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, গুলিকাণ্ডে তিনি কী পদক্ষেপ করেছিলেন? সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি কাকে কাকে জানিয়েছিলেন?
মাথাভাঙা থানার আইসি ছাড়াও, যে দুই পুলিশ অফিসারকে ডাকা হয়েছিল, তাঁরা হলেন থাভাঙা থানার এএসআই সুব্রত মণ্ডল ও রাফা বর্মন। সুব্রত মণ্ডল নির্বাচনের দিন ক্যুইক রেসপন্স টিমের দায়িত্বে ছিলেন। এএসআই রাফা বর্মন ভোটের দিন সেক্টর অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন।
সিআইডি সূত্রে দাবি, ১০ এপ্রিল কিউআরটি অফিসার এএসআই সুব্রত মণ্ডল, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাস্তা চিনিয়ে শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে নিয়ে গেছিলেন। কার নির্দেশে তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে গেছিলেন? কোন পরিস্থিতিতে শীতলকুচির ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছিল? কিউআরটি টিমকে ছেড়ে তিনি কীভাবে চলে গিয়েছিলেন? সুব্রত মণ্ডলের কাছে সেবিষয়েও জানতে চাওয়া হয় বলে সিআইডি সূত্রে খবর।