WB election 2021: যারা হাত কাটল তাদের সঙ্গেই জোট! ক্ষুব্ধ আমতার পুরনো কংগ্রেস কর্মীরা
West Bengal Assembly Election 2021: বাম-কংগ্রেস জোটকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।

সুনীত হালদার, হাওড়া: এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ-এর জোট হয়েছে। একসঙ্গে ভোটে লড়ছে সংযুক্ত মোর্চা। কিন্তু সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না হাওড়ার আমতার কেন্দুয়া গ্রামের পুরনো কংগ্রেস কর্মীরা। প্রায় ৩০ বছর আগে এই গ্রামেই কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য পাঁচজনের হাতের পাঞ্জা কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেই পরিবারগুলি সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট মানতে নারাজ।
এই পরিবারগুলি এখনও ১৯৯১ সালের ১৮ জুনের কথা ভুলতে পারে না। সেদিন লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের ফল একইসঙ্গে প্রকাশিত হয়। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ সিপিএম কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় কেন্দুয়া গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবারের ওপর হামলা চালায়। লাঠি, ভোজালি, বোমা এবং হাঁসুয়া নিয়ে সিপিএমের হার্মাদরা বেশ কয়েকটি পরিবারকে আক্রমণ করে। বাড়ির মধ্যেই খুন হন আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য গোপাল পাত্র। আশপাশের আরও কয়েকটি পরিবারের পাঁচজনের হাতের পাঞ্জা কেটে নেওয়া হয় হাঁসুয়ার কোপ মেরে।
সেই সময় এই ঘটনার জেরে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়। এই ঘটনার পর তৎকালীন কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ান এবং নানাভাবে সাহায্য করেন। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেন তখন এই পরিবারগুলি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে। তবে তাঁরা সেদিনের কথা তারা আজও ভুলতে পারেন না।
কাটা হাত নিয়ে ঘন্টেশ্বর বাগ, চম্পা মন্ডলরা কংগ্রেস-সিপিএমের এই জোটকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘যারা হাত কাটল তাদেরই রক্তমাখা হাত ধরছে কংগ্রেস। এদের কোনও লজ্জা নেই। কোনও কংগ্রেস কর্মী এটা মেনে নেবে না।’
আমতার বিদায়ী বিধায়ক এবং প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অসিত মিত্র অবশ্য বলেছেন, ‘সেই সময় আমরা এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম। তবে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর একইভাবে রাজ্যজুড়ে অত্যাচার করছে। আমাদের অনেক কর্মীকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাই এসব রুখতে সিপিএমের সঙ্গে জোট করা হয়েছে। এটা কোনও অন্যায় নয়।’
উদয়নারায়ণপুরের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বাম-কংগ্রেস জোটকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘ওই নৃশংস ঘটনার পর কংগ্রেস যেভাবে সিপিএমের সঙ্গে জোট করেছে, তা অত্যন্ত লজ্জার। এই জোটকে তৃণমূল ধিক্কার জানায়।’
অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য শংকর মৈত্রের দাবি, ‘মোদি ও দিদির সাম্প্রদায়িকতা এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাম, কংগ্রেস, আইএসএফ সহ সমস্ত প্রগতিশীল শক্তি এক হয়ে লড়াই করছে। না হলে পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচানো যাবে না। কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। এ ব্যাপারে পরে লড়াই হবে। মানুষ আমাদের লড়াইকে সমর্থন করছেন।’
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
