Bangladesh Situation: ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে আটক হিন্দু যুবক, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের হামলা জারি, ব্যর্থ সেনা-পুলিশ
Bangladesh News: পুলিশের পাশপাশি হামলাকারীদের আটকাতে ব্যর্থ বাংলাদেশের সেনাও।
ঢাকা: সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস এখনও জেলে। আরও একমাস পিছিয়েছে তাঁর জামিনের শুনানি। সেই আবহে এখনও অশান্ত পড়শি দেশ বাংলাদেশ। লাগাতার সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার খবর সামনে আসছে। সুনামগঞ্জ জেলার একাধিক জায়গায় হিন্দুদের
ওপর হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রকাশ্য রাস্তায় হিন্দু-বিরোধী স্লোগান দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
পুলিশের পাশপাশি হামলাকারীদের আটকাতে ব্যর্থ বাংলাদেশের সেনাও। (Bangladesh Situation)
সুনামগঞ্জের মংলাওগ্রামের প্রফুল্ল দাসের ছেলে আকাশ দাস নামের এক হিন্দু যুবকের খোঁজ করতেও দেখা যায় কিছুজনকে। প্রকাশ্যে তাঁর নামে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। একটি ফেসবুক পোস্টে আকাশ যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ধর্মের অবমাননা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সুনামের বাড়িতে এবং আশেপাশে ভাঙচুরও চালানো হয়। ২০ বছর বয়সি আকাশকে আটক করেছে পুলিশ। সুনামগঞ্জের ডিসি মহম্মদ ইলিয়াস মিয়াঁ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। কাউকে আইন হাতে না তুলে নিতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। (Bangladesh News)
শুধু সুনামগঞ্জই নয়, দোয়ারা বাজার এলাকাতেও হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা হয় বলে অভিযোহ। একাধিক দোকানে ভাঙচুর ও ব্যাপক লুঠপাট চালানোর অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযোগ, মহিলারাও হামলা থেকে রক্ষা পাননি। বরং বেছে বেছে হিন্দু মহিলাদের উপর হামলা চালানো হয়। দোয়ারা থানা ঘেরাও করে হামলাকারীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশে সেনা নামানো হলেও আক্রমণ রুখতে ব্যর্থ তারা। নীলফামারি জেলাতেও হিন্দুদের
ওপর ব্যাপক হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযোগ, একাধিক বাড়ি ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় খড়ের গাদায়। একাধিক জায়গায় লুঠপাটও চালায় হামলাকারীরা। ঠাকুরগাঁওয়ে সন্ন্যাসীর মুক্তি চাওয়াতেও হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা সামনে এসেছে।
বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও। অশান্ত বাংলাদেশে লাগাতার হিংসার ঘটনা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশে যেতে নিষেধ করেছে ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রক। বাংলাদেশে গেলেও নির্দিষ্ট কিছু স্পর্শকাতর এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, কিছু জায়গায় সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে। জনবহুল এলাকা, ধর্মীয় ভবন, রাজনৈতিক সমাবেশগুলোতে নির্বিচারে সন্ত্রাসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়েও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক জায়গায় IED-র মতো বিস্ফোরক দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে ব্রিটেনের নির্দেশিকায়।
অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রভাবশালী মার্কিন রাজনীতিবিদ ব্র্যাড শেরম্যানও। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের হিন্দু সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ব্র্যাড জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের উপর ঘটে চলা হামলা মোকাবিলা করার দায়িত্ব একান্তভাবেই বাংলাদেশ সরকারের। গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ চলছে বাংলাদেশে। ভয়াবহ হামলার ছবি সামনে আসতে নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা বিশ্ব।
ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলিধরন বলেন, "বাংলাদেশ সরকারের উচিত যে সমস্ত শক্তিগুলো আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।" বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা নিয়ে লোকসভায় মুখ খোলেন হেমা মালিনী। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে পাকিস্তান হাই কমিশনের কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মাহরুফের বৈঠক ধিরে। খালেদার বাড়িতে দু'জনের মধ্যে বৈঠক হয়। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই পাক-যোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।