লস্কর লিঙ্কম্যান? আইএসআই চর? বাদুড়িয়া থেকে ধৃত যুবতীর ১০ দিনের এনআইএ হেফাজত
"ডার্ক ওয়েব"-এর মাধ্যমে পাক জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তানিয়ার, দাবি পুলিশের
কলকাতা: জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা লিঙ্কম্যান সন্দেহে ধৃত বাদুড়িয়ার মহিলার এনআইএ হেফাজত। ১০ দিনের এনআইএ হেফাজতে ধৃত তানিয়া পরভিন। গত মার্চে বাদুড়িয়া থেকে ২২ বছরের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। এদিন জেল হেফাজত থেকে এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।
গত এপ্রিল মাসে আদালতের নির্দেশে তানিয়া পরভিনের মামলার তদন্তভার নেয় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এর আগে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে ১৮ মার্চ গ্রেফতার হন তানিয়া।
পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই থেকে শুরু করে লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর যোগসাজশের অভিযোগ তোলে রাজ্য পুলিশ। বিভিন্ন ওয়েবসাইট মারফত উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার মলয়পুরের বাসিন্দা ওই তরুণী কাশ্মীরের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যা বলেও অভিযোগ।
পুলিশি সূত্রের খবর, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই দেশ-বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন তানিয়া। বাংলা, ইংরেজি, হিন্দির পাশাপাশি আরবি, উর্দু, কাশ্মীরি ভাষাতেও তিনি সমান সাবলীল। প্রেমের ফাঁদ পাততেও মেয়েটি সবিশেষ দক্ষ বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের দাবি, জেরার মুখে তাঁর জঙ্গি-যোগাযোগের কথা কবুল করেছেন তানিয়া। পুলিশের দাবি, জেরায় তানিয়া জানিয়েছে, "ডার্ক ওয়েব"-এর মাধ্যমে পাক জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাঁর। সেই সঙ্গেই বলেছেন, পাকিস্তান বা সিরিয়ায় গিয়ে জেহাদে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর।
অন্তত ১০টি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার মলয়পুরের বাসিন্দা ওই তরুণী। লস্করের মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্যা ছিলেন তিনি। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সূত্র ধরেই আইএসআইয়ের এক কর্তার সঙ্গে তানিয়ার যোগাযোগ গড়ে ওঠে বলে জানান গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের আরও দাবি, ভারতীয় সিম কার্ড ব্যবহার করে একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর পাচার করতেন তানিয়া। পরে, পাকিস্তানে বসে সেই নম্বর ব্যবহার করত জঙ্গিরা। গত কয়েক মাসে তিন থেকে চার হাজার টাকার মতো বড় বড় অঙ্কের রিচার্জ করা হয়েছে তাঁর দুটি ফোন থেকেই। এই সব দেখে পুলিশ তাজ্জব হয়ে যায়।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই তরুণীকে কাজে লাগিয়ে এ দেশের সেনাবাহিনীর গোপন খবর জোগাড়ের ছক কষছিল আইএসআই। জেরায় সে জানিয়েছে, ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য তার উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তবে তাঁর গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হয়নি বলেই দাবি ওই তরুণীর।