Chandrayaan 3 Live Update: চাঁদের বুকে ইতিহাস ভারতের, ISRO প্রধানকে 'অভিনন্দন' মোদির
Chandrayaan 3 Moon Landing Live: চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যখন ২৫ কিলোমিটার হবে, সেই সময়ই চন্দ্রযানকে নামানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই মুহূর্তে শূন্য়ে অনুভূমিক ভাবে অবস্থান করছে চন্দ্রযান-৩।

Background
নয়াদিল্লি: চাঁদের মাটি ছোঁয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তার সাক্ষী হতে উৎসাহ, উদ্দীপনায় ফুটছে গোটা দেশ। কিন্তু বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র দফতরে এই মুহূর্তে কার্যতই প্রমাদ গোনা চলছে। কারণ, শূন্য থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠে মহাকাশযানকে নামানোর জন্য় যে ২০ মিনিটের সময় বরাদ্দ করা হয়েছে, তার উপর ভারতের মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। (Chandrayaan 3 Landing)
বুধবার বিকেল ৫টা বেজে ৪৫ মিনিটে চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে পালকের মতো চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে চন্দ্রযান-৩ । সবমিলিয়ে প্রায় ২০ মিনিটের মতো সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এই ২০ মিনিটকে রুদ্ধশ্বাস ক্রিকেট টি-২০ ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করছেন বিজ্ঞানীরা। (Chandrayaan-3 Live Tracking)
এর আগে, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানটিকে নামানোর সময় শেষের ১৫ মিনিটই নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করেছিল। শেষ পর্যন্ত পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁতে পারেনি চন্দ্রযান-২। বরং সজোরে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে সেটি। সেই সময় প্রকাশ্যেই ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল ISRO-র তৎকালীন চেয়ারম্যান কে শিবনকে। পরবর্তী কালে ওই ১৫ মিনিটকে 'সন্ত্রাসের মুহূর্ত' বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এবার যথেষ্ট সন্তর্পণে এগনো হলেও, শেষের ওই ২০ মিনিটে যাতে সবকিছু ওলটপালট না হয়ে যায়, সেই চিন্তাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞানীদের।
চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যখন ২৫ কিলোমিটার হবে, সেই সময়ই চন্দ্রযানকে নামানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই মুহূর্তে শূন্য়ে অনুভূমিক ভাবে অবস্থান করছে চন্দ্রযান-৩। অবতরণের সময় অবস্থান হবে উল্লম্ব। উল্লম্ব ভাবে অবতরণ করালেই পালকের মতো চাঁদের মাটি ছোঁয়ানো সম্ভব চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে।
ISRO সূত্রে খবর, চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের সময় মহাকাশযানের গতি শ্লথ রাখা হবে। প্রতি সেকেন্ডে ১.৬৮ কিলোমিটার গতিতে নামানো হবে নীচের দিকে, ঘণ্টার হিসেবে যা ৬০৪৮ কিলোমিটার। মহাজগতের নিরিখে এই গতি শ্লথ হলেও, পৃথিবীতে বিমানের গতির তুলনায় অবতরণের সময় চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের গতি প্রায় ১০ গুণ বেশি থাকবে।
চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে দূরত্ব যত কমবে, ততই গতি কমিয়ে আনা হবে ল্যান্ডার 'বিক্রমে'র। বিজ্ঞানের ভাষা এই পর্যায়কে বলা হয় 'রাফ ব্রেকিং'। অবতরণের সময় চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের এই 'রাফ ব্রেকিং'-এর জন্য ১১ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এর পর শুরু হবে 'ফাইন ব্রেকিং' পর্যায়, ঠিক যে পর্যায়ে চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন বিজ্ঞানীরা।
চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যখন ৮০০ মিটার হবে, গতি নামিয়ে আনা হবে শূন্যে। নামার আগে জমি জরিপ করে নেবে ল্য়ান্ডার 'বিক্রম'। এর পর দূরত্ব কমে যখন ১৫০ মিটারে পৌঁছবে, চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলবে, যা দেখে অবতরণের উপযুক্ত জায়গা বেছে নেওয়া হবে। তাতে বসানো সেন্সর চন্দ্রভূমির স্পর্শ পেলে, ল্যান্ডারের চারটি পা যখন মাটি ছোঁবে, ইঞ্জিন বন্ধ করে দেবেন বিজ্ঞানীরা। চাদের মাটিকে বলা হয় রেগোলিথ। অবতরণের পর ওই মাটি থিতিয়ে আসার জন্য অপেক্ষা করা হবে। এর পর ল্যান্ডার থেকে আলাদা হয়ে চাঁদের মাটিতে নামবে রোভার 'প্রজ্ঞান'। চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করবে রোভার 'প্রজ্ঞান'। তবে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর নিজ নিজ জায়গায় থিতু হয়ে, সবার আগে পরস্পরের সেলফি তুলবে 'বিক্রম' এবং 'প্রজ্ঞান'। মুহূর্তের মধ্যেই তা হাতে এসে পৌঁছবে ISRO-র বিজ্ঞানীদের।
ল্য়ান্ডার 'বিক্রম' এবং রোভার 'প্রজ্ঞান' চাঁদের বুকে এক চন্দ্রদিবস অতিবাহিত করবে, পৃথিবীর হিসেবে যা ১৪ দিন। সব ঠিক থাকলে, চন্দ্রপৃষ্ঠে পালকের মতো অবতরণকারী চতুর্থ দেশ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম উঠবে ভারতের।
Chandrayaan 3 Moon Landing LIVE: শুভেচ্ছা জানালেন নাম্বি নারায়ণের
আজ হয়তো অনেকেরই একটা ছবি চোখের সামনে ভাসছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বুকে মাথা রেখে কাঁদছিলেন ইসরোর তৎকালীন চেয়ারম্যান কে শিভন। পিঠ চাপড়ে তাঁকে সান্তনা দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। চন্দ্রযান ২ শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ হয়েছিল। সালটা ২০১৯। মাত্র চার বছর পরেই পাল্টে গেল ছবিটা। চন্দ্রযান ৩ সফলভাবে নামল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। তৈরি করল ইতিহাস। উচ্ছ্বাসে ভাসল গোটা দেশ, আর জোহানেসবার্গ থেকে ইসরোর পি সোমনাথকে ফোন করে অভিনন্দন জানালেন সেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
Chandrayaan 3 Live:পরবর্তী মিশনে সূর্যের দিকে 'চোখ রাখতে' চাইছে ISRO
চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের পর উজ্জীবিত ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র বিজ্ঞানী-আধিকারিকরা। পরবর্তী মিশনে সূর্যের দিকে 'চোখ রাখতে' চাইছেন তাঁরা। বুধের সন্ধেতেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুর (South Pole) কাছে সফলভাবে ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণের সাফল্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছে গোটা দেশ।






















