India-China Relations: দুই তরফেই বিপুল সেনা মোতায়েন, চিনা সীমান্তে পরিস্থিতি ‘অস্বাভাবিক’, জানাল দিল্লি
S Jaishankar: Indian Chamber of Commerce আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন জয়শঙ্কর।
নয়াদিল্লি: লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ,লাগাতার চিনা আগ্রাসনের খবর সামনে আসছে। শুধু রাস্তা বা সেতু তৈরিই নয়, ভারতীয় ভূখণ্ডের উপর আস্ত গ্রাম গড়ে তোলার ছবিও সামনে এসেছে। এবার সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ‘অস্বাভাবিক’ হারে সেনা মোতায়েন রয়েছে বলে জানালেন তিনি। (India-China Relations)
Indian Chamber of Commerce আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। সেখানেই চিনা আগ্রাসন নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। জানান, গালওয়ান সংঘর্ষের পর সীমান্তে অতিরিক্ত সেনমা মোতায়েন করে জবাব দেয় ভারত। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপসের কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাই ‘অস্বাভাবিক’ হলেও, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রচুর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। (S Jaishankar)
ওই অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর বলেন, “১৯৬২-র পর ১৯৮৮ সালে চিন গিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। চিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রেই ওই পদক্ষেপ করা হয়। দুই দেশের মধ্যে স্পষ্ট বোঝাপড়া হয়েছিল যে, আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সংক্রান্ত মতপার্থক্য মিটিয়ে নেব আমরা এবং সীমান্তে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখব। পাশাপাশি, আগের মতোই সব চলবে। সেই থেকে এই নীতিতে ভর করেই সম্পর্ক টিকেছিল চিনের সঙ্গে।”
কিন্তু ২০২০ সাল সেই নীতিতে পরিবর্তন আসে এবং চিনের সঙ্গে সম্পর্কে আমূল পরিবর্তন ঘটে বলে জানান জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “২০২০ সালে যা ঘটে, তাতেই পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। ২০২০ সালে চিন একাধিক চুক্তি লঙ্ঘন করে। আমাদের সীমান্তে বিরাট বাহিনী এনে হাজির করে তারা। করোনা কালে ভারতে যখন লকডাউন চলছে, সেই সময় এই কাণ্ড ঘটায় তারা।”
#WATCH |EAM Dr S Jaishankar speaks on China at a Viksit Bharat programme in Kolkata, West Bengal.
— ANI (@ANI) May 14, 2024
"In 2020, the Chinese in violation of multiple agreements brought large number of forces at the border at a time when India was under covid lockdown...We responded by… pic.twitter.com/CbmjEsqxsQ
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নিয়ে অশান্তি বাড়তে বাড়তে ২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে চিনা বাহিনীর। গোলাগুলি না চললেও, সংঘর্ষ চলাকালীন চিনা সেনা বিশেষ ভাবে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করে বলে জানা যায়। ওই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সৈনিকের মৃত্যু হয়। পরে তাদের পাঁচ সৈনিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে চিনও। গালওয়ান সংঘর্ষের জেরেই ভারত-চিনের বোঝাপড়া তলানিতে এসে ঠেকে।
জয়শঙ্করের কথায়, “গালওয়ানের পর ভারতের তরফে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়। গত চার বছর ধরে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন রয়েছে সেখানে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় এই বিপুল সেনা মোতায়েন অস্বাভাবিক। দুই দেশের মধ্যেকার সংঘাতের এই কথা মাথায় রেখেই, ভারতীয় হিসেবে, আমাদের কারও দেশের নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করা চলে না। আজকের দিনে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতের প্রভাব অর্থনীতিতেও পড়েছে বলে জানান জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, “এর আগে দেশের উৎপাদন এবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেওয়া হয়নি। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কেন চিন থেকে এত পণ্য কিনতে হচ্ছে...অন্য কারও উপর এত নির্ভরশীল হওয়া কি আদৌ সুখকর? আজকের দিনে প্রত্যেক দেশই চায়, কিছু ব্যবসা দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক। কিছু স্পর্শকাতর ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এর সঙ্গে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে।”
তবে জয়শঙ্কর পূর্বতন সরকারের ঘাড়ে দায় চাপালেও, সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকারের ভূমিকা নিয়েও লাগাতার প্রশ্ন উঠছে। লাদাখে সব ঠিক রয়েছে বলে বার বার দাবি করা হলেও, সেখানে ভারতের ভূখণ্ডের অনেকটাই চিন দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। কেন্দ্রের উদাসীনতার বিরুদ্ধে তাই আন্দোলনে নেমেছেন সেখানকার মানুষজন। স্যাটেলিইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা গিয়েছে, অরুণাচলেও আস্ত গ্রাম গড়ে তুলেছে চিন। তার পরও সরকারের নীরবতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলে এসেছেন বিরোধীরা।