Israel-Iran War: তিনদিক দিয়ে ইজরায়েলে হামলার পরিকল্পনা, সেনা-ক্ষেপণাস্ত্র বাড়াচ্ছে আমেরিকা, ঘনিয়ে আসছে আরও এক যুদ্ধ
Israel-Hamas War: তেহরানে ঢুকে হামাস নেতাকে হত্যার ঘটনায় প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে ইরান।
নয়াদিল্লি: গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের উপর ইজরায়েলি হামলায় বিরাম নেই। সেই আবহেই পশ্চিম এশিয়ায় আবারও যুদ্ধের খাঁড়া। এবার মুখোমুখি ইরান এবং ইজরায়েল। তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ের হত্যায় নাম জড়িয়েছে ইজরায়েলের মোসাদের। পাশাপাশি, লেবাননের হেজবোল্লা নেতা ফুয়াদ শুকরের হত্যাতেও নাম জড়িয়েছে ইজরায়েলের। এর পাল্টা ইজরায়েলের উপর হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। এমন পরিস্থিতিতে আবারও ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। পশ্চিম এশিয়ায় অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান এবং সেনা মোতায়েন করছে তারা। ক্ষেপণাস্ত্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইরান এবং তাদের সহযোগীদের হাত থেকে ইজরায়েলকে রক্ষা করতে কোনও ত্রুটি রাখছে না আমেরিকা। (Israel-Iran War)
তেহরানে ঢুকে হামাস নেতাকে হত্যার ঘটনায় প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে ইরান। লেবাননের হেজবোল্লাও ইজরায়েলের উপর আঘাত হানতে প্রস্তুত। ইরান জানিয়েছে, শুধুমাত্র সেনা শিবিরগুলি লক্ষ্য করে হামলা চালানোর অভিপ্রায় আর নেই। বরং ইজরায়েলের ভিতরে ঢুকে, গভীরে হামলা চালাবে হেজবোল্লা। গতবছর অক্টোবর মাস থেকে ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলাকালীনই প্যালেস্তাইনের হয়ে ইজরায়েলেরে উপর বেশ কয়েক বার আঘাত হেনেছে হেজবোল্লা। ইজরায়েলও তাদের লক্ষ্যে করে হামলা চালিয়েছে। তবে এবার সরাসরি ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হেজবোল্লা, তাতে ইরানের সহযোগিতা পাচ্ছে তারা। (Israel-Hamas War)
বুধবার তেহরানে খুন হন হামাস নেতা ইসমাইল, যার জন্য ইরান এবং গাজা, দু’পক্ষই ইজরায়েলের মোসাদকে দায়ী করে। হামাসের সমস্ত কাজকর্ম ৬২ বছর বয়সি ইসমাইলই দেখতেন। গাজায় যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রেও তাঁর কথাতেই চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু ইজরায়েল যে-ই না হেজবোল্লা নেতা ফুয়াদকে হত্যার কথা জানায়, তার ঠিক পর পরই ইসমাইল গোপন হামলায় মারা গিয়েছেন বলে জানা যায়। এতে অন্যমাত্রা যোগ করেছে ইজরায়েল অধিকৃত গোলান হাইটসের ফুটবল মাঠে হেজবোল্লার হামলা, যাতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুথি-ও ইজরায়েলের উপর হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সবমিলিয়ে নতুন করে যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়।
এমন পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে আমেরিকা। পেন্টাগন জানিয়েছে, ইজরায়েল এবং সেখানে মোতায়েন আমেরিকার সেনাকে রক্ষা করতে অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান নামাচ্ছে তারা। প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি। পাশাপাশি, অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনেরও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। পরিস্থিতি ঘোরাল হতে দেখে ইতিমধ্যেই লেবানন থেকে নাগরিকদের দেশে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছে ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স, পোল্যান্ড এবং অন্য দেশগুলি। যে কোনও টিকিট কিনে পশ্চিম এশিয়া ছাড়তে নাগরিকদের আর্জি জানিয়েছে একাধিক দেশ।
তবে এই পরিস্থিতিতেও গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। গাজার শেখ রাদওয়ানের একটি স্কুলে ইজরায়েল বাহিনী বোমা নিক্ষেপ করেছে, তাতে প্রায় ১৭ জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০ জন। হতাহতের মধ্য়ে অধিকাংশই শিশু। লেবাননের দক্ষিণের ব্লাতেও ইজরায়েলি যুদ্ধবিমান দু’টি হামলা চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সবমিলিয়ে ইজরায়েলি হামলায় গাজায় এখনও পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৪৮০ মানুষ মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ মানুষ। ১০ হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ৫৯৪ প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১৪৪ শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৫০ জন। যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৯ ইজরায়েলি নাগরিক মারা গিয়েছেন। পাশাপাশি, গত বছর অক্টোবর থেকে ইজরায়েলি হানায় লেবাননে ৫৪২ জন মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে ১১৪ জন নিরীহ নাগরিকও রয়েছেন।