এক্সপ্লোর

Siddharth Chatterjee Viral Video: হিমশীতল চিনে খালি গায়ে প্রাণায়াম, কসরত প্রাক্তন সেনা আধিকারিকের; কী বার্তা দিলেন ষাটোর্ধ্ব বঙ্গসন্তান

Ex-Indian Army officer in China: লাদাখে চিন এবং ভারতের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত যখন তুঙ্গে, সেই সময় ২০২০ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের শাখাপ্রধান করে চিনে পাঠানো হয় সিদ্ধার্থকে।

নয়াদিল্লি: ছিন্নমূল পরিবারের সদস্য তিনি। ছোট্ট বয়সে পোলিও থাবা বসায় শরীরে। একের পর এক ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু রূপকথার গল্পের নায়কের মতোই সব প্রতিবন্ধকতা জয় করেছেন। বার্ধক্যে পৌঁছেও একের পর এক মাইলফলক ছুঁয়ে চলেছেন বঙ্গসন্তান সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের উচ্চপদমর্যাদা সম্পন্ন আধিকারিকই নন শুধু, ষাটোর্ধ্ব সিদ্ধার্থ এই মুহূর্তে ফিটনেস গুরুতে পরিণত হয়েছেন। হিমাঙ্কের নীচে যখন তাপমাত্রা, সেই অবস্থায় খালি গায়ে প্রাণায়াম করে ঝড় তুলছেন চিনে। (Siddharth Chatterjee Viral Video)

লাদাখে চিন এবং ভারতের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত যখন তুঙ্গে, সেই সময় ২০২০ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের শাখাপ্রধান করে চিনে পাঠানো হয় সিদ্ধার্থকে। সেই সময়ও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু বর্তমানে একেবারে অন্য কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। বেজিংয়ে হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রায়, জমে যাওয়া হ্রদের উপর খালিগায়ে প্রাণায়াম করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছেন। নিজের সুস্বাস্থ্যের রহস্য ফাঁস করে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছেন সিদ্ধার্থ। (Ex-Indian Army officer in China)

‘Breathing for Good Health’ নামের ওই তথ্যচিত্র শুরুই হচ্ছে জমে যাওয়া হ্রদের উপর ধ্যানমগ্ন সিদ্ধার্থকে দিয়ে। খালি গায়ে, পদ্মাসনে বসে তিনি ‘ওম’ জপ করছেন। প্রথমে টানা শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের ব্যায়াম প্রাণায়াম করেন সিদ্ধার্থ। ভিডিও শেষও হয় ব্যায়ামরত সিদ্ধার্থকে দিয়ে। প্রাণায়ানের পর উদরমন্থন করেন তিনি, যা ফুসফুসে শ্বাস ধরে রেখে পেটের মধ্যেকার অংশকে ঘোরানোর নৌলি প্রক্রিয়া বলে পরিচিত। এর পর শীর্ষাসনও করেন সিদ্ধার্থ। তাঁর ওই ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগেনি।

আরও পড়ুন: UPSC Aspirant Story: ১০ বারের চেষ্টায় ৪ বার ইন্টারভিউ, তবুও UPSC-তে ব্যর্থ! কেন থামতে নারাজ কুণাল

খালি গায়ে, জমে যাওয়া হ্রদের উপর তিনি ওই প্রচণ্ড ঠান্ডায় বসলে থাকলেন কী করে প্রশ্ন করা হয় সিদ্ধার্থকে। জবাবে প্রাণায়ামকেই কৃতিত্ব দেন তিনি। বলেন, “পৃথিবীতে জন্ম নেওয়ার পর আমাদের প্রথম কাজই হল শ্বাসগ্রহণ। আর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত, আমাদের শেষ কাজও হয় শ্বাসগ্রহণ এবং নিঃশ্বাস ত্যাগ।” সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামই প্রচণ্ড ঠান্ডার সঙ্গে তাঁকে সহজাত হতে সাহায্য করে।

সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত স্থূলতায় কাবু ছিলেন তিনি। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বিটিস, হাইপার টেনশনের মতো হাজারো সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ২০২০ সালে এক ডাচ ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন তিনি, যিনি হিমালয়ে সন্ন্যাসীদের কাছে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, প্রচণ্ড ঠান্ডার সঙ্গে যুঝে ওঠার কৌশল শিখে আসেন। ওই ব্যক্তির থেকেই তিনি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করে সুস্থ হয়ে ওঠার লড়াইয়ে শামিল হন সিদ্ধার্থ। এক্ষেত্রে হাই ইনটেনসিটি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, উপবাস, এবং তীব্র ঠান্ডার সঙ্গে সহজাত হওয়ার কৌশল রপ্ত করেন।

সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, দু’-তিন ঘণ্টা জিমে কাটানোর চেয়ে জোরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে ঢের বেশি সুফল মেলে। আগে দিনে তিন বার খেতেন তিনি। এখন একবার খাবার খান। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বেরোলে আগে কষ্ট হতো। কিন্তু জোরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে অল্প সময়ের মধ্যেই ঠান্ডা পরিবেশের সঙ্গে সহজাত হয়ে ওঠে শরীর। বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরের ভিতরকার তাপমাত্রার মধ্যে ভারসাম্য গড়ে ওঠে। এই উপায়েই তিনি ২৫ কেজি ওজন ঝরাতে সফল হয়েছেন, শারীরিক এবং মানসিক ভারসাম্যতা অর্জনে সফল হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ।

স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পূর্ববঙ্গ থেকে কলকাতায় চলে আসে সিদ্ধার্থের পরিবার। উদ্বাস্তু পরিবারের নিজের সংগ্রাম তো ছিলই, তার মধ্যেই মাত্র তিন বছর বয়সে পোলিও আক্রান্ত হন সিদ্ধার্থ। সেই সময় হাসপাতালে বিদ্যুতের শক দেওয়া হতো তাঁকে, যাতে অসাড় পা আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। স্মৃতিচারণ করে সিদ্ধার্থ বলেন, “তিন বছর বয়সে পোলিও হয় আমার। অসার পায়ে প্রাণ সঞ্চার করতে হাসপাতালে যে বিদ্যুতের শক দেওয়া হতো আমাকে, আজও ওই মুহূর্তে ফিরে যাই আমি।”

পোলিও থেকে সেরে ওঠা জনাকয়েক ভাগ্যবানদের মধ্যে সিদ্ধার্থ একজন। সেখান থেকে দ্বিতীয় বারের চেষ্টাতেই ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান সিদ্ধার্থ। বক্সার হিসেবে খ্যাতি পান, পোলো খেলাতেও হাত পাকান। আধা সামরিক বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, শ্রীলঙ্কায় ইন্ডিয়ান পিস কিপিং ফোর্সে শামিল ছিলেন, আবার উত্তর-পূর্বে উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে অভিযানেও শামিল ছিলেন। ১৯৯৫ সালে সাহসিকতার পুরস্কারও পান সিদ্ধার্থ।

আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী Ivy League-এর প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা সারেন সিদ্ধার্থ। রাষ্ট্রপুঞ্জের কূটনীতিক হিসেবে কেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, ইরাক, সোমালিয়া, সাউথ সুদান, সুদান, ইন্দোনেশিয়া, বসনিয়া, ইরাকি কুর্দিস্তান এবং চিনে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেছেন সিদ্ধার্থ। বর্তমানে চিনে রাষ্ট্রপুঞ্জের ২৬টি দফতরের দায়িত্ব তাঁর হাতে। তাঁর স্ত্রী বান হিউ-হি আবার কোরিয়ার। তিনি UNICEF-এর হয়ে ভারতে কর্মরত। আপাতত প্রাণায়ামের মাধ্যমে সকলকে সুস্থতার মন্ত্র শেখানোই লক্ষ্য সিদ্ধার্থের।

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

SSC Supreme Court: 'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
RG Kar Case: 'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
West Bengal News LIVE Updates:'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
Weather Forecast: থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Jukti Takko: 'একটি ইসলামিক সমাজে সংখ্যালঘুদের এটাই প্রাপ্য', মন্তব্য মোহিত রায়েরJukti Takko: 'বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ তাদের রুটি সেঁকবে', কোন প্রসঙ্গে মন্তব্য দেবাশিস দাসের?Jukti Takko (পর্ব ২): ওপারে হিন্দুু কাঁদে, মৌলবাদ সাজায় ঘুঁটি, এপারে তাই নিয়ে, রাজনীতি সেঁকে রুটিJukti Takko (পর্ব ১): ওপারে হিন্দুু কাঁদে, মৌলবাদ সাজায় ঘুঁটি, এপারে তাই নিয়ে, রাজনীতি সেঁকে রুটি

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
SSC Supreme Court: 'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
'জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়', SSC মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
RG Kar Case: 'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
'বর্তমানে যে তদন্ত চলছে আস্থা নেই', নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
West Bengal News LIVE Updates:'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
'অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি ? যাতে অবৈধদের চাকরি থেকে বের না করতে হয়?' প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
Weather Forecast: থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
থমকে শীতের আমেজ! নিম্নচাপের জেরে ফের বৃষ্টি সতর্কতা জেলায় জেলায়
Jukti Takko: 'ইসলাম ধর্ম সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণকে অনুমোদন দেয় না', যুক্তি-তক্কো অনুষ্ঠানে বড় বার্তা বাকিবিল্লাহ মোল্লার
'ইসলাম ধর্ম সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণকে অনুমোদন দেয় না', যুক্তি-তক্কো অনুষ্ঠানে বড় বার্তা বাকিবিল্লাহ মোল্লার
India-Bangladesh Issue: বাংলাদেশিদের হাতে ভারতের 'ভুয়ো পাসপোর্ট'! রাজ্যে জঙ্গি প্রবেশের আশঙ্কা চরমে!
বাংলাদেশিদের হাতে ভারতের 'ভুয়ো পাসপোর্ট'! রাজ্যে জঙ্গি প্রবেশের আশঙ্কা চরমে!
Stock Market Crash: বাজার খুলতেই বড় পতন, সকালেই ৩ লক্ষ কোটির লোকসান বিনিয়োগকারীদের- দাম পড়ছে এই স্টকগুলির
বাজার খুলতেই বড় পতন, সকালেই ৩ লক্ষ কোটির লোকসান বিনিয়োগকারীদের- দাম পড়ছে এই স্টকগুলির
Dev on Khadaan: দুপুরে শো না পাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ দেবের, রাত হতেই বদলাল 'খাদান'-এর ব্যবসার ছবিটা!
দুপুরে শো না পাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ দেবের, রাত হতেই বদলাল 'খাদান'-এর ব্যবসার ছবিটা!
Embed widget