Homo Sapiens: কেন হারিয়ে গেল মানুষের ৯ পূর্বসুরি? কী ভাবে টিকে রইল 'হোমো সেপিয়েন্স'? উত্তর খুঁজছে গবেষণা
Vanished Ancestors Of Humans:ছিলেন, কিন্তু গেলেন কোথায়? কেন 'উধাও' হতে হল ওঁদের? আমাদের অর্থাৎ মানুষ বা 'হোমো সেপিয়েন্স'-র পূর্বসূরি, ৯ প্রজাতিকে নিয়ে এই প্রশ্ন নতুন নয়
নয়াদিল্লি: ছিলেন, কিন্তু গেলেন কোথায়? কেন 'উধাও' হতে হল ওঁদের? আমাদের অর্থাৎ মানুষ বা 'হোমো সেপিয়েন্স'-র (Homo Sapiens) পূর্বসূরি, ৯ প্রজাতিকে নিয়ে এই প্রশ্ন নতুন নয়। তবে নিশ্চিত উত্তর এখনও অজানা। যদিও বিষয়টি নিয়ে চলতি বছরে 'নেচার' জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা হইচই ফেলে দিয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার নিরিখে পূর্বসূরিদের তুলনায় সামান্য এগিয়ে থাকা, 'জেনেটিক ডাইভার্সিটি'-র (Genetic Diversity) মতো একাধিক বিষয় বিবর্তনের ধারায় 'হোমো সেপিয়েন্স'-কে এগিয়ে দিয়েছিল, উঠে এসেছে ওই গবেষণাপত্রে। (research paper)
সহজ নয়...
মানুষের এই বিবর্তনের প্রক্রিয়া সহজ নয়, বেশ জটিল। তবে অত্যন্ত রোমহর্ষক। বিষয়টি বুঝতে অনেকটা সাহায্য় করেছেন জীবাশ্মবিদেরা। তাঁদের একাধিক গবেষণা থেকে এখনও পর্যন্ত যা উঠে এসেছে, তাতে জানা যায়, আজ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে পৃথিবীর বুকে 'হোমিনিন' গোষ্ঠীর বিশাল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সদস্যদের মধ্যে শুধু 'হোমো সেপিয়েন্স'-ই টিকে ছিল। এর নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা উঠে আসে। কেউ মনে করেন, বাকি প্রজাতির সদ্যোজাতদের তুলনায় 'হোমো সেপিয়েন্স' নবজাতকদের বেঁচে থাকার হার বেশি ছিল। বিশেষজ্ঞদের অন্য একাংশের আবার বক্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান মানুষের ৯ পূর্বসুরিকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে নিয়ে যায়। কিছু কিছু তত্ত্বে আবার দাবি করা হয়, 'হোমো সেপিয়েন্স' প্রজাতি তাদের পূর্বসুরিদেরও শিকার করতে ছাড়ত না।
চলতি বছরে 'নেচার' জার্নালে প্রকাশত গবেষণাপত্র অনুযায়ী, বিবর্তনের ধারায় এক লাফ দিয়ে চলে এসেছিল 'হোমো সেপিয়েন্স'। সম্ভবত আফ্রিকার একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের উৎপত্তি। আফ্রিকায় ১০ লক্ষ বছর ধরে বসবাসকারী 'হোমিনিন' গোষ্ঠীরই দুটি 'পপুলেশন'-র বংশধারা তারা। তবে এই দাবি নিয়ে বিতর্ক ছিল, আজও রয়েছে। এই ধরনের গবেষণার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হল জীবাশ্মের অভাব। যেমন প্রাচীনতম প্রজাতি, 'হোমো নলেদি'-র জীবাশ্ম দক্ষিণ আফ্রিকার একটি জায়গা ছাড়া কোথাও পাওয়া যায়নি। বাকি একাধিক প্রজাতির হাতেগোনা জীবাশ্মের হদিশ মিলেছে। অন্য দিকে আবার, 'নিয়েনডারথাল' এবং 'ডেনিসোভান', এই দুই প্রজাতি সম্পর্কে বিপুল তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা। সব মিলিয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো কঠিন।
তবে 'নিয়েনডারথাল' এবং 'ডেনিসোভান' সম্পর্কে যে তথ্য রয়েছে, তা থেকে গবেষকদের ধারণা, এরা বেশিরভাগ সময়ই ছোট গোষ্ঠীতে বসবাস করত। প্রজননও নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখত। ফলে এই বংশগতিতে বৈচিত্র্য ছিল কম। তুলনায়, 'হোমো সেপিয়েন্স'-সদস্যরা বড় গোষ্ঠীতে থাকতে অভ্যস্ত হওয়ায় তাদের বংশগতির বৈচিত্র্য ছিল বেশি। ফলে পূর্বসুরিদের তুলনায় রোগভোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি ছিল তাদের।
সুবিধা আরও...
গবেষকদের ধারণা, খরা বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা 'হোমো সেপিয়েন্স' সদস্যরা এক জায়গা থেকে সরে এসে সহজে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে পারত। এক্ষেত্রেও পূর্বসুরিদের তুলনায় সুবিধাজনক জায়গায় ছিল তারা। এই সামাজিক সহনশীলতা তাদের টিকে থাকার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা করে দেয়। তবে কোনও কোনও গবেষক এও মনে করেন, 'হোমো সেপিয়েন্স'-র মতোই ক্ষমতা ছিল 'নিয়েনডারথাল'-দের। শুধু সামান্য কিছু জিনিস, যেমন সেলাই বা বুননের ক্ষমতা থাকায় বিবর্তনের মানদণ্ডে এগিয়ে যায় 'হোমো সেপিয়েন্স'। ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়ে বাকিরা। তাদের অস্তিত্ব মিশে যায় 'হোমো সেপিয়েন্স'-র জিনে। বাকিটা জানে ৩ লক্ষ বছর আগেকার পৃথিবী।
আরও পড়ুন:মণিপুরের আকাশে অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু, বন্ধ রইল বিমান চলাচল, বায়ুসেনাকে দিয়ে তল্লাশি