Murshidabad News:মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ২৪ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যুর হাসপাতালে স্বাস্থ্য ভবনের ২ কর্তা, শুরু 'সাফাইয়ের রাজনীতির তরজা'
Children Death:মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ২৪ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে গেলেন স্বাস্থ্য ভবনের দুই কর্তা। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।
রাজীব চৌধুরী, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ২৪ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে গেলেন স্বাস্থ্য ভবনের দুই কর্তা। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, যে ১০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই গুরুতরভাবে অসুস্থ ছিল। যদিও এই সাফাইয়ে রাজনীতির তরজার আঁচ এতটুকু কমেনি।
কী ছবি?
এ যেন মৃত্যু-প্রহর!গত মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সদ্যোজাত-সহ ১০ জন শিশুর মৃত্যু! মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। পরিকাঠামোর অভাব, নিম্নমানের চিকিৎসা পরিষেবা, রেফার রোগ। সমালোচনায় উঠে আসছে বিস্তর অভিযোগ। আর সেই পাহাড়প্রমাণ অভিযোগের মুখে দাঁড়িয়ে ২৪ ঘণ্টায় ১০ শিশু-মৃত্যুর ঘটনায় সাফাই দিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃত শিশুদের তালিকা সামনে এনে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ৫ জন সদ্যোজাতর ওজন অত্যন্ত কম ছিল। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, একজন সদ্যোজাতের ন্যূনতম ওজন হওয়া উচিত ২ কেজি ৮০০ গ্রাম। সেখানে ৫ জন সদ্যোজাতের ওজন তুলনায় অনেকটাই কম ছিল। বিশেষ করে দুই সদ্যোজাতের ওজন ছিল এক কেজিরও কম। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, মৃত ১০ জন শিশুর মধ্যে ৩ জন প্রথমে ওই হাসপাতালেরই মাতৃমা বিভাগে ভর্তি ছিল। পরে তাদের SNCU-তে আনা হয়। ৩টি হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছিল ৩ জন শিশুকে। ৪ জনকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল অন্য জায়গা থেকে। তাঁদের আরও বক্তব্য, ৫ জন তো আন্ডারওয়েট ছিলই।
২ জন ছিল সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত। ৬ মাসের এক শিশুকন্যা উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ায় তার গুরুতর আঘাত ছিল। আড়াই বছরের এক শিশুর স্নায়ুর সমস্যা ছিল। আরেক শিশুর জন্মগত কিছু অস্বাভাবিকতা ছিল।
উত্তেজনা:
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন শিশুমৃত্য়ুর ঘটনা ঘিরে চড়ছে রাজনীতির পারদ। এদিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের SNCU-তে যান বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হা। অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করতে চায় এত অপুষ্টি কেন? আপনার দুয়ারে সরকার কী হল? পুষ্টির অভাবে মায়েরা রুগ্ন শিশু প্রসব করছেন। চোদ্দ বছরে সরকার কী করল? আমি CBI তদন্ত দাবি করছি। তাহলেই সত্য সামনে আসবে।' সরব সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। বলেন, 'ভয়ঙ্কর ঘটনা। শিশু চিকিৎসকদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন ভ্রমণে। আর সরকারি হাসপাতাল চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে। শিশু মারা যাচ্ছে কার কী! মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে লাগবে শিশু বিশেষজ্ঞ।' তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের অবশ্য বক্তব্য, '
স্বাস্থ্য পরিষেবা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। ওটা একটা ঘটনা ঘটেছে। নজর রাখা হচ্ছে। আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেক ভাল হয়েছে।' এই তরজার মধ্যেই দিন সন্ধেয় স্বাস্থ্যভবনের দুই কর্তা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে পৌঁছন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ৩ সদস্য়ের যে অভ্য়ন্তরীণ তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে, শনিবার তাঁদের রিপোর্ট সামনে আনা হবে।