Indians in Russia: ভারতীয়দের ভাড়া করে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ রাশিয়ার? চিঠি গেল বিদেশমন্ত্রকের কাছে
Russia-Ukraine War: এই প্রথম রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় ভারতীয়দের খোঁজ মিলল।
![Indians in Russia: ভারতীয়দের ভাড়া করে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ রাশিয়ার? চিঠি গেল বিদেশমন্ত্রকের কাছে AIMIM MP Asaduddin Owaisi writes to MEA as Indians hired as helpers are allegedly forced to fight war for Russia against Ukraine Indians in Russia: ভারতীয়দের ভাড়া করে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ রাশিয়ার? চিঠি গেল বিদেশমন্ত্রকের কাছে](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2024/02/21/086670f8ceb77154e38d9454d72b73601708503680204338_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
নয়াদিল্লি: নয় নয় করে দু'বছর হতে চলল। এখনও রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এর আগে যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভারতের নাম উঠে এসেছে। এবার যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে ভাড়াটে সৈনিক হিসেবে যুদ্ধে যোগদানকারী তিন ভারতীয়কে নিয়ে আলোচনা শুরু হল। যুদ্ধে হেল্পারের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তিন ভারতীয়কে এক এজেন্ট রাশিয়া নিয়ে যান বলে অভিযোগ। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন বলে জানা গিয়েছে। নির্দিষ্ট করে ওই তিন জনের কথা উঠে এলেও, আরও ভারতীয় যুদ্ধে যোগদান করে থাকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে আশঙ্কাও। (Indians in Russia)
এখনও পর্যন্ত যে তথ্য সামনে এসেছে, সেই অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন সীমান্তের মারিউপোল, খারপোল, ডনেৎস্ক, রস্তভ-অন-ডনে ১৮ ভারতীয়ের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। দিশাহীন ভাবে তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। যুদ্ধে এক ভারতীয় মারাও গিয়েছেন বলে খবর। তার মধ্যেই আরও তিন ভারতীয়ের খোঁজ মিলল, যাঁরা রাশিয়ার হয়ে ভাড়াটে সৈনিক হিসেবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। (Russia-Ukraine War)
এর আগে, ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়াকে প্রতিহত করতে ২০২২ সালে ইন্টারন্যাশনাল লিজিয়ন গঠিত হয়। বেশ কিছু ভারতীয় তাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যোগদান বলে খবর সামনে আসে। তবে এই প্রথম রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় ভারতীয়দের খোঁজ মিলল। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনকে আক্রমণ করে রাশিয়া। তীব্রতা কমলেও, সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চলে আসছে। আগাগোড়া এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে আসছে দিল্লি। যুদ্ধ থামানোর দাবিতে সওয়াল করে আসছে। তাই যুদ্ধে ভারতীয়দের যোগদানের খবরে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Shashi Tharoor: রাজনীতি থেকে লেখালেখি, সবেতেই সফল, ফ্রান্সের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পেলেন শশী
বিষয়টি সামনে আসতেই বিদেশ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন AIMIM নেতা, লোকসভার সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। গত ২৫ জানুয়ারি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি লেখেন তিনি। চিঠি দেন মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসেও। ওই ভারতীয়দের দেশে ফেরানোয় সরকারি হস্তক্ষেপ চাইছেন তিনি। রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে যোগদানকারীরা উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, পঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
জানা গিয়েছে, উত্তর প্রদেশ থেকে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে যোগদান করেছেন যে যুবক, তাঁর বয়স ২০ বা তার চেয়ে সামান্য বেশি। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, রুশ সেনা তাঁদের তিন জনকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে। জানুয়ারি মাসে সীমান্ত পেরিয়ে রস্তভ-অন-ডনে পাঠানো হয় তাঁদের। আক্রমণ ধেয়ে এলে কামানের সামনে দাড়িয়ে যুদ্ধে চালিয়ে যেতে বাধ্য হন তাঁরাও।
সংবাদমাধ্যমে ওই যুব জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছন তাঁরা। চুক্তিও স্বাক্ষর করতে হয় তাঁদের। সেনার হেল্পারের চাকরি রয়েছে বলে গোড়ায় জানানো হয়েছিল। যুদ্ধে যেতে হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছিলেন ওই এজেন্ট। মাসে ১.৯৫ লক্ষ টাকা বেতন এবং বাড়তি ৫০ হাজার টাকা বোনাস মিলবে বলে কথা পাকা হয়। কিন্তু গত দু'মাসে ৫০ টাকা করে বোনাস ছাড়া মূল বেতন হাতে আসেনি তাঁদের।- ফয়জল খান নামের এক ব্যক্তি, যিনি 'বাবা ভ্লগস' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল চালান, তিনিই এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই যুবক।
ওই যুবক জানিয়েছেন, অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালানোর চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ধরে ফেলে রুশ সেনা। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। তার পর এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিংয়ে জিনিসপত্র সরানোর দায়িত্ব পড়ে। কিন্তু মাত্র পাঁচ মিটারের দূরত্ব পেরোতে গিয়েই মুহুর্মুহু গুলি ছুটে আসে, তাতে এক ভারতীয় সঙ্গীর মৃত্যু হয়। বরফে একনাগাড়ে থেকে তুষারক্ষতও তৈরি হয় ওই যুবকের শরীরে। কোনও রকমে পালিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওই যুবকের কাছে পৌঁছতে সক্ষম হয়। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে ফোন ছি না। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। এর পর মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, কোনও কাজ হয়নি। সঠিক কাগজপত্র এবং টাকা না থাকায় দেশে ফেরার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনিও। দিল্লির তরফেও এ নিয়ে কোনও সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাশিয়ায় পৌঁছনোর পর যে এজেন্ট ওই ভারতীয়দের রাস্তা দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। তিনি জানিয়েছেন, দিল্লির তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা নেই ওই তিন জনের। রান্না এবং সেনার টুকটাক কাজের জন্যই ওই তিন জনকে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু কথা ছিল, তিন মাস তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া হেব মানসিক অবস্থারও। তার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাঁদের যুদ্ধে পাঠানো হবে কি না। কিন্তু এক মাসের মাথাতেই ওই ভারতীয়দের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্য করা হয় রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে। অন্য দেশের অনেকেও সেখানে আটকে রয়েছেন বলে খবর।
এ নিয়ে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে এই সংক্রান্ত আরও অভিযোগ জমা পড়েছে বলে খবর। যদিও সরকারি সূত্রে খবর, সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ায় পৌঁছনো অনেকেই দেশে ফিরতে আগ্রহী নন। অনেকে আবার এজেন্টদের মোটা টাকা দিয়ে রাশিয়া পালিয়েছে। পরিবারের জন্য় কিছু রোজগার না করে দেশে ফিরতে চান না তাঁরা।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)