এক্সপ্লোর

Ram Mandir Movement: মোদির হাতে মন্দির উদ্বোধন অযোধ্যায়, সূচনা থেকে সমাপ্তি, রামজন্মভূমি আন্দোলনের নেপথ্যনায়ক যাঁরা

Ayodhya Ram Mandir Inauguration: রামজন্মভূমি আন্দোলনে শুধু নেতৃত্বই দেননি, দেশের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এঁরা।

নয়াদিল্লি: বহু শতক ধরে বিতর্ক, অশান্তি। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ। অযোধ্য়ার 'বিতর্কিত' জমিতে রামমন্দিরের নির্মাণ প্রায় সম্পন্ন। ২২ জানুয়ারি মন্দিরের উদ্বোধন, প্রাণপ্রতিষ্ঠা 'রামলালা' অর্থাৎ রামচন্দ্রের শিশুকালের মূর্তিতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রামমন্দির উদ্বোধনের এই অনুষ্ঠান নিয়ে তাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। বিরোধীদের দাবি, রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই বিজেপি-র তরফে এত তৎপরতা। কিন্তু বাবরি মসজিদ থেকে রামমন্দিরের নির্মাণ, দীর্ঘ পথ পেরিয়েছে অযোধ্যা। এই গোটা পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন কিছু মানুষ, রামজন্মভূমি আন্দোলনে তাঁরা শুধু নেতৃত্বই দেননি, দেশের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। (Ram Mandir Movement)

মহন্ত রঘুবীর দাস

অযোধ্যায় রামমন্দির নিয়ে আইনি বিবাদের সূচনা ঘটে মহন্ত রঘুবীর দাসের হাত ধরেই। ১৮৮৫ সালে মুঘল  সম্রাট আকবরের নির্মিত রাম চবুতরার উপর রামমন্দির নির্মাণ করতে চেয়ে আবেদন জানান তিনি। অশান্তির আশঙ্কায় দু’-দু’বার তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। হিন্দু-মুসলিম বিরোধ বরাবরই ছিল, কিন্তু সেই প্রথম বিষয়টি নিয়ে আইনি হস্তক্ষেপের দাবি ওঠে। (Ayodhya Ram Mandir Inauguration)

পরমহংস রামচন্দ্র দাস

১৯৪৯ সালের ২২-২৩ ডিসেম্বরের রাতে ১৬শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করে তিনিই ‘রামলালা’র মূর্তি রেখে আসেন বলে দাবি করেন পরমহংস রামচন্দ্র দাস। ১৯৯১ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “মসজিদের ভিতরে মূর্তি রেখে আসি আমিই।” তাঁর এই পদক্ষেপের পরই ওই জায়গাকে ‘বিতর্কিত’ বলে তালা ঝুলিয়ে দেয় সরকার। পরের বছর, বিতর্কিত ওই জায়গায় ‘রামলালা’র পুজো করতে চেয়ে দ্বিতীয় বার আবেদন জানান পরমহংস রামচন্দ্র দাস। বেশ কয়েক বছর ধরে ওই মামলা চলে। ১৯৯০ সালে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অন্যতম অভিযুক্তও পরমহংস রামচন্দ্র দাস।

আরও পড়ুন: Mahua Moitra: ‘প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করা হবে’, বাংলো খালি করতে এবার মহুয়াকে হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের

অশোক সিঙ্ঘল

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি অশোক সিঙ্খল রাম জন্মভূমি আন্দোলনের হোতা। ১৯৮৫ সালে তাঁর নেতৃত্বেই ‘রাম জানকী রথযাত্রা’ শুরু হয়। রামজন্মভূমির তালা খুলে দিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি। তাঁর উদ্যোগে ভর করেই ‘রামজন্মভূমি করসেবা আন্দোলনে’র সূচনা ঘটে। বিতর্কিত ওই জায়গার তালা খুলে দেওয়ার হলে, বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন অশোক সিঙ্ঘল।

লালকৃষ্ণ আডবানি

১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত ‘রামজন্মভূমি রথযাত্রা’র ডাক দিয়ে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি এবং রামজন্মভূমি আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন লালকৃষ্ণ আডবানি। পরবর্তীতে দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রীও হন। রথযাত্রাকে ঘিরে হিংসা-অশান্তি বাধলে, আডবানিকে গ্রেফতার করে বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের সরকার। করসেবকদের মধ্যে রামকে নিয়ে আগুনে আডবানিই ঘৃতাহুতি দেন বলে অভিযোগ। তাঁর গ্রেফতারির পরও করসেবকরা অযোধ্যায় ঢুকে পড়েন।

১৯৯২ সালের ৫ ডিসেম্বর একটি ‘গোপন বৈঠকে’ও আডবানি উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, ওই বৈঠকেই বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এর পর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের কাছে ভাষণ দেন আডবানি, যেখানে করসেবকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল, “আজ করসেবার শেষ দিন।” বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম ওঠে আডবানির। চার্জশিটে বলা হয়, করসেবকদের রাস্তা আটকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আডবানি, যাতে রামজন্মভূমিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছতে না পারে।

মুরলি মনোহর জোশী

১৯৯০ সালে রথযাত্রা চলাকালীন আডবানির মূল সহযোগী ছিলেন মুরলি মনোহর জোশী। পরবর্তী কালে কেন্দ্রের মন্ত্রীও হন। জ্বালাময়ী ভাষণের জন্য পরিচিত ছিলেন জোশী। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের আগে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তিনি, তা ‘উস্কানিমূলক’ ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বাবরি মসজিদ ধ্বংসে মথুরায় করসেবকদের তিনিই উৎসাহিত করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই সময় তিনি যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে বলেছিলেন, “এখন আর রামমন্দিরের নির্মাণ আটকানো যাবে না।” বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর যে ছবি সামেন আসে, তাতে হাসতে দেখা যায় জোশীকে। ওই ছবিতে বিজেপি-র উমা ভারতীকেও দেখা যায়। পিছন থেকে, হাসিমুখে জোশীকে জড়িয়েছিলেন তিনি।

প্রমোদ মহাজন

আডবানির রথ যাত্রা আসলে প্রমোদ মহাজনের মস্তিষ্কপ্রসূত ছিল। প্রথমে পদযাত্রা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ রথযাত্রার জন্য দু’টি তারিখ তুলে ধরেন তিনি, ২৫ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় জনসঙ্ঘ নেতা দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকী এবং ২ অক্টোবর, মহাত্মা গাঁধীর জন্মবার্ষিকী। রথযাত্রার জন্য শেষ পর্যন্ত ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি বেছে নেন আডবানি।

বিনয় কাটিয়ার

১৯৮৪ সালে বজরং দলের প্রতিষ্ঠা করেন বিনয় কাটিয়ার। রামমন্দির আন্দোলনে তিনিই চালিকাশক্তি ছিলেন বলে দাবি করা হয়। বজরং দলের সভাপতিও ছিলেন বিনয়। পরবর্তীতে বিনয় দাবি করেন, রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর তাঁর হাতেই স্থাপিত হয় এবং পরে একে একে বাকিরা যোগ দেন। শুধু তাই নয়, CRPF-এর গুলিতে কোঠারি ভাইদের মৃত্যু হয় বলেও দাবি করেন বিনয়।  তাঁর দাবি ছিল, করসেবকদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে মুলায়ম সিংহ যাদব সরকারই হিংসার সূচনা ঘটায়।

উমা ভারতী

বাবরি মসজিদ ধ্বংসস মামলার চার্জশিটে উস্কানিমূলক স্লোগান দেওয়ার জন্য উমা ভারতীর নামের উল্লেখ ছিল. বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উমা ভারতীর মুখে যে স্লোগান শোনা যায়, তারও উল্লেখ মেলে, যা হল, “এক ধাক্কা অউর দো, বাবরি মসজিদ তোড় দো”, “মসজিদ গিরাও, মন্দির বানাও, বাবর কি অলাদ কো পাকিস্তান ভাগাও”, “জিন্নাহ্ বোলে জয় শ্রী রাম”। চার্জশিটে বলা হয়, উমা ইঙ্গিত দিতেই বাবরি মসজিদ ভাঙা শুরু হয়। গোটাটাই পূর্ব পরিকল্পিত ছিল। তিনি নিজে ওই পরিকল্পনার অংশ ছিলেন বলে স্বীকারও করে নেন উমা। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন তিনি।

রাম এবং শরদ কোঠারি

রাম এবং শরদ কোঠারি দুই ভাই। তাঁরা করসেবক ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি ছিল, ১৯৯০ সালের ৩০ অক্টোবর ৫ হাজার মানুষের সঙ্গে বাবরি মসজিদে ঢুকে পড়েন ওই দু’জন। তার পর বাবরি মসজিদের মাথায় উঠে গেরুয়া পতাকা পুঁতে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেই সময় গুলি চালায় পুলিশ, যাতে বেশ কয়েক জন মারা যান।

এর দু’দিন পর, ১৯৯০ সালের ২ নভেম্বর ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে সচেষ্ট পুলিশের গুলিতে কোঠারি ভাইয়েদের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। তবে কোঠারি ভাইয়েদের স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশে তৈরি একটি ওয়েবসাইটে মুখ খুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন এবং ‘রামধুনী কীর্তনে’র আয়োজন করে নিজেদের বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাইছিলেন বলেই দুই ভাইকে হত্যা করা হয়।

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

Dilip Ghosh: 'অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত, রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা মনে করি', দিলীপের মন্তব্যে নতুন জল্পনা !
'অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত, রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা মনে করি', দিলীপের মন্তব্যে নতুন জল্পনা !
Mamata Banerjee: সোমবার কালীঘাটে TMC-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক, কী বার্তা দেবেন তৃণমূলনেত্রী?
সোমবার কালীঘাটে TMC-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক, কী বার্তা দেবেন তৃণমূলনেত্রী?
Border-Gavaskar Trophy: হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পরেও বুমরার বিধ্বংসী বোলিংয়ে পারথে সুবিধাজনক জায়গায় ভারত
হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পরেও বুমরার বিধ্বংসী বোলিংয়ে পারথে সুবিধাজনক জায়গায় ভারত
Bakibur Rahaman: রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানকে দুবাই যাওয়ার অনুমতি আদালতের
রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানকে দুবাই যাওয়ার অনুমতি আদালতের
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Train Derailed: আদ্রা-খড়গপুর শাখার পিয়ারডোবা স্টেশন লাইনচ্যুত মালগাড়ি | ABP Ananda LIVEWest Bengal News: আবাস তালিকায় 'দুর্নীতি', সরকারি অফিসারদেরই নিশানা বিধায়কের | ABP Ananda LIVEKanksa News: বারাবনির পর কাঁকসা, পুলিশমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেই 'অ্যাকশন' | ABP Ananda LIVESuvendu Adhikari: 'এখানে কেউ সেফ নয়', কোন প্রসঙ্গে এমন কথা বললেন শুভেন্দু? ABP Ananda Live

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Dilip Ghosh: 'অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত, রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা মনে করি', দিলীপের মন্তব্যে নতুন জল্পনা !
'অভিষেকের কথাবার্তা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত, রাহুল গান্ধীর থেকে ভাল নেতা মনে করি', দিলীপের মন্তব্যে নতুন জল্পনা !
Mamata Banerjee: সোমবার কালীঘাটে TMC-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক, কী বার্তা দেবেন তৃণমূলনেত্রী?
সোমবার কালীঘাটে TMC-র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক, কী বার্তা দেবেন তৃণমূলনেত্রী?
Border-Gavaskar Trophy: হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পরেও বুমরার বিধ্বংসী বোলিংয়ে পারথে সুবিধাজনক জায়গায় ভারত
হতাশাজনক ব্যাটিংয়ের পরেও বুমরার বিধ্বংসী বোলিংয়ে পারথে সুবিধাজনক জায়গায় ভারত
Bakibur Rahaman: রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানকে দুবাই যাওয়ার অনুমতি আদালতের
রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানকে দুবাই যাওয়ার অনুমতি আদালতের
CAB Controversy: নির্বাসিত ২ আম্পায়ার-সহ তিন, সিএবি-র শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন, বঞ্চনার শিকার টালিগঞ্জ?
নির্বাসিত ২ আম্পায়ার-সহ তিন, সিএবি-র শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন, বঞ্চনার শিকার টালিগঞ্জ?
Jadavpur Exam Controversy: ফের খাতা দেখে ফল প্রকাশ, যাদবপুরে নম্বর 'গরমিলে' অধ্য়াপককে শোকজ়
ফের খাতা দেখে ফল প্রকাশ, যাদবপুরে নম্বর 'গরমিলে' অধ্য়াপককে শোকজ়
Wetland illegal Construction Controversy : অবাধে চলছে জলাভূমি ভরাট, হইচই পড়ে যেতেই ঢাকা হল আর্থমুভার, এবিপি আনন্দ-র ক্যামেরা দেখতে যা হল ...
অবাধে চলছে জলাভূমি ভরাট, হইচই পড়ে যেতেই ঢাকা হল আর্থমুভার, এবিপি আনন্দ-র ক্যামেরা দেখতে যা হল ...
Kolkata News: শহরে ফের অগ্নিকাণ্ড ! বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছে ঝুপড়িতে আগুন, ৮টি বাড়ি পুড়ে ছাই
শহরে ফের অগ্নিকাণ্ড ! বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছে ঝুপড়িতে আগুন, ৮টি বাড়ি পুড়ে ছাই
Embed widget