Corona Delta Variant: কোথা থেকে উৎপত্তি, কেন চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ?
প্রথমের থেকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক বেশি মানুষ। কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হল, তা জানতে শুরু হয় সরকারি স্তরে গবেষণা।গবেষকদের মতে, আলফা ভ্যারিয়েন্টের থেকে ৫০শতাংশ বেশি সংক্রামক করোনার ডেল্টা স্ট্রেইন।
নয়া দিল্লি : দেশের কোভিড গ্রাফ কমলেও স্বস্তিতে নেই স্বাস্থ্যমন্ত্রক। নতুন করে সবার চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। সরকারি গবেষণা বলছে, ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পিছনে এই সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট দায়ী। যার উৎপত্তিস্থল ভারত।
দেশের করোনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান বলছে, প্রথমের থেকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক বেশি মানুষ। কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হল, তা জানতে শুরু হয় সরকারি স্তরে গবেষণা। সম্প্রতি যার উত্তর পেয়েছে Indian SARS COV2 Genomic Consortia ও National Centre for Disease Control। গবেষকরা জানতে পেরেছেন, ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের 'মূল কারিগর' করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (B.1.617.2)।
এই দুই প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা বলছেন, করোনার প্রথম আলফা ভ্যারিয়েন্টের থেকে আরও মারাত্মক এই ডেল্টা স্ট্রেন। প্রথমে ব্রিটেনের কেন্টে পাওয়া গিয়েছিল করোনার এই আলফা ভ্যারিয়েন্ট। গবেষকদের মতে, আলফা ভ্যারিয়েন্টের থেকে ৫০শতাংশ বেশি সংক্রামক করোনার ডেল্টা স্ট্রেন। যদিও গবেষকরা জানিয়েছেন, বেশি সংক্রামক হলেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের জন্য বেশি মানুষ মারা গেছেন কি না , এ বিষয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা। এমনকী এই ভ্যারিয়েন্টের ফলে কোভিড রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়েছে কি না তাও জানেন না গবেষকরা।
করোনার এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিশ্বের। এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে ব্রিটেনের পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (PHE)। দেশের কোভিড ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা সবার সামনে এনেছেন তাঁরা। সেখানে বলা হয়েছে, প্রাথমিক প্রামাণ্য তথ্যের ভিত্তিতে আলফার থেকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে বেশি ক্ষতিকর মনে হয়েছে। PHE-র মতে, এই ভ্যারিয়েন্টের ফলে রোগীর হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে বলতে গেলে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে ব্রিটেনের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির চিফ এক্সিকিউটিভ জেনি হ্যারিস বলেন, ''ব্রিটেনের মধ্যে এখন এই ভ্যারিয়েন্ট প্রভাব বিস্তার করে ফেলেছে। তাই আমাদের এই বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।'' এদিকে, দেশের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। যাতে দেখা গিয়েছে, এই ভ্যারিয়েন্ট ছাড়াও দেশে ১২,২০০ করোনার ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। যা স্বাভাবিকভাবেই ভারতের উদ্বেগের কারণ। যদিও গবেষণা বলছে, এদের অস্তিত্ব ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো ভয়াবহ নয়। সংখ্যার অস্তিত্বে এরা দেশে এখনও অনেক কম পরিমাণে রয়েছে।
করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সরকারি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দেশে সব রাজ্যেই রয়েছে কোভিডের এই ভ্যারিয়েন্ট। যদিও দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ , গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তেলাঙ্গানায় মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করেছে এই ভাইরাস। পরিসংখ্যান বলছে, এইসব রাজ্যেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি ক্ষতি করেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, কোভিডের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হতে পারে। তবে আলফা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এখনও পর্যন্ত দেশে ২৯,০০০ কোভিড রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের (ডিএনএ-র নিউক্লিওটাইডসের অবস্থান বোঝার পরীক্ষা) মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যাতে ৮৯০০টি নমুনায় B.1.617 পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১০০০-এরও বেশি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। যা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে সরকারের।