Bangladesh : 'বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টানদের পাশে দাঁড়ান' লেখা ব্যাগ কাঁধে প্রতিবাদে প্রিয়ঙ্কার নেতৃত্বে কংগ্রেস
১৯৭১ -এ মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গাঁধীর ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ।
নয়াদিল্লি : বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের আঁচ এবার সংসদে। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর লাগাতার হামলার পরও কী করছে মোদি সরকার? সংসদের ভিতরে ও বাইরে সোমবার এই প্রশ্ন তুলে সুর চড়িয়েছিল কংগ্রেস। এরপর মঙ্গলবারও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর নেতৃত্বে সংসদ ভবনের গেটে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস সাংসদরা। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় বিচারের দাবি জানায় কংগ্রেস। কংগ্রেস সাংসদদের হাতে জুটের ব্যাগে লেখা ছিল স্লোগান। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে যোগ দেন অন্য বিরোধীদলের সাংসদরাও।
প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর নেতৃত্বে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে, কাঁধে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা লেখা ব্যাগ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস সাংসদরা। ব্যাগের দুদিকে হিন্দি ও ইংরাজিতে লেখা, 'বাংলাদেশের হিন্দু ও খ্রিস্টানদের পাশে দাঁড়ান'। পাশাপাশি নিজের এক্স হ্যান্ডলে তিনি পোস্ট করেছেন, ‘’অয়ম নিজঃ পরো বেতি গণনা লঘুচেৎসম। উদারচরিত্রানাং তু বসুধৈব কুটুম্বকম।’’
সোমবার বিজয় দিবসের দিনও লোকসভায় এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। কিন্তু প্রিয়ঙ্কাকে বক্তব্য় শেষ করতে দেওয়া হয়নি। যার প্রতিবাদে বাইরে বেরিয়ে আসেন কংগ্রেস সাংসদরা। মকর দ্বারের সামনে শুরু হয় ধর্না। সংসদের ভিতরে প্রিয়ঙ্কা বলেছিলেন, 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে হিন্দুদের ওপর যে অত্যাচার চলছে, তার বিরুদ্ধে এই সরকারের আওয়াজ তোলা উচিত। বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত এবং অত্যাচারিতদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।'
সোমবার, ১৯৭১ -এ মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গাঁধীর ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ। সংসদের বাইরে এসে তিনি বলেন, 'ইন্দিরাজি গোটা বিশ্বে ঘুরে সকলকে বলেছিলেন কিছু করুন। এই অত্যাচারকে আটকান। কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। আমাদের দেশ পাশে দাঁড়িয়েছিল। ইন্দিরাজি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আমাদের সেনা পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের দেশবাসী পাশে দাঁড়িয়েছিল। আজও বাংলাদেশে অত্যাচার হচ্ছে হিন্দুদের ওপর,খ্রিষ্টানদের ওপর সংখ্যালঘুদের ওপর। আমি এটুকুই বলতে চেয়েছিলাম যে আমাদের সরকার আওয়াজ তুলুক। বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলুক এবং তাদের ( পড়ুন , বাংলাদেশের অত্যাচারিত সংখ্যালঘু) সুরক্ষিত রাখতে পদক্ষেপ করুক।'
পাঁচ দশক আগে, এক অস্থির অবস্থা থেকে জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ। ভারত কী করতে পারে, দেখিয়েছিলেন আয়রন লেডি ইন্দিরা গাঁধী। পাকিস্তানকে টুকরো করে, স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ভারত। আজ সেই বাংলাদেশের ইউনূস সরকারই ভারতের বিরুদ্ধে বিষ উগরে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার কি কড়া পদক্ষেপ করবে ? ইতিমধ্যেই ভারতের বিদেশ সচিব বাংলাদেশে গিয়ে বৈঠক করে এসেছেন। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতিতে একচুলও বদল হয়নি। একইরকম ভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন হিন্দুরা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মৌলবাদী নেতা, প্রাক্তন সেনা কর্তাদের মুখে শোনা যাচ্ছে ভারতের বিরুদ্ধে তর্জন-গর্জন। পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে একদা সে-দেশেরই হাতে নিপীড়িত মানুষের দেশ। এই পরিস্থিতিতে তাই ভারত সরকারের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে বিশ্ব।
আরও পড়ুন :
সংখ্যালঘু-মন্তব্যে কোণঠাসা ফিরহাদ! সত্যিই কী বলতে চেয়েছেন? ঘনিষ্ঠমহলে যা বলছেন তিনি...