এক্সপ্লোর
Advertisement
রায়গঞ্জে নিখোঁজ প্রিসাইডিং অফিসারের দেহ উদ্ধার, নিরাপত্তার দাবিতে এসডিও-কে হেনস্থা, গোয়ালপোখরে নির্দল প্রার্থীর সমর্থককে ‘খুন’
রায়গঞ্জ, মালদা, ইসলামপুর ও জলপাইগুড়ি: উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে নিখোঁজ প্রিসাইডিং অফিসারের রহস্য-মৃত্যু। একদিন পর মৃতদেহ উদ্ধার রেল লাইন থেকে। কীভাবে মৃত্যু হল ওই প্রিসাইডিং অফিসারের? রহস্য দানা বাঁধছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃতের নাম রাজকুমার রায়। বাড়ি রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরে। সোমবার ইটাহারের সোনাপুর জুনিয়র বেসিক স্কুলে ৮৪ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন রাজকুমার। ওই বুথে কোনও অশান্তি না হলেও ভোট চলে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত। ভোটের কাজ শেষ করে বুথ থেকে ফিরে আসেন। পরে, মাথা ধরেছে বলে সহকর্মীদের জানিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হন। কিন্তু তিনি বাড়ি না ফেরায়, মঙ্গলবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন ইটাহারের বিডিও।
আজ সকালে কলকাতাগামী রাধিকাপুর এক্সপ্রেসের চালক রায়গঞ্জ স্টেশনে নকডাউন মেমো দিয়ে জানান, বাঙালবাড়ি ও রায়গঞ্জের মাঝে এক ব্যক্তির সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা লাগে। পরে পরিচয়পত্র দেখে নিখোঁজ প্রিসাইডিং অফিসারের মৃতদেহ সনাক্ত করা হয়। মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে মোবাইল।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী, প্রিসাইডিং অফিসার মঙ্গলবার বিকেল ৩.২৪ পর্যন্ত রায়গঞ্জের কলেজপাড়া এলাকায় ছিলেন। বাড়ি থেকে যা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। খুনের অভিযোগ করেছে পরিবার। যদিও প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে সিআইডি-র হাতে।
এই ঘটনার পরেই আজ সকাল থেকে ভোট গণনার দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন জেলার ভোটকর্মীরা। ঘড়ি মোড়ে শুরু হয় অবরোধ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে মারধর করা হয় রায়গঞ্জের এসডিও টি এন শেরপাকে। প্রথমে গায়ে ঢালা হল জল। তারপর শুরু হল মারধর। ছোড়া হল জুতোও।
যদিও রাজ্য প্রশাসন সূত্রে দাবি, যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা বেশিরভাগই বাম মনোভাবাপন্ন এবিটিএ-র শিক্ষক। এঁদের ভোট গণনার ডিউটি দেওয়া হয়নি। এঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসেন। রেকর্ড যাচাই করে দেখা গিয়েছে, ডিউটি রোস্টারে এঁদের নাম নেই। ফলে, এঁদের ভোটকর্মী বলা যায় না।
কয়েক ঘণ্টা পর ঘড়ি মোড় স্বাভাবিক হয়ে গেলেও অবরোধ ছড়ায় শিলিগুড়ি মোড়ে। বন্ধ হয়ে যায় রায়গঞ্জ-বালুরঘাট ১০এ রাজ্য সড়ক। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগাযোগ। একই দাবিতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ হয় ইসলামপুরে।
এদিকে, ভোট মিটলেও হিংসা অব্যাহত। গোয়ালপোখরে গুলি করে খুন করা হল নির্দল প্রার্থীর সমর্থককে। মৃতের নাম মহম্মদ কাসিরুদ্দিন। আজ এই ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ালপোখর থানার হামদাম গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কাসিরুদ্দিনের বাড়ির সামনে চড়াও হয় ফরওয়ার্ড ব্লক আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী। বাড়ি থেকে বেরোলে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নির্দল প্রার্থীর ওই সমর্থকের। এই ঘটনায় এক মহিলা-সহ আরও চারজন আহত হন। তাঁদের ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার ভোটের দিন নির্দল প্রার্থীর হয়ে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ায় তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধেই পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। গোয়ালপোখর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে দু’পক্ষই। যদিও, এই ঘটনার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের দাবি, জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই খুন।
ভোটের দিনের ঝামেলা গড়াল ভোট পরবর্তী হিংসায়। দুই পরিবারের সংঘর্ষে আহত ২। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার ইংরেজবাজার থানার মহদিপুর বেকি কালীবাড়ি এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৪ মে পঞ্চায়েত ভোটের দিন বুথ দখলের অভিযোগকে কেন্দ্র করে তৃণমূলকর্মী বিমল মণ্ডল ও বিজেপি কর্মী ভাগবত্ মণ্ডলের মধ্যে বচসা হয়। অভিযোগ, তার জেরে মঙ্গলবার দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। ধারাল অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দু’পক্ষ। গুরুতর জখম হন এক তৃণমূলকর্মী ও এক বিজেপি কর্মী। গুরুতর আহত আবস্থায় দু’জনকেই ভর্তি করা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ইংরেজবাজার থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে দু'পক্ষই । কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ভোট পরবর্তী হিংসার জের। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির মাগুরমারি গ্রামে বিজেপি কর্মীকে ধারাল অস্ত্রের কোপ। গুরুতর জখম বিজেপি কর্মী সামসুদ্দিন মিঞা জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি।
পরিবারের দাবি, আজ সকালে কাজে যাচ্ছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। সেই সময় তৃণমূল আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। এরপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় সামসুদ্দিনকে।
কেন এই হামলা? বিজেপির দাবি, সোমবার ভোটের দিন বিজেপির হয়ে সক্রিয় ভুমিকা নেন ওই কর্মী। ভোটের আগে দলের হয়ে প্রচারেও সামনের সারিতে ছিলেন। সেই কারণেই তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে শাসক দল। যদিও বিজেপির এই অভিযোগ উড়িয়ে ধূপগুড়ির তৃণমূল নেতা রাজেশ সিংহের পাল্টা দাবি, বিজেপিকে এখানে কেউ সমর্থন করে না। তৃণমূলের নামে মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। ধূপগুড়ি থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও অভিযুক্তরা এখনও অধরা।
গণতন্ত্রের উৎসবে দাপিয়ে বেড়াল তারা। কারও কাঁধে বন্দুক। কারও হাতে ব্যালট বাক্স। পুনর্নির্বাচনেও সন্ত্রাসের সেই চেনা ছবি! ঘটনাস্থল মালদার রতুয়া। ভোট শুরুর পরই বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁকড়া গ্রামের ৭৬ ও ৭৯ বুথে দাপিয়ে বেড়ায় মাস্কেট বাহিনী। ভোটারদের অভিযোগ, সকাল থেকে তাঁদের বুথে ঢুকতে দেয়নি তৃণমূল-আশ্রিত শতাধিক সশস্ত্র দুষ্কৃতী। ভয়ে বুথ ছেড়ে পালিয়ে যান পুলিশ ও ভোটকর্মীরা। অবাধে ব্যালট বাক্স লুঠ করে চলে যায় দুষ্কৃতীরা।
এ বিষয়ে এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মা জানান, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যালট বাক্স উদ্ধার করা হয়। ফের শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বাড়তি নিরাপত্তার মধ্যে শেষ হয় ভোটগ্রহণ।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
বিনোদনের
Advertisement