(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Pakistan Political Crisis: গণ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটেই কৌশল রচনা! ইমরানের পতনের নেপথ্যে যাঁরা
Imran Khan Update: দেশ জুড়ে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে মসনদ টলমল হওয়ার আঁচ আগেই পেয়েছিলেন ইমরান।
ইসলামাবাদ: রাজনৈতিক মতাদর্শের নিরিখে একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান। কিন্তু ইমরান খান (Imran Khan) সরকারের বিরোধিতা একছাদের নীচে নিয়ে চলে এল সকলকে। আর তাতেই ফের পালাবদল ঘটে গেল পাকিস্তানের (Pakistan Political Crisis) রাজনৈতিক ইতিহাসে। শনিবার মধ্যরাতে সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হলেন ইমরান।
বিরোধীদের অবজ্ঞার মাশুল!
দেশ জুড়ে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে মসনদ টলমল হওয়ার আঁচ আগেই পেয়েছিলেন ইমরান। এর নেপথ্যে বিদেশি শক্তির চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু বহির্শক্তির ঘাড়ে দোষ ঠেলতে ব্যস্ত ইমরানকে দেশের অন্দরে বিরোধী শিবিরকে অবজ্ঞার করারই মাশুল গুনতে হল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (PML-N)-ই শুধু নয়, দেশব্যাপী বিক্ষোভের আবহে ইমরান সরকারের বিরোধিতায় একজোট হতে শুরু করে ছোট-বড় সব দলই। এমনকি ইমরানের জোট সরকারে সামিল শরিক দলগুলিও একে একে ইমরানের সঙ্গ ছাড়তে থাকে। আর এই সব দলগুলিকে একছাতার তলায় নিয়ে আসার কারিগর পাকিস্তানের দুই প্রধান রাজনৈতিক পরিবার, শরিফ এবং ভুট্টোরা।
ইমরান সরকারের পতনেক নেপথ্যে যাঁরা
শেহবাজ শরিফ: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের (Nawaz Sharif) ভাই শেহবাজ (Shehbaz Sharif)।পানামা পেপারস দুর্নীতিকাণ্ডে ক্ষমতাচ্যূত হওয়া নওয়াজ এই মুহূর্তে ব্রিটেনে রয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দক্ষ হাতেই PML-N দলের কামান সামলেছেন শেহবাজ। ইমরান পদচ্যূত হওয়ায় এই মুহূর্তে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নামই সবচেয় উপরে।
নওয়াজ-অনুজ হওয়ার সত্ত্বেও দাদার ছায়ায় ঢাকা পড়ে যাননি শেহবাজ। বরং ৭০ বছর বয়সি শেহবাজ নিজগুণেই পাকিস্তানের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা। পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন। সেখানে একাধিক চিনা প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে শেহবাজের হাত ধরেই। ইমরান বিরোধী বিক্ষোভকে রাজনৈতিক রংয়ে মুড়ে ফেলার অঙ্ক, তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। এ ব্যাপাররে বিদেশ থেকে দাদাও তাকে পরিচালিত করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আসিফ আলি জারদারি: বিত্তশালী পরিবারে জন্ম। ক্যাসানোভা ভাবমূর্তির জন্যই পরিচিত ছিলেন প্রথম জীবনে। রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ বেনজির আলি ভুট্টোর সঙ্গে বিবাহসূত্রে। তবে রাজনীতিতে এসেও নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থকেই জারদারি প্রাধান্য দিতেন বলে অভিযোগ। প্রত্যেক সরকারি প্রকল্প থেকে তাঁর ১০ শতাংশ আয় বরাদ্দ থাকত বলে শোনা যায়।
তার জন্য ‘মিস্টার টেন পার্সেন্ট’ তকমাও জোটে জারদারির। দুর্নীতি, মাদক পাচার, খুনের অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু তাঁর কেশাগ্র স্পর্শ করা যায়নি। ২০০৭ সালে বেনজির খুন হওয়ার পর পিপিপি-র চেয়ারম্যান হন । তার এক বছর পর পিএমএল-এন দলের সঙ্গে সমঝোতায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে বসেন।
বিলাবল ভুট্টো জারদারি: মাত্র ১৯ বছর বয়সে পিপিপি-র চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন বেনজির এবং জারদারি পুত্র বিলাবল (Bilawal Bhutto Zardari)। অক্সফোর্ড-ফেরত ৩৩ বছরের বিলাবল মুক্ত এবং উদারমনস্ক বলেই পরিচিত। নারী এবং সংখ্যালঘু অধিকারের দাবিতেও সরব।বর্তমানে পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বয়স ২২ অথবা তার নীচে। তাই বিলাবলকে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে ধরা হয়। ইমরানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বিলাবলকে।
মৌলানা ফজলুর রহমান: কট্টরপন্থী মুসলিম ধর্মগুরুর ভাবমূর্তি নিয়েই রাজনীতিতে প্রবেশ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ভাবমূর্তি কাটিয়ে বেরিয়ে আসেন। ধর্ম নিরপেক্ষ তো বটেই, বামপন্থী এবং দক্ষিণপন্থী দলগুলির সঙ্গে জোটগঠন করতেও দেখা যায় তাঁকে। তবে নিজের দল জমিয়াতুল উলেমা-ই-ইসলামকে মসনদে তুলে আনতে সক্ষম হননি। আসনসংখ্যায় বরাবরই পিছিয়ে পড়েছেন। তবে ইমরানের সঙ্গে বরাবরের ‘শত্রুতা’। জেমাইমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করায় ইমরানকে ইহুদি বলেও উল্লেখ করেন। আবার জ্বালানির লাইসেন্স সংক্রান্ত দুর্নীতিতে নাম উঠে আসায় ইমরান ‘মোল্লা ডিজেল’ বলে কটাক্ষ করেন ফজলুরকে।