K2-18 b Atmosphere: IIT বারাণসী থেকে MIT, ভিন্গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সপক্ষে 'প্রমাণ' দিলেন ভারতের নিক্কু মধুসূদন
Nikku Madhusudhan: আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র James Webb Space Telescope-এর সাহায্যে সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত K2-18 b নামের একটি গ্রহ বা Exoplanet নিয়ে গবেষণা করছেন নিক্কু।

নয়াদিল্লি: পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের সপক্ষে বড় প্রমাণ মিলেছে। সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যে যাঁর নাম বার বার করে উঠে আসছে, তিনি বলেন নিক্কু মধুসূদন। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্পদার্থবিদ তিনি। ভারতীয় নিক্কুকে নিয়ে গর্বে বুক ফুলে উঠছে ভারতেরও। কারণ বছরের পর বছর ধরে যে সম্ভাবনাকে আশ্রয় করে এত গবেষণা, তার নয়া রূপরেখা তৈরি করলেন নিক্কু। (K2-18 b Atmosphere)
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র James Webb Space Telescope-এর সাহায্যে সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত K2-18 b নামের একটি গ্রহ বা Exoplanet নিয়ে গবেষণা করছেন নিক্কু। পৃথিবী থেকে K2-18 b-র দূরত্ব প্রায় ৭০০ ট্রিলিয়ন মাইল। K2-18 নামের একটি লাল রংয়ের বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সেটি। (Nikku Madhusudhan)
সেই গবেষণা করতে গিয়ে সম্প্রতি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেন নিক্কু এবং তাঁর সহযোগীরা। K2-18 b-র বায়ুমণ্ডলে Dimethyl Sulfide (DMS) এবং Dimethyl Disulfide (DMDS) গ্যাসের সন্ধান পান তাঁরা, পৃথিবীতে ওই দুই গ্যাসের সৃষ্টি ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের মতো সামুদ্রিক অণুজীব থেকে। পৃথিবীর তুলনায় K2-18 b Exoplanet DMS এবং DMDS-এর মাত্রা অনেক বেশি। ফলে আশায় বুক বাঁধছেন সকলে।
আর এই গবেষণাই বিশ্বমঞ্চে তুলে এনেছে নিক্কুকে। ১৯৮০ সালে ভারতেই জন্ম তাঁর। IIT বারাণসী থেকে বিটেক করে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MIT) থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখান থেকে পিএইচডি-ও করেন নিক্কু। ২০০৯ সালে যে পিএইচডি-র থিসিস জমা দেন নিক্কু, তার বিষয়স্তুও ছিল সৌরজগতের বাইরের গ্রহদের বায়ুমণ্ডলের উপাদানসমূহ।
পিএইচডি শেষ করে MIT, প্রিন্সটন, ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে গবেষণাও করেন নিক্কু। সেখানে YCAA পুরস্কারও অর্জন করেন। ২০১৩ সালে ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজে যোগ দেন নিক্কু। সেখানকার জ্যোতির্পদার্থ বিভাগে চার বছর লেকচারার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
২০১৭ সালে কেমব্রিজে রিডার ইন অ্যাস্ট্রোফিজিক্স অ্যান্ড এক্সোপ্ল্যানেটারি সায়েন্স বিভাগে পদোন্নতি হয় নিক্কুর। বর্তমানে অ্যাস্ট্রোফিজিক্স অ্যান্ড এক্সট্রাপ্ল্যানেটারি বিভাগের অধ্যাপক করছেন। সৌরগতের বাইরের গ্রহে হাইড্রোজেনে সমৃদ্ধ মহাসাগর থাকতে পারে বলে প্রথম তাঁর গবেষণাতেই উঠে আসে। সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলির সৃষ্টিতত্ত্ব, তাদের বায়ুমণ্ডল, গঠন, প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন নিক্কু। Hubble Space Telescope, James Wevv Space Telescope নিয়ে কাজ করেন।
এর আগে, ২০১২ সালে 55 Cancri e নামের একটি গ্রহ নিয়ে গবেষণা করেন নিক্কু। সেটি আয়তনে পৃথিবীর চেয়ে বড়। ওই গ্রহ কার্বনে সমৃদ্ধ বলে জানা যায়। ২০১৪ সালে নিক্কুর নেতৃত্বে একটি টিম বৃহস্পতির মতো তিনটি উষ্ণ গ্রহের জল মাপার কাজে উদ্যত হন। দেখা যায়, যতটা তাঁরা আশা করেছিলেন, তার চেয়ে কম পরিমাণ দল রয়েছে সেখানে। ২০১৭ সালে WASP-19b নামের একটি গ্রহে টাইটেনিয়াম অক্সাইড মেলে। সেই গবেষণাতেও ছিলেন নিক্কু। ২০২০ সালে K2 18 b নিয়ে গবেষণা শুরু করে সেখানে জলের সম্ভাবনার কথা জানান।
এখনও পর্যন্ত একাধিক স্বীকৃতি পেয়েছেন নিক্কু। ২০১৯ সালে Theoretical Astrophysics-এ EASS MERAC Prize, Pilkington Prize for Excellence in Teaching পুরস্কার পান। ২০১৬ সালে IUPAP Young Scientist Medal in Astrophysics, ২০১৪ সালে ASI Vainu Bappu Gold Medal পান।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
