BYD e6 electric MPV review: বড় কেবিনের সঙ্গে মোলায়েম সফর, ইভি বাজারে দিশা দেখাচ্ছে BYD e6
BYD e6 electric: বৈদ্যুতিক গাড়ির প্ল্যাটফর্মে তৈরি হওয়ায় e6-কে একটি পুরোপুরি ইভি এমপিভি বলা যেতে পারে। এটি কোনও পেট্রল বা ডিজেল গাড়ি নয়, যা একটি ইভিতে পরিণত করা হয়েছে৷
BYD e6 electric MPV review: ভারতে বাড়ছে ইলেকট্রিক গাড়ির বাজার। একের পর এক কোম্পানি ঢুকছে দেশে। ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে এবার নতুন সংযোজন BYD। যার পুরো নাম 'Build your dreams।
BYD e6 electric MPV review: বিশ্ব বাজারে বেশ নাম রয়েছে এই ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানির। বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির পাশাপাশি আরও অনেকগুলি আলাদা ব্যবসা রয়েছে এই কোম্পানির। যার মধ্যে রয়েছে রিচার্জেবল ব্যাটারি, সেল-ফোনের শেল নির্মাণ ছাড়াও আরও অনেক কিছু। কোম্পানির লক্ষ্য এক বছরে এক মিলিয়ন ইভি বিক্রি করবে তারা। চিনের সবচেয়ে বড় ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতকারকের তকমা ইতিমধ্যেই পেয়েছে BYD। ভারতে এখন বাণিজ্যিক গাড়ি তৈরির লক্ষ্যে নেমেছে এই সংস্থা। দেশে তাদের প্রথম লঞ্চ BYD e6 electric MPV। e6 এখন ফ্লিট অপারেটরদের জন্যই কেবল দেওয়া হবে। তাই এই গাড়ি এখন কেবল বাণিজ্যিক ব্যবহারে কাজে লাগবে। যদিও BYD পরবর্তীকালে 'ইনডিভিজুয়াল বায়ার'দের জন্যও আসতে পারে । আমরা চেন্নাইতে এই ইলেকট্রিক MPV চালিয়েছি। এই গাড়ি ইনোভার মতো উপলব্ধি দেয় কিনা বোঝার চেষ্টা করেছি।
BYD e6 electric: বৈদ্যুতিক গাড়ির প্ল্যাটফর্মে তৈরি হওয়ায় e6-কে একটি পুরোপুরি ইভি এমপিভি বলা যেতে পারে। এটি কোনও পেট্রল বা ডিজেল গাড়ি নয়, যা একটি ইভিতে পরিণত করা হয়েছে৷ তাই এর অনেক অ্যাডভান্ডেজ আছে। এই গাড়ির স্পেস ও হুইলবেস বড় হওয়ার পাশাপাশি গাড়িগুলির মেকানিজম কম জটিল। e6-দৈর্ঘ্যে 4,695 এমএম। এই গাড়ি ইনোভার থেকে বড় দেখায়। এটি একটি সাধারণ ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। এর নীল/কালো ডুয়াল টোন কালার স্কিমে আপনার নজর কাড়বেই। এতে এলইডি ডিআরএল, 17 ইঞ্চির চাকা ও পিছনে একটি চমৎকার ক্রোম লাইন দেওয়া হয়েছে। সামনের অংশে কোনও গ্রিল না দেওয়া হলেও শার্প হেডল্যাম্প-সহ একটি জেনারেল ডিজাইন দেওয়া হয়েছে। এর পেইন্ট ফিনিশ ও বিল্ড কোয়ালিটিও খুব ভালো।
BYD e6 electric MPV review: একটা MPV তার ইন্টিরিয়রের ওপর নির্ভর করে। এই গাড়িত আপনি বড় দরজা রয়েছে যা অনেকটাই কোলা যায়। ফলে যাত্রী ওঠানামার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। এর হুইলবেস 2,800 এমএম। যা বেশিরভাগ MPV-এর থেকে বড়। ফলে ভিতরে সেই জায়গা আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন। e6 একটি 5-সিটার MPV। এর দ্বিতীয় সারিতে প্রচুর লেগরুম ও হেডরুম রয়েছে। আপনি সহজেই আরামদায়ক যাত্রার উপলব্ধি নিতে পারবেন। গাড়িতে রয়েছে ফ্ল্যাট ফ্লোর, মানে সেকেন্ড রো-এ তিনজন সহজেই বসতে পারবে। থাই সাপোর্ট ভাল ও বড় জানালা হওয়ায় দম বন্ধ করা পরিবেশ মনে হবে না গাড়িতে। 580 লিটারের বুটটিও বিশাল। সামনের দিকে কেবিনের নকশা জেনারেল রাখা হয়েছে। কেবিনে লেদার ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়ির ভিতরের সামগ্রীর মধ্যে একটি প্রিমিয়াম ফিল রয়েছে। ড্যাশবোর্ডটিও ভালোভাবে তৈরি। কিন্তু নিচের অর্ধেকটায় কিছু শক্ত প্লাস্টিক রয়েছে।
গাড়ির স্টিয়ারিং হুইলে একটি ফাঁকা জায়গা রয়েছে যা গাড়ির কিছুটা ক্লাসি লুক বা প্রিমিয়ামনেস কেড়ে নেয়। যদিও কেবিনের 10.1 ইঞ্চি টাচ স্ক্রিন পছন্দ হবে আপনার। যার মধ্যে ওয়াইফাই রয়েছে। কিছু প্রিলোড অ্যাপও আছে এখানে। এই টাচস্ক্রিন যথেষ্ট রেসপনসিভ।e6-এ রয়েছে একটি এয়ার পিউরিফায়ার, রিয়ার ভেন্ট সহ ক্লাইমেট কন্ট্রোল, একটি রিয়ার ভিউ ক্যামেরা, স্মার্ট কি, একটি টায়ার প্রেসার মনিটরিং সিস্টেম, 4টি স্পিকার-সহ অডিও সিস্টেম ইত্যাদি।
BYD e6 electric MPV review: তবে দাম অনুযায়ী গাড়িতে পিছনের সিটে আর্মরেস্ট, পিছনের সানশেড বা এমনকী পাওয়ার সিট ও সানরুফের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য মিস করেছে। যদিও গাড়ির বিশাল জায়গা, বুট স্পেস হোটেল বা ফ্লিট অপারেটরদের জন্য আদর্শ।
আসুন মূল হাইলাইট সম্পর্কে কথা বলি যা হল মোটর, ব্যাটারি ও রেঞ্জ। 95hp ও 180Nm টর্ক-সহ 130km/h সর্বোচ্চ গতি রয়েছে এই গাড়ির। e6 মূল ইউএসপি হল এর ইন-হাউস ব্লেড ব্যাটারি প্রযুক্তি। BYD দাবি করে, এটি নিরাপদ, আরও মজবুত ও 71.7kWh এর মধ্যে একটি ভাল রেঞ্জ দেয়। এই গাড়ির ব্যাটারি উচ্চ তাপের পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হয়েছে। এই ব্যাটারির ওয়ারেন্টি 8 বছর/5,00,000-এর বেশি।
BYD e6 electric MPV: চালানোর অভিজ্ঞতা কেমন ?
গাড়ি স্টার্টে কোনও ঝটকা নেই। এটি ইলেকট্রিক গাড়ির মতোই মসৃণভাবে শুরু হয়। গাড়ি বড় হওয়া সত্ত্বেও, হালকা স্টিয়ারিং ও 'ভিজিবিলিটি' ভাল হওয়ায় শহরের গাড়ি চালানো সহজ। আমাদের গাড়ির লিনিয়ার এক্সিলারেশন পছন্দ হয়েছে। গাড়িতে কোনও জাম্প বা জার্ক নেই। তবে গাড়িতে কোনও স্পোর্টস মোডের মতো কিছু দেওয়া হয়নি। e6 স্মুথ, সাইলেন্ট ও ব্যবহার করা সহজ। খোলা রাস্তায়, কম পাওয়ার ফিগার থাকা সত্ত্বেও e6 অনায়াসে সহজেই টপ-স্পিডে চলে যায়। লং ড্রাইভের জন্যও এই গাড়ি স্মুথ এক্সপিরিয়েন্স দেবে। দু-জন যাত্রী ও প্রচুর লাগেজ থাকা সত্ত্বেও 170 মিমি আনল্যাডেন গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স গাড়িতে কোনও সমস্যা করেনি।
BYD e6 electric MPV range: গাড়ির সবথেকে আকর্ষণের বিষয়, কোম্পানি দাবি করে গাড়ি এক চার্জে WLTC(শহরের রেঞ্জ 520km ও এটি WLTC (কম্বাইন্ড) রেঞ্জ 415km। যা রেঞ্জের দিক থেকে বর্তমানে দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া সেরা ইভি। বাস্তবে চালানোর সময় প্রায় কোম্পানির দাবি করা রেঞ্জ পেয়েছি আমরা। আপনি এই গাড়ি থেকে সহজেই 500 কিমি রেঞ্জ পেতে পারেন আপনি যদি 50কিমি ড্রাইভ করেন, তাহলে রেঞ্জ 50-এর কম হবে। আমরাও এসি চালু রেখে গাড়ি চালিয়েছি। এই গাড়ির কিছু বর্তমান মালিক মুম্বই-আহমেদাবাদ সহজেই ট্রাভেল করেন।
BYD e6 electric MPV Price: AC ও DC ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে এই গাড়ি। যেখানে একটি 7kW চার্জার একটি অপশন হিসাবে রাখা রয়েছে। বর্তমানে দিল্লি এনসিআর, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া, আমদাবাদ, কোচি ও চেন্নাইয়ের মতো শহরে বিক্রি হচ্ছে e6। এর এক্স-শোরুম প্রাইস 29.15 লক্ষ টাকা। e6 একটি 7-সিটার কনফিগারেশন মিস করে, যা এতে থাকা উচিত ছিল।এটি ইনোভার থেকে বেশি ব্যয়বহুল। তবে বাণিজ্যিক ইলেকট্রিক গাড়ি হিসাবে e6 বেশ ভাল অপশন হতে পারে। কারণ এর রানিং কস্ট 1.59 টাকা/কিমি। যা স্মুদ রাইডিংয়ের পাশাপাশি পারফরম্যান্স ও বিশাল কেবিন স্পেস দেয়। যা ফ্লিট, হোটেল চেইন ও বাণিজ্যিক অপারেটরদের জন্য আদর্শ।