Partha Chatterjee Update: কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ হোক, সংঘাত আবহে কল্যাণ-অপরূপাদের বার্তা পার্থর
Partha Chatterjee Update: সুর নরম করে কুণাল বলেন, ‘‘যিনি বা যাঁরা সংগঠন চালান, তাঁদের উপলব্ধি কখনও কখনও প্রকাশিত হয়ে পড়ে। তার সবটাই যে সংঘাতমূলক পরিবেশ, এমনটা ভাবার কারণ নেই।’’
কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের পর কলকাতা পুরভোটেও (KMC Election 2021) বিপুল জনসমর্থন পেয়েছে দল। কিন্তু দলের নেতারাই এখনও প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়িতে নেমেছেন। তা নিয়ে এ বার কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের (TMC) মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব যে ভাবে দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছেন এবং পরস্পরকে কটাক্ষ করে চলেছেন, তা বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন তিনি। এখন থেকে প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ, কোনও বিবৃতি দেবেন না বলে নির্দেশ দিলেন পার্থ।
করোনায় সমস্ত রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কর্মসূচি বন্ধ রাখার পক্ষে সওয়াল করায় দলের অন্দরেই বিরোধিতার মুখে পড়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক। প্রকাশ্যে তাঁকে কটাক্ষ করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। তা নিয়ে কুণাল ঘোষ থেকে অপরূপা পোদ্দার, একে একে বিঁধে চলেছেন কল্যাণকে। তার পাল্টা কল্যাণও বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন সংবাদমাধ্যমে।
সেই নিয়েই শুক্রবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দলীয় নেতৃত্বকে সাবধানবাণী শোনান পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘শুধু কল্যাণ নন, যে বা যাঁরা নেটমাধ্যমে এবং খবরের কাগজে বিবৃতি দিয়ে দল এবং দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার মতো কাজ করে চলেছেন, তাঁদের সকলকে বলছি, দল বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনও কাজ, কথা, বিবৃতি, অন্যকে কটূক্তি, কোনওটাই করা চলবে না। এ সব থেকে বিরত থাকতে হবে প্রত্যেককে। কোনও বক্তব্য থাকলে দলের অন্দরে বলুন। কিন্তু একটার পর একটা বিবৃতি দিয়ে যে ধরনের কাজ করে চলেছেন সহকর্মীরা, তা আজ থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হোক। কোথাও, কোনও বিবৃতি দেবেন না।’’
করোনা আবহে বকো চার কেন্দ্রে পুরভোট করানোর বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। বিরোধীরা যেখানে ভোট পিছনোর দাবি তুলছেন, সেখানে রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কার্যত পরস্পরের ঘাড়ে দায় ঠেলছে। এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি অভিষেক জানান, তিনি সমস্ত রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কর্মসূচি দু’মাস বন্ধ রাখার পক্ষপাতী। তবে এটা সম্পূর্ণ ভাবেই তাঁর ‘ব্যক্তিগত মতামত।’ অভিষেকের এই মন্তব্য নিয়েই টানা হ্যাঁচড়া শুরু হয়। কল্যাণ জানান, ভোট বন্ধ রাখার পক্ষে সওয়াল করায় বিজেপি-র সঙ্গে অভিষেকের সুর মিলে যাচ্ছে, যা দল এবং নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। কারণ বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যকে।
দলে উচ্চ পদে থেকে অভিষেক যদি প্রকাশ্যে ‘ব্যক্তিগত মতামত’ জানাতে পারেন, তাহলে তিনিও এ বার আর পিছু হটবেন না বলে জানিয়ে দেন কল্যাণ। সেই সঙ্গে যোগ করেন, সাংগঠনিক ভাবে কেউ উচ্চ পদে থাকতেই পারেন। কিন্তু মমতা ছাড়া কাউকে নেতা বলে মনে করেন না তিনি। কল্যাণের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন কুণাল, অপরূপারা। কল্যাণকে ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’ বলেও কটাক্ষ করেন অপরূপা। তাতেই সকলকে সতর্ক করতে এগিযে আসেন পার্থ।
এ দিকে, সুর নরম করতে দেখা গিয়েছে কুণালকেও। অভিষেককে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে সংঘাত পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করলে কুণাল বলেন, ‘‘সরকার বা প্রশাসনের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে, সেটা মেনেই চলতে হয়। কিন্তু নেতা সাধারণ মানুষের মনের কথা বলেন। সে ক্ষেত্রে যিনি বা যাঁরা সংগঠন চালান, তাঁদের উপলব্ধি কখনও কখনও প্রকাশিত হয়ে পড়ে। তার সবটাই যে সংঘাতমূলক পরিবেশ, এমনটা ভাবার কারণ নেই।’’