Durga Puja 2023: ৪০০ বছরের ঐতিহ্য, এক পক্ষকাল আগেই সূচনা হয়ে গেল দুর্গাপুর ফরিদপুরের রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজোর
Puja Norms: দশমীর দিন মায়ের ভোগে থাকে চ্যাং মাছ। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতেও হয় পাঁঠা বলি
মনোজ বন্দ্য়োপাধ্যায়, দুর্গাপুর : ঘণ্টা বেজে গেছে। উৎসবমুখী বাঙালিও কয়েকটা দিন পুজোর আনন্দে মেতে উঠতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই আবহেই পুজো শুরু হয়ে গেল পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Burdwan) সরপিতে রায়চৌধুরী বাড়ির মা দুর্গার। দুর্গাপুজো শুরু হতে এক পক্ষ কাল বাকি থাকলেও, রায়চৌধুরী বাড়ির মা দুর্গার পুজো (Durga Puja) শুরু হয় এই এক পক্ষ কাল আগেই। প্রায় ৪০০ বছর ধরে চলে আসছে এই প্রথা। জেলার বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম এই পুজো ।
দুর্গাপুজো শুরু হতে বাকি আর এক পক্ষকাল। আর এক পক্ষকাল আগেই বোধনের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর সূচনা হয়ে গেল দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের সরপি গ্রামে। ৪০০ বছর আগে দুর্গাপুজোর এক পক্ষকাল আগেই রাজা অর্জুন রায়চৌধুরীর হাত ধরে শুরু হয়েছিল রায়চৌধুরী পরিবারের দুর্গাপুজো। সেই রীতি মেনে আজও শুক্লপক্ষের কৃষ্ণ নবমী তিথিতেই হয় দেবীর বোধন। এক পক্ষকাল অর্থাৎ ১৫ দিন আগে থেকেই এলাকায় দুর্গাপুজোর আমেজ।
শোনা যায়, রাজা অর্জুন রায়চৌধুরি প্রথমে পাথরের তৈরি দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। পরে সন্তানদের মধ্যে ১০ আনা ও ৬ আনা ভাগে জমিদারি ভাগ করে দেন। পাশাপাশি একই জায়গায় দু'টি পুজো এখনও চলছে। রবিবার মায়ের বোধন হল। বোধনের পর থেকেই ঘট পুজো শুরু হয়। মায়ের মূর্তির সামনে এই ঘট দশমীর দিন পর্যন্ত পূজিত হয়।
আজ থেকেই মা-কে দেওয়া হবে অন্ন ভোগ। বোধনের দিন হয় পাঁঠাবলিও। সন্ধ্যায় হয় আরতি। আজ থেকেই ঘট পুজোর সঙ্গে হবে চণ্ডীপাঠ, দশমীর দিন পর্যন্ত জ্বলবে প্রদীপ। দশমীর দিন মায়ের ভোগে থাকে চ্যাং মাছ। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতেও হয় পাঁঠা বলি। রাজা না থাকলেও সেই রীতি আজও রয়ে গিয়েছে। বোধনের দিনে পরিবারের সকলেই একত্রিত হন। সকাল থেকেই নতুন জামা কাপড় পরে গ্রামের বাইরের পুকুর থেকে নিয়ে আসা হয় ঘটে করে জল। তারপর সেই ঘট মন্দিরে রেখে শুরু হয় পুজো। দশমীর দিন পর্যন্ত উৎসবের মেজাজ থাকে গ্রামবাসী।
এদিকে প্রথা মেনেই পুজো হয়ে আসছে দুর্গাপুর (Durgapur) ফরিদপুর ব্লকেরই ইছাপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমলৌকা গ্রামের ব্যানার্জি বাড়ির দুর্গার (Durga Puja)। এখানে মা দুর্গা পূজিত হন বৈষ্ণব মতে। তাই কোনও বলিদান প্রথা নেই। বর্তমানে ব্যানার্জি পরিবারে ৫৭ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁরাই পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রাচীনকালে এই মায়ের মন্দির ছিল তালপাতার ছাউনির। ১৬ বছর আগে ব্যানার্জি পরিবারের সদস্যরা মন্দিরের নতুন রূপ দেন। বর্তমান ব্যানার্জি পরিবারের সদস্য করুণাময় ব্যানার্জি জানান, আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে তাঁদের বংশের প্রাণপুরুষ রামযাদব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম শুরু করেন এই দুর্গাপুজোর।