KK Birthday: নিজের গানে বুঁদ রেখেছেন গোটা প্রজন্মকে, কে কে-র জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ
Late Singer KK's Birthday: জিঙ্গলের হাত ধরেই সঙ্গীত জগতে প্রবেশ। মাত্র চার বছরে সাড়ে তিন হাজার জিঙ্গল গেয়েছেন। ১৯৯৯ সালে বলিউডে পা। হম দিল দে চুকে সানাম ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ আসে।
কলকাতা: ইঁয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল... তাঁর সুরে, কণ্ঠে সত্যি মনে পড়ে যায় কত শত স্মৃতি। নাইনটিজ় কিডদের শৈশব থেকে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে তিনি জুড়ে আছেন। হয়ত থাকবেনও। একটা প্রজন্মের মুহূর্ত যাপনের প্লে লিস্টে রয়েছেন। তিনি কেকে। প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (Krishnakumar Kunnath)। ২৩ অগাস্ট তাঁর ৫৫ তম জন্মদিন।
ফিরে দেখা: না, চাইলেও আর পারবেন না নতুন কোনও গান শুনতে। পারবেন না আর কোনও কনসার্টে ছুটে যেতে। কিন্তু স্বল্প দিনের কেরিয়ারে কেকে সঙ্গীতপ্রেমীদের দিয়ে গিয়েছেন একের পর এক উপহার। তাঁর গানের মাধ্যমেই অনুরাগীদের সঙ্গী হয়েছেন। ১৯৬৮ সালে কেরলের ত্রিশূরে জন্ম হয় কেকে-র। বড় হয়ে ওঠা দিল্লিতে। কিন্তু ভাষা নিয়ে কোনও সীমাবদ্ধতা ছিল না। তাই কন্নড় বাদেও একাধিক ভাষায় গান গেয়েছেন। হিন্দি তো বটেই তার পাশাপাশি তামিল, তেলেগু, মারাঠি ভাষায় তাঁর গান মন ছুঁয়ে গিয়েছে। এই গানের মধ্যে সিংহভাগই সুপারহিট। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বিজ্ঞাপনের জন্য জিঙ্গল গেয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের সমর্থনে 'জোশ অব ইন্ডিয়া' গানটি গেয়েছিলেন। যা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সেসময়ে।
কীভাবে যাত্রা শুরু?
প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা তাঁর কোনওদিন ছিল না। লেড জেপলিন, মাইকেল জ্যাকসন, কিশোর কুমার এবং আর ডি বর্মনের মতো গুণিজনরাই ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণা। কেরিয়ার শুরু থেকেই যে সঙ্গীতশিল্পী হতে চেয়েছিলেন এমনটাও নয়। বরং একেবারে ভিন্ন মেরুর কাজ দিয়ে শুরু কর্মজীবন। কলেজ জীবন শেষে মার্কেটিং এগজিকিউটিভ হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৪ সালে দিল্লি থেকে চলে আসেন মুম্বইতে। নিজের গানের ডেমো রঞ্জিত বারোট, লুই ব্যাঙ্কস এবং লেসলে লুইসকে পাঠান। প্রত্যেকেরই পছন্দ হয় সেই গান। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
জিঙ্গলের হাত ধরেই সঙ্গীত জগতে প্রবেশ। মাত্র চার বছরে সাড়ে তিন হাজার জিঙ্গল গেয়েছেন। ১৯৯৯ সালে বলিউডে পা। হম দিল দে চুকে সানাম ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ আসে। ‘তড়প তড়প’ (Tadap Tadap) গানের মাধ্যমে তাঁর প্রথম প্লেব্যাকের সুযোগ আসে। আর সেই গানই পরে হয় সুপারহিট। ওই বছরই এক মিউজ়িক কোম্পানি নতুন শিল্পী খুঁজছে। পরিচিত নয়, বরং নতুন ধরনের গলায় গান শোনাতে চেয়েছিল তারা স্রোতাদের। সেখানে সুযোগ পেলেন কেকে। লেসলে লুইসের সঙ্গে যৌথভাবে কে কে-র অ্যালবাম পল রিলিজ করল। টাইটেল ট্র্যাক থেকে শুরু করে আপকি দুয়া, ইঁয়ারোর মতো গান মন ছুঁয়ে গেল শ্রোতাদের। কেকে ম্যাজিকে বুঁদ হতে শুরু করল নতুন প্রজন্ম। আর এই অ্যালবামের জন্য সেরা গায়কের পুরস্কার পেলেন কেকে।
গত বছর কলকাতায় নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও হয়নি শেষরক্ষা। তিলোত্তমার বুকেই হারিয়ে যান। ২৬ বছরের কেরিয়ারে বার বার মানুষকে সুরের বাঁধনে বেঁধেছেন, মুগ্ধ করেছেন কে কে। বলিউডের গান ছাড়াও, অনেক সিরিয়ালের গানও গেয়েছেন। অংশ নিয়েছেন MTV-র ‘কোক স্টুডিও’-তে। সাবরি ভাইদের গেয়েছেন কাওয়ালি। সেরা প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস, জি সিনে অ্যাওয়ার্ডস, পাঁচবার আইফা অ্যাওয়ার্ডস, তিনবার গিল্ড অ্যাওয়ার্ডস, একবার জিএমএ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherjee) 'শেরদিল' (Sher Dil)-এর গান 'ধুপ পানি বহেনে দে' (Dhop Paani Bahene De) সম্ভবত শেষ গাওয়া গান 'কে কে' (K K) ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের (Krishnakumar Kunnath)।
ব্যতিক্রমী কণ্ঠস্বরে বরাবর মন জয় করেছেন শ্রোতাদের। তা সে রোম্যান্টিক হোক বা স্যাড সং, কেকে-র কণ্ঠে যেন প্রাণ পেয়েছে গান। কেয়া মুঝে পেয়ার হ্যায়, দিল ইবাদত, আঁখো মে তেরি, জ়রা সা, জিন্দেগি দো পল কি, সচ কহে রহা হ্যায় , ইয়ারোঁ, অলভিদা, বিতে লমহের মতো গানে আজও বুঁদ সঙ্গীতপ্রেমীরা। প্রেমে-অপ্রেমে, বন্ধুত্বে, আনন্দে, উদযাপনে, ভালবাসা, ভাললাগায়, মন খারাপের দিনে, ব্যস্ত সকালে, অফিস ফেরত ভিড় বাসে.. শৈশব, কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে আরও অনেক দিন, অনেক মুহূর্তে থেকে যাবেন.. থাকতেই হবে... জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ।
আরও পড়ুন: Sunny Deol: 'গদর ২' ছবির বিপুল সাফল্যের আবহে 'বর্ডার ২' নিয়ে ভাবনা সানি দেওলের? উত্তর দিলেন অভিনেতা