Captain Anshuman Singh : 'কীর্তিচক্র নিয়ে গিয়েছেন স্ত্রী, সঙ্গে শেষ স্মৃতিগুলোও', সেনার এই নিয়মে বদল চান শহিদ অংশুমানের বাবা-মা
Captain Anshuman Singh Kirti Chakra : পদক নাকি ছুঁয়ে দেখতে পারেনি প্রয়াত ক্যাপ্টেনের বাবা। কীর্তি চক্র সঙ্গে নিয়ে নাকি শ্বশুরবাড়ি ছেড়েই চলে গিয়েছেন স্মৃতি, অভিযোগ বাবা-মায়ের ।
নয়াদিল্লি : ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং মরণোত্তর কীর্তি চক্র পেয়েছেন । রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে সেই সম্মান গ্রহণ করেছেন শহিদ - ক্যাপ্টেনের স্ত্রী স্মৃতি ও তাঁর মা। সেদিন স্মৃতির বৈধব্য সাজ ও স্মৃতিচারণ সারা দেশের চোখে জল এনে দিয়েছিল। ঠিক মৃত্যুর আগের দিন প্রয়াত ক্যাপ্টেনের সঙ্গে কী কথোপকথন হয়েছিল, সেই কথা বলতে গিয়ে গলা ভারী হয়ে এসেছিল স্ত্রী-র। সেই ফুটফুটে মেয়েটির কষ্টে মন ভার হয়ে গিয়েছিল আসমুদ্র হিমাচলের।
কিন্তু তারপর হঠাৎই একটি বিতর্ক সামনে আসে। একেবারেই পারিবারিক সম্পর্কের সমীকরণকে কেন্দ্র করে। শহিদ ক্যাপ্টেন আংশুমান সিংয়ের স্ত্রী ও মা একসঙ্গে কীর্তি চক্র পুরস্কার করলেও, সেই পদক নাকি ছুঁয়ে দেখতে পারেনি প্রয়াত ক্যাপ্টেনের বাবা। কীর্তি চক্র সঙ্গে নিয়ে নাকি শ্বশুরবাড়ি ছেড়েই চলে গিয়েছেন স্মৃতি, অভিযোগ বাবা-মায়ের ।
তাঁদের অভিযোগ অংশুমানের মৃত্যুর পর আর তাঁদের সঙ্গে থাকেননি স্মৃতি। বরং ছেলের সব জিনিস , যাবতীয় নথি নিয়ে তিনি তাঁর বাবা-মায়ের বাড়ি চলে গিয়েছেন। আর সেনাকর্মীর মৃত্যুর পর নির্ভরশীল হিসেবে যাবতীয় সহায়তা পাচ্ছেন স্মৃতিই, অংশুমানের বাবা-মা নন। এই নিয়ম নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। শহিদ অংশুমানের পরিবারের তরফে 'নেক্সট অফ কিন' পলিসি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সেনাকর্মীর মৃত্যুর পর কে-কে 'নির্ভরশীল' হিসেবে সহায়তা পাবেন, সেই নীতি সংক্রান্ত পরিবর্তনের দাবি তোলা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর NOK নিয়ম পরিবর্তনের দাবি করেছেন শহিদ অংশুমানের মা-বাবা।
NOK এর ফুল ফর্ম হল 'Next of Kin'। এই নীতি নির্ধারণ করে সেনাকর্মীর মৃত্যু হলে কারা নির্ভরশীল হিসেবে সহায়তাগুলি পাবেন। শহিদ সৈনিকদের নির্ভরশীলরা সরকারের কাছ থেকে বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা পান। অর্থ, পেনশন ও অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি পেয়ে থাকেন সেই 'Next of Kin'। এর অর্থ তাঁর পর, তাঁর পরিবারের লোকজন। যে কোনও চাকরি বা লাইফ ইনসিওরেন্স পলিসির ক্ষেত্রেও, সেই ব্যক্তি কাউকে নমিনি করেন। তাঁকেই বৈধ উত্তরাধিকারী হিসেবে ধরা হয়। এর মানে হল যে চাকরিতে থাকা একজন ব্যক্তির কিছু হলে, তাঁর অবর্তমানে যা যা প্রাপ্য তা 'Next of Kin'কেই দেওয়া হয়।
যখন কেউ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন, তখন তার বাবা - মা বা অভিভাবকের নাম NOK হিসাবে রেকর্ড করা হয়। তারপর তাঁর বিয়ে হলে, সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী, কর্মীর স্বামী বা স্ত্রীর নাম থাকে NOK হিসাবে। সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর এনওকে পরবর্তী সুবিধেগুলি পেয়ে থাকেন। ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের বাবা-মা এই নিয়মের মানদণ্ড পরিবর্তনের দাবি করেছেন। একজন বিবাহিত সেনার মৃত্যুর পর, তার বীমা এবং পেনশনের কমপক্ষে 67 শতাংশ তার NOK অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীর পান । বাকি ৩৩ শতাংশের জন্য, ব্যক্তি তার বিবেচনা অনুযায়ী অন্য কাউকে 'মনোনীত' করতে পারেন। একজন ব্যক্তি ইচ্ছা করলে তার স্ত্রীকে ৬৭ শতাংশের বেশি উত্তরাধিকারী করতে পারেন, তবে এর থেকে কম নয়। অবিবাহিত সৈনিকদের দেওয়া মরণোত্তর সম্মান (পদক) তাদের পিতামাতার কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিবাহিত সৈনিকদের ক্ষেত্রে, সম্মানী স্ত্রীকে বরাদ্দ করা হয়। তবে, অভিভাবকদেরও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যা হয়েছে শহিদ অংশুমানের ক্ষেত্রে।
এখন যেহেতু স্মৃতি অংশুমানের শেষ স্মৃতিটুকু নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন, তাই সেনা বাহিনীর এই নিয়মে পরিবর্তন চান তাঁর বাবা-মা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে