Mahua Moitra: প্রথম বৈঠকেই কোন্দলের ইঙ্গিত, নদিয়ায় বড় চ্যালেঞ্জ মহুয়ার সামনে
Nadia News: টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে বিদ্ধ মহুয়া।
প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: টাকার বিনিময়ে সংসদে আদানিদের নিয়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে সাংসদপদ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে সংসদের নীতি কমিটি। সেই আবহেই কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। দায়িত্ব পাওয়ার পর রবিবার প্রথম বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকেও বয়ে গেল কোন্দলের চোরাস্রোত। মহুয়ার প্রশংসা করলেও, নাম না করে আগের জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ-কে তীব্র কটাক্ষ করলেন তেহট্টের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক তাপস সাহা। যদিও বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি কল্লোল খাঁ। (Nadia News)
টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে বিদ্ধ মহুয়া। সেই নিয়ে যখন জাতীয় রাজনীতি তোলপাড়, মহুয়ার পাশে দাঁড়ালেন তাপস। তাঁর বক্তব্য, "পঞ্চায়েত নির্বাচনে তোলাবাজি হয়েছে। সেই সমস্ত নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক মানুষদের দায়িত্ব দিয়েছেন।" মহুয়ার প্রতি আস্থা প্রকাশ করলেও, নাম না করেই কল্লোলকে কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "মুক্ত পরিবেশ ফিরে পেলাম আমরা। এর আগে আমাদের স্বাধীনতা ছিল না।"
তেহট্টের বিধায়ক তাপসের এই মন্তব্যের পরই অন্তর্ঘাতের জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের আড়ালে কি বইছে অন্তর্দলীয় কোন্দলের চোরাস্রোত? যদিও সেই নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ কল্লোল। তাঁর বক্তব্য, "তোলাবাজির কথা কখনও শুনিনি আমি। নদিয়া জেলার দীর্ঘদিনের কর্মী হিসেবে সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া, সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে স্বাগত জানাই।"
মহুয়াও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, "আমাদের প্রথম বৈঠক ছিল। সব ব্লক প্রেসিডেন্ট, আমাদের জেলা নেতৃত্ব এবং বিধায়কদের নিয়ে প্রথম বার বৈঠকে বসা। আজ বিশ্বকাপের ফাইনাল ছিল, ছটপুজোও। তাই দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক হয়নি।" তবে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না কালীগঞ্জের বিধায়ক তথা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদ। এ নিয়ে বিজেপি যদিও কটাক্ষ ছুড়ে নিয়েছে।
বাংলায় যে সমস্ত জেলায় বিজেপি সাংগঠনিকভাবে বলীয়ান, তার মধ্যে অন্যতম নদিয়া। ২০১৯-এ নদিয়ার ২টি লোকসভার মধ্যে রানাঘাট আসনটি যায় বিজেপি-র দখলে। ব্যবধান ছিল ২ লক্ষ ৩৩ হাজারের বেশি। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া। তবে বিজেপি-র প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল ৬৩ হাজার ২১৮। কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তর, দক্ষিণ এবং তেহট্ট, এই তিনটি বিধানসভাতেও তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে এগিয়েছিল বিজেপি-ই।
স্বাভাবিকভাবেই, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিতর্কের মধ্যেই, লোকসভা ভোটের আগে, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রীর মতো গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহুয়াকে। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা তিনি কী করে করেন, সেদিকে তাকিয়ে মহুয়ার অনুরাগীরা।