SpaceX Falcon 9 Rocket: ভুল কক্ষপথে ঢুকে ঝুলছে, পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে চলেছে ২০ স্যাটেলাইট, তদন্তের মুখে মাস্কের সংস্থা
Science News: বৃহস্পতিবার রাতে ক্যালিফোর্নিয়ার Vandenberg Space Force Centre থেকে Falcon 9 রকেটটির উৎক্ষেপণ হয়।
নয়াদিল্লি: একসঙ্গে ২০টি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে বিপত্তি। আইনি জটিলতার মুখেও পড়তে হতে পারে ইলন মাস্কের সংস্থা SpaceX-কে। কারণ মহাকাশে কার্যত অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে তাদের Falcon 9 রকেটটি। কৃত্রিম উপগ্রহগুলিকে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিতে পারেনি রকেটটি। ফলে পৃথিবীর উপর কার্যত ঝুলে রয়েছে মাস্কের সংস্থারই ২০টি কৃত্রিম Starlink উপগ্রহ (Starlink Satellites)। সেগুলি পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। (SpaceX Falcon 9 Rocket)
বৃহস্পতিবার রাতে ক্যালিফোর্নিয়ার Vandenberg Space Force Centre থেকে Falcon 9 রকেটটির উৎক্ষেপণ হয়। এই রকেট অনেকাংশে পুনর্ব্যবহারযোগ্য। মহাকাশে মানুষ বয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম যেমন, তেমনই ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় কৃত্রিম উপগ্রহ বয়ে নিয়ে যেতে পারে। গত ন'বছরে ৩৫০-র বেশি বার মহাকাশে সফল যাত্রা করেছে এই Falcon 9 রকেট। কিন্তু সেই রকেটকে ঘিরেই বিপত্তি দেখা দিয়েছে। (Science News)
মোট দু'টি ধাপে এই রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রথম ধাপে নয়টি মার্লিন ইঞ্জিন, অ্যালুমিনিয়াম-লিথিয়াম অ্যালয় ট্যাঙ্কে থাকা তরল অক্সিজেন এবং কেরোসিন প্রোপেল্যান্টের সাহায্যে রকেটে স্টার্ট দেওয়া হয়। মাটি ছাড়ার পর, দ্বিতীয় ধাপে একটি মার্লিন ইঞ্জিনকে ব্যবহার করা হয়। প্রথম ধাপে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, সেটি আবার পৃথিবীর বায়ুণ্ডলে ফিরে আসে।
Watch Falcon 9 launch 20 @Starlink satellites to orbit from California, including 13 with Direct to Cell capabilities https://t.co/aXuY7ZXXrO
— SpaceX (@SpaceX) July 12, 2024
বৃহস্পতিবার উৎক্ষেপণের আধ ঘণ্টার মধ্যেই Falcon 9 রকেটটিতে সমস্যা দেখা দেয়। দ্বিতীয় ধাপে যখন মার্লিন ইঞ্জিনটি ব্যবহার করতে যায় SpaceX, সেই সময় তরল অক্সিজেন চুঁইয়ে পড়তে শুরু করে। ফলে দ্বিতীয় ধারে ইঞ্জিনের পূর্ণশক্তি ব্যবহার করা যায়নি, যা সঠিক কক্ষপথে নিয়ে রকেটটিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পৌঁছে ছিল। তা সত্ত্বেও যদিও কৃত্রিম উপগ্রহগুলিকে মহাকাশে মুক্ত করে দেয় রকেটটি। কিন্তু বৃত্তাকারে কক্ষপথ পরিক্রমণ সম্পূর্ণ করতে পারেনি Falcon 9 রকেটটি।
এর ফলে পৃথিবী থেকে অতি সামান্য উচ্চতায়, মাত্র ১৩৫ কিলোমিটার উঁচুতে কৃত্রিম উপগ্রহগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। ফলে যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তার অর্ধেকের কম উচ্চতায় এই মুহূর্তে কার্যত ঝুলছে কৃত্রিম উপগ্রহগুলি। কৃত্রিম উপগ্রহগুলির বেঁচে থাকার কোনও সম্ভাবনা নেই। যে কোনও মুহূর্তে আছড়ে পড়বে সেগুলি। এতে জনজীবনের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই, বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেই সেগুলি পুড়ে ছাই হয়ে যাবে বলে যদিও জানিয়েছে SpaceX, কিন্তু আমেরিকার Federal Aviation Administration-র তরফে Falcon 9 রকেটের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে।
আমেরিকার Federal Aviation Administration জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে তারা। সেই তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে, সেই মতো সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত রকেটটির উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এতে কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
মহাকাশ গবেষণার বাণিজ্যিকরণ হওয়ার পর আমেরিকায় SpaceX-ই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বেসরকারি সংস্থা। বৃহস্পতিবার রকেট উৎক্ষেপণের পর যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাতে বিপাকে পড়েছে তারা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৩৬৪টি Falcon 9 রকেট উৎক্ষেপণে সফল হয়েছে তারা। ফলে তাদের সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। সরকারকে তদন্তের কাজে পূর্ণ সহযোগিতা করবে তারা, ভবিষ্যৎ অভিযানের কথা মাথায় রেখে সেই মতো পদক্ষেপও করবে।
তবে মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগে SpaceX-এর বিরুদ্ধে আগেও আঙুল উঠেছে। পরিবেশের ক্ষতি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এর আগে, তাদের Dragon Trunk-এর একটি অংশ পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে, তাতে যদিও মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। মহাকাশে আবর্জনা বৃদ্ধি নিয়েও বার বার প্রশ্নে মুখে রড়েছে মাস্কের সংস্থা। সেই নিয়ে NASA-র সঙ্গে মহাকাশকে আবর্জনামুক্ত করার কাজেও হাত দিয়েছে তারা। কিন্তু কবে সেই কাজ শুরু হবে, কবে শেষ হবে, তা নিয়ে কোনও সময়সীমার উল্লেখ মেলেনি। সেই আবহেই ফের বিপাকে SpaceX.