IPL Best XI: ওপেনিংয়ে বাটলার-ঋদ্ধি, কেকেআর থেকে সুযোগ রাসেলের, আইপিএলের সেরা একাদশ বেছে নিল এবিপি লাইভ
IPL 2022: আইপিএল শেষ হওয়ার পরের দিনই এবিপি লাইভ বেছে নিল টুর্নামেন্টের সেরা একাদশ। সেখানে শুধু পরিসংখ্যান নয়, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া পারফরম্যান্সকেও।
কলকাতা: শেষ হল পনেরোতম আইপিএল (IPL)। প্রথমবার খেলতে নেমেই ট্রফি জিতে নিল হার্দিক পাণ্ড্যর (Hardik Pandya) নেতৃত্বাধীন গুজরাত টাইটান্স। প্রথমবার আইপিএল খেলতে নেমে সকলের প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছে লখনউ সুপারজায়ান্টসও। অন্যদিকে, ফাইনালে হেরে গেলেও রাজস্থান রয়্যালসের খেলা সকলকে আনন্দ দিয়েছে। বিরাট কোহলির নিষ্প্রভ থাকার আইপিএলেও প্লে অফে উঠেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। তবে এবারও তাদের ট্রফির খরা কাটেনি। আইপিএলে এখনও মুকুটহীন আরসিবি।
আইপিএল শেষ হওয়ার পরের দিনই এবিপি লাইভ বেছে নিল টুর্নামেন্টের সেরা একাদশ। সেখানে শুধু পরিসংখ্যান নয়, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া পারফরম্যান্সকেও।
১০ দলের টুর্নামেন্ট থেকে মাত্র এগারোজন ক্রিকেটারকে বেছে নেওয়া সহজ কাজ নয়। বরং অনেকের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। অনেকের বাদ পড়া নিয়ে হইচই হতে পারে। বিতর্ক থাকুক। ইতিবাচক আলোচনা চলতে থাকুক। আপনাদের মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি যে এগারোজনকে বেছে নিচ্ছে এবিপি লাইভ, এবারের আইপিএলে তাঁদের হাইলাইটসও তুলে ধরা হল। ক্রিকেটাড্ডার সুবিধার্থে।
ওপেনার:
জস বাটলার: আইপিএলের ইতিহাসে অরেঞ্জ ক্যাপের লড়াইকে এতটা একপেশে কেউ করে তোলেননি। ১৭ ম্যাচে ৮৬৩ রান। চারটি সেঞ্চুরি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে প্রায় আড়াইশো রানে এগিয়ে রয়েছেন। ইংরেজ ব্যাটার একার হাতে প্রতিপক্ষ বোলিংকে খুন করতে পারেন। রাজস্থান রয়্যালসকে ফাইনালে তোলার কাণ্ডারি।
ঋদ্ধিমান সাহা: এই দলের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজে ওপেনার হিসাবে খেলতে পছন্দ করেন। এবারের আইপিএলে গুজরাতের হয়ে ওপেন করে সফল। ১১ ম্যাচে ৩১৭ রান। পাওয়ার প্লে-তে ফিল্ডিংয়ের বিধিনিষেধ কাজে লাগাতে সিদ্ধহস্ত।
মিডল অর্ডার:
কে এল রাহুল: এবারের আইপিএলে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন কে এল রাহুল। ১৫ ম্যাচে ৬১৬ রান। দুটি সেঞ্চুরি। দলে অটোমেটিক চয়েস রাহুল। তবে লখনউয়ের হয়ে তিনি ওপেন করলেও, আইপিএলের সেরা একাদশে তিনি খেলবেন তিন নম্বরে। যাতে শুরুতে উইকেট পড়ে গেলে তিনি ইনিংস গড়ার কাজ করতে পারেন। পাশাপাশি আগ্রাসী ব্যাটিংও করার মতো ওভার হাতে পান।
হার্দিক পাণ্ড্য (অলরাউন্ডার): ১৫ ম্যাচে ৪৮৭ রান, বল হাতে ৮ উইকেট। অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য এবারের গুজরাত টাইটান্সের সাফল্যের নেপথ্যে অন্যতম কারিগর। বিগহিটার। স্কোরবোর্ড সচল রাখবেন। ক্রিজে জমে গেলে বড় শট খেলে দলকে বিরাট স্কোরে পৌঁছে দেবেন।
ডেভিড মিলার: গুজরাত টাইটান্সের মিডল অর্ডারের অন্যতম প্রধান অস্ত্র। ১৪৩ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেটে ৪৮১ রান করেছেন। যে কোনও বলকে মাঠের বাইরে ওড়াতে পারেন।
আন্দ্রে রাসেল (অলরাউন্ডার): কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যর্থতার মরসুমে একমাত্র সোনালি রেখা আঅন্দ্রে রাসেলের ফর্ম। ১৪ ম্য়াচে প্রায় ১৭৫ স্ট্রাইক রেটে ৩৩৫ রান। রাসেল ক্রিজে থাকা মানে প্রতিপক্ষ শিবিরে কাঁপুনি থাকবেই। সঙ্গে মিডিয়াম পেস করে ১৭টি উইকেটও নিয়েছেন। ব্যাট করবেন ছ'নম্বরে।
রজত পাতিদার: ইডেনে লখনউ সুপারজায়ান্টসের বিরুদ্ধে দুরন্ত সেঞ্চুরি। মাত্র ৮ ম্যাচে করেছেন ৩৩৩ রান। ব্যাটিং গড় ৫৫-র বেশি। স্ট্রাইক রেট ১৫২.৭৫। ডেথ ওভারে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। পেস ও স্পিন, দুইয়ের বিরুদ্ধেই সাবলীল।
স্পিনার:
আর অশ্বিন: রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ১৭ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছেন। ওভার প্রতি রান খরচ করেছেন মাত্র ৭.৫ রান। অশ্বিনের সুবিধা হল, ব্যাটের হাতও ভাল। দল প্রথমে ব্যাট করলে অশ্বিন নামবেন সাত নম্বরে। তবে রান তাড়া করতে হলে অশ্বিনের আগে ব্য়াট করবেন রশিদ খান।
রশিদ খান: গুজরাতের হয়ে ১৭ ম্যাচে ১৯ উইকেট। কৃপণ বোলিং করেন। পাশাপাশি ব্যাটের হাতও দুর্দান্ত। অবিশ্বাস্য সমস্ত শট খেলে ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারেন। স্ট্রাইক রেট ২০৬.৮১। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রশিদ যে কোনও দলের সম্পদ।
পেসার:
মহম্মদ শামি: আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়েছেন। ওভার প্রতি মাত্র ৮ রান করে খরচ করেছেন। স্লগ ওভারে অবিশ্বাস্য সমস্ত স্পেল করেছেন। বেশিরভাগ উইকেটই ডেথ ওভারে। দুদিকে বল স্যুইং করিয়ে ব্য়াটারদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন।
হর্ষল পটেল: আইপিএলে ১৫ ম্য়াচে ১৯ উইকেট। ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট। ওয়াইড ইয়র্কার, স্লোয়ার ডেলিভারিতে ব্যাটারদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলতে পারেন।
দ্বাদশ ক্রিকেটার
উমরন মালিক: ১৪ ম্যাচে ২২ উইকেট। এবারের আইপিএলের অন্যতম সেরা চমক। বলের গতি ব্যাটারদের রাতের ঘুম কাড়তে পারে। লাইন-লেংথে নিয়ন্ত্রণ বাড়লে যে কোনও অধিনায়কের ভরসা।
যুজবেন্দ্র চাহাল দুরন্ত ছন্দে থাকলেও, ব্যাটের হাতের জন্য রশিদ খান অনেক এগিয়ে। দলে একজনই লেগস্পিনার নেওয়া হবে বলে জায়গা পেয়েছেন রশিদ। পাশাপাশি একজন অফস্পিনার রাখা হবে বলে কুলদীপ যাদবকে না নিয়ে রাখা হয়েছে অশ্বিনকে। চার বিদেশি খেলানো যাবে বলে বাটলার, মিলার, রাসেল ও রশিদ। নাহলে কাগিসো রাবাডা, জস হ্যাজলউড বা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাদের কথা ভাবাই যেত। ভরসা রাখা হয়েছে ভারতীয় পেসারদের ওপর। দলের অধিনায়ক হবেন চ্যাম্পিয়ন দলের নেতা হার্দিকই।