WBCS Exam Preparation: অঙ্ক মানেই কি ভয়? WBCS মেনসে কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি?
ABP Live Exclusive: অঙ্ক (Mathematics) শুনলেই অনেকেরই ভয় লাগে। কঠিন বলে মনে হয়। আবার কারোর কাছে বেশ স্কোরিং একটা বিষয়। WBCS Mains পরীক্ষায় অঙ্কের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন? কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন ভয়?
কলকাতা: সরকারি চাকরি বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এমন কিছু বিষয় থাকে যার সঙ্গে পরিচয় ঘটে একেবারে প্রস্তুতি পর্বে। এর পাশাপাশি এমন কিছু বিষয় থাকে যা আমাদের স্কুল স্তর থেকেই পড়তে হয়। অঙ্ক (Mathematics) শুনলেই অনেকেরই ভয় লাগে। কঠিন বলে মনে হয়। অঙ্ক আবার কারোর কাছে বেশ স্কোরিং একটা বিষয়। WBCS Mains পরীক্ষায় অঙ্কের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন? কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন ভয়? এই সব নিয়েই আলোচনা করলেন WBCS অফিসার শুভদীপ দে সরকার (Subhadip Dey Sarkar)। যিনি বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) তমলুক (Tamluk) মহকুমায় রেভিনিউ অফিসার (Revenue Officer) হিসেবে কর্মরত।
এবিপি লাইভ: WBCS মেনসের সিলেবাসে অঙ্কের কোন কোন অংশ রয়েছে?
শুভদীপ দে সরকার: WBCS Mains পরীক্ষায় প্রস্তুতি অনেকেই ভয় পান। বিশেষত যাঁদের আর্টসের ছাত্রছাত্রী। এই ভয় পাওয়ার কোনও কারণই নেই। বর্তমানে সিলেবাসে যা রয়েছে সবই মাধ্যমিক পর্যায়ে বা এলিমেন্টারি লেভেলের অঙ্ক। যেটা সবাই নবম-দশম শ্রেণিতে করে এসেছে। সেই অঙ্কই থাকে। যাঁদের এমএসসি, বিটেক, বা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে অঙ্ক ছিল তাঁরা প্রত্যেকেই এই অঙ্ক স্কুল স্তরেই করে এসেছেন। যেমন রেশিও প্রোপোরশন, টাইম এন্ড ডিসটেন্স এই সবই মাধ্যমিকে পেয়েছি। অঙ্ক মানেই ছোটবেলা থেকেই একটা ভয় কাজ করে যে কেমন নম্বর পাব? আবার অনেকেই জানতে চান ছাত্রছাত্রীদের কাছে অঙ্কে নম্বর কত? WBCS অঙ্ক কঠিন একেবারেই নয়। এখানে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির অঙ্ক নেই। ক্যালকুলাস, ডিফারেনশিয়াল, ইন্টিগ্রেশন এরকম অংশ থাকে না।
এবিপি লাইভ: অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষার থেকে রিজিওনিং কতটা আলাদা? কী প্রস্তুতি দরকার?
শুভদীপ দে সরকার: আর্টস ব্যাকগ্রাউন্ডের পড়ুয়া এবং টেকনিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ডের পড়ুয়াদের মধ্যে রিজিওনিং-এর দক্ষতা আলাদা হতেই পারে। কিন্তু বিষয়টা চর্চার মাধ্যমে স্কিল ডেভলপমেন্ট সম্ভব। দিনে রিজওনিং এর জন্য এক ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা উচিত। আমার নিজের ফর্মুলা ছিল একটা নির্দিষ্ট টপিক বেছে নেওয়া। এরপর বিভিন্ন ধরন সমাধান করা। নিয়মিত এটা করলে রিজওনিং নিয়ে সমস্যা বা জড়তা কাটানো সম্ভব হবে।
এবিপি লাইভ: জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতির মতো অংশ WBCS-এ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
শুভদীপ দে সরকার: সাম্প্রতিক কালে দেখা গিয়েছে WBCS এর সিলেবাস ডায়নামিক হতে শুরু করেছে। নিউমেরিক্যাল এবিলিটি বেস করে যেসব অঙ্ক রয়েছে সেসব অঙ্ক কিন্তু কম আসছে। তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ অ্যানালেটিক্যাল প্রশ্ন। দেখা গিয়েছে ইউপিএসসি প্যাটার্নে প্রশ্ন আসছে। ক্যালেন্ডার, সিলোজিসম, ভেনডায়াগ্রাম রিলেটেড প্রশ্ন আসছে। তবে ত্রিকোণমিতি নিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কোনও কারণ নেই। অনেক সমাধান করা প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র চর্চা করা যায়। যেমন সিজিএলের এসএসসি লেভেলের সি-স্যাটের পেপার আছে । ওই পেপার সমাধান করা যায়।
এবিপি লাইভ: অ্যারিথমেটিক অংশের জন্য কি কোনও বিশেষ স্ট্র্যাটেজি দরকার?
শুভদীপ দে সরকার: প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও বিষয়ে দক্ষতা এবং দুর্বলতা থাকে। আমার মনে হয় বিটেক, এমএসসি বা বিএসসি ব্যাকগ্রাউন্ড যাঁদের তাঁদের কিছু দক্ষতাও রয়েছে। পাশাপাশি আবার দুর্বলতাও রয়েছে। একই জিনিস প্রযোজ্য আর্টসের ছাত্রছাত্রীদের জন্য। অনেকেই শুধু চিন্তা করে অঙ্ক ভুল করে ফেলে। যা জানা জিনিস পারে না। আমি বলব অঙ্কের জন্য বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। অনেকেরই ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটবেলা অঙ্কে ভাল ছিলেন না কিন্তু WBCS-এর প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বিচার, বুদ্ধি , বিবেচনা দিয়ে অঙ্ক অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। WBCS পরীক্ষায় প্রস্তুতির আগে ষষ্ঠ, সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির অঙ্ক সমাধান করা যায়। তাতে পুরনো জিনিস মনে পড়ে যাবে। অনেকেরই মনে হয় WBCS-এর অঙ্ক কঠিন। কঠিন নয়, অন্যান্য বিষয়ের মতোই ধরনটা বুঝে করতে হবে।
এবিপি লাইভ: সারাদিনে অঙ্কের জন্য ঠিক কতক্ষণ সময় বরাদ্দ করতে হবে?
শুভদীপ দে সরকার: অন্যান্য বিষয়ের মতো অঙ্ককে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ইতিহাস, ভূগোল, পলিটির মতো একেবারে নিয়ম মেনে অঙ্কটাও করতে হবে। অনেকেরই এরকম ধারণা থাকে যে সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড বলে অঙ্ক কম চর্চা করলেও হবে। কিন্তু সেই ভাবনা একেবারেই ভুল। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি অঙ্ক এবং রিজিওনিং-কে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অন্যান্য বিষয়ে পড়ুয়ারা কিন্তু একই জায়গায় থাকে। তফাৎটা করে অঙ্ক। এটাই কিন্তু সাফল্যের হাতিয়ার। যত বেশি এখানে নম্বর পাওয়া যাবে তত সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি।
এবিপি লাইভ: MCQ সমাধানে চটজলদি উপায় কী?
শুভদীপ দে সরকার: অঙ্ক করার সময় তার কোনও শর্টকাট মেথড হয় না। তবে পরীক্ষার হলে সময় বাঁচানোটা একটা বড় চ্য়ালেঞ্জ। MCQতে চারটে অপশন থাকে। এই চারটে অপশনের মধ্যে যে কোনও একটা অবশ্যই হবে। আমি যেটা করতাম সেটা হচ্ছে ব্যাক ক্যালকুলেশন করে সমাধান করার চেষ্টা করতাম। ফলে করতে করতে একটা অপশন যদি পেয়ে যাই তবে ওখানে সময়টাও বাঁচে।
এবিপি লাইভ: স্নাতক স্তরে অঙ্ক থাকা বা না থাকার কি কোনও ফ্যাক্টর হতে পারে?
শুভদীপ দে সরকার: যাঁদের অঙ্ক ছিল না তাঁরা পিছিয়ে আছে এটা আমি মনে করি না। অবশ্যই যাঁদের অঙ্ক স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ছিল তাঁদের ক্ষেত্রে একটা অতিরিক্ত সুবিধা। যাঁরা আর্টসের ছাত্র তাঁদের ভেঙে পড়ার কোনও কারণ নেই। কারণ WBCS –এ আর্টসের বিষয়ও আছে। তবে যাঁরা অঙ্কে দুর্বল তাঁদের কাছে একশো নম্বর আশা করাটা কঠিন। তাঁরা ৮০ টার্গেট করে এগোতে পারে। বাকি ২০ যে ঘাটতি রয়েছে সেটা অন্য বিষয় দিয়ে মিটিয়ে দেওয়া সম্ভব।
এবিপি লাইভ: অঙ্কের সিলেবাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পার্মুটেশন- কম্বিনেশন, ডব্লিউবিসিএস এর অঙ্কের প্রস্তুতিতে কোন পার্মুটেশন ধরে এগোনো উচিত?
শুভদীপ দে সরকার: স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে সারা বছর না পড়েও পরীক্ষার দুমাস আগে পড়ে পাস করা সম্ভব। কিন্তু WBCS এর ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়। সারা বছরই লেখাপড়া করতে হবে। পার্মুটেশন রিলেটেড অঙ্ক বর্তমানে সংখ্যায় কম।
এবিপি লাইভ: মাধ্যমিক স্তরের অঙ্ক কি সমাধান করা যেতে পারে?
শুভদীপ দে সরকার: ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডে যেসব অঙ্ক করে এসেছি সেই সব অঙ্কই সমাধান করলে ভাল নম্বর পাওয়া যায় WBCS –এ। সিলেবাস অনুযায়ী কোনও কিছু বাদ দেওয়ার জায়গা নেই। রেশিও প্রোপরশন, টাইম এন্ড ডিসটেন্স রিলেটেড প্রশ্ন বেশি আসে। আগের বছর কোনও প্রশ্ন এসেছে বলে সেটা এই বছর বাদ দিলাম, এটা করলে খুল ভুল কাজ হবে।
এবিপি লাইভ: ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোনও সাজেশন দিতে চাইবেন?
শুভদীপ দে সরকার: প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই একই জিনিস প্রযোজ্য দক্ষতা এবং দুর্বলতার জায়গা বুঝে পড়তে হবে। আমি নিজে ইতিহাস, ভূগোলে বেশি ভাল ছিলাম। ফলে চেষ্টা করেছি সেখান থেকে বেশি নম্বর তুলতে। যাঁরা অঙ্কে দুর্বল তাঁরা ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পর্যন্ত অঙ্ক সমাধান করা এখন থেকেই শুরু করতে পারে। ছোটবেলায় স্কুল স্তরে যে অঙ্ক ভয়ের কারণ ছিল সেটা কিন্তু এখন সহজ হবে। দিনে অন্তত এক ঘণ্টা প্রত্যেকটা টপিক সমাধান করা শুরু করলে উপকৃত হবেন পরীক্ষার্থীরা।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI