(Source: Poll of Polls)
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাতেও থামেনি লড়াই, এক পা নিয়েই বাড়ি বাড়ি ঘুরে করোনার নমুনা সংগ্রহ করেন শামিমা
ছোট থেকেই, একটা পা নেই। কৃত্রিম পায়ের ওপরই ভরসা। তাতে জীবন থমকে যায়নি। করোনা আবহে, স্কুটারে চেপে চষে বেরিয়েছেন কলকাতা।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: এক একদিনে, ৩০ থেকে ৪০ জনের করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। স্কুটারে চেপে ছুটে বেড়িয়েছেন শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। করোনার হাত থেকে রেহাই পাননি নিজেও। তবু এক পা নিয়েই করোনাকে হারিয়ে জীবন-যুদ্ধে লড়ছেন এই নারী।
এমন উদাহরণ আছে আরও। মাসুদুর রহমান বৈদ্য, ছোটবেলায় একটি দুর্ঘটনায় তাঁর দুটি পা-ই বাদ যায়। তিনিই এশিয়ার প্রথম বিশেষভাবে সক্ষম সাঁতারু, যিনি ইংলিশ চ্যানেল পার করেছেন। পার করেছেন জিব্রালটার প্রণালীও। রয়েছেন ব্রেন্না হাকাবি, তিনি এক পায়ে ভর করে, ২০১৮ সালে শীতকালীন প্যারালিম্পিকে স্নো বোর্ড ও ব্যাঙ্কড স্যালোম বিভাগে সোনা জেতেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যে জীবন-যুদ্ধে কখনও বাধা হতে পারে না, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন এঁরা। আর এই তালিকাতেই নয়া সংযোজন শামিমা ঘোষ।
একপায়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন শামিমা ঘোষ। বাড়ি বেলেঘাটার সরকার বাগানে। একটি বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে স্যাম্পল কালেকশনের কাজ করেন। ১৪ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। ছোট থেকেই, একটা পা নেই। কৃত্রিম পায়ের ওপরই ভরসা। তাতে জীবন থমকে যায়নি। করোনা আবহে, স্কুটিতে চেপে চষে বেরিয়েছেন কলকাতা।
পায়ের সমস্যার জন্য, স্কুটারে এক্সট্রা দুটো চাকা লাগানো। তাতে চেপেই, এক এক দিন ৩০-৪০ জনের সোয়াব কালেক্ট করেছেন। শারীরিক প্রতিকূলতার জন্য পিপিই পরতে পারেন না। করোনা থেকে বাঁচতে সম্বল শুধু অ্যাপ্রন, ফেস শিল্ড, গ্লাভস, মাস্ক। তা দিয়েই চলে রোজনামচা। কিন্তু, মারণ ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাননি তিনিও। এ বছরের ২৯ এপ্রিল ধুম জ্বর আসে। ৫ তারিখ করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। প্রথম কয়েকদিন বাড়িতেই ছিলেন অক্সিজেন সাপোর্টে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভর্তি করা হয় বেলেঘাটা আইডিতে।
প্রায় ২০দিন ছিলেন। এরপর বাড়ি ফিরে এক মাস বিশ্রামে থাকতে হয়। কিন্তু, কাজ ছেড়ে বেশিদিন থাকতে পারেননি শামিমা। করোনা যোদ্ধা শামিমা ঘোষ বলছেন, 'করোনাতে যখন কিছু হয়নি, অন্য কিছুতে ভয় পাই না। নকল পায়ের কথা মনেই থাকে না। বাড়িতে দমবন্ধ হয়ে আসে। প্রত্যেকদিন করোনার সময় ৩০-৪০টা স্যাম্পল কালেক্ট করেছি। অর্ধেক ঠিকানা জানি না। শুধু ফোনে যোগাযোগ করে চলে যেতাম।' কোভিড জয় করছেন। এঁকে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। কুর্ণিশ!