Susmita Debnath: RG কর-এ নির্যাতিতার পরিবারের হাতে নিজের আন্তর্জাতিক পদক তুলে উদাহরণ তৈরি করলেন সুস্মিতা
RG Kar Protest: দেশে ফেরার পরেও বেশ অসুস্থই ছিলেন। তা সত্ত্বেও বুধবার বিকেলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পথ পেরিয়ে নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুস্মিতা।
কলকাতা: শ্রীলঙ্কার মাটিতে এশিয়া প্যাসিফিক যোগাসনে অংশ নিতে যাওয়ার আগে RG কর (rg kar protest) কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন তিনি। কলম্বোয় জ্বর নিয়েও জোড়া পদক জেতার পর এবিপি আনন্দকে জানিয়েছিলেন, সাফল্য তিনি উৎসর্গ করছেন আর জি কর হাসাপাতালে নির্যাতিতার পরিবারকে।
কথায় নয়, কাজেও নিজের অঙ্গীকার পালন করলেন সুস্মিতা দেবনাথ (Susmita Debnath)। নিজের পদক RG কর হাসপাতালে নৃশংসতার শিকার ওই মহিলা চিকিৎসকের পরিবারের হাতে তুলে দিলেন। সঙ্গে দিলেন পাশে থাকার বার্তাও।
কলম্বোয় গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অসুস্থতা নিয়েই এশিয়া প্যাসিফিক যোগাসনে জোড়া পদক জিতেছিলেন সুস্মিতা। দেশে ফেরার পরেও বেশ অসুস্থই ছিলেন। তা সত্ত্বেও বুধবার বিকেলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাড়ি থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পথ পেরিয়ে নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুস্মিতা।
নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সুস্মিতা এবিপি আনন্দকে বললেন, 'আমি ফোনে আগেই মৃত ওই চিকিৎসক দিদির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ওঁদের জানিয়েছিলাম, কলম্বোয় এশিয়া প্যাসিফিক যোগাসনে আমার জেতা পদক ওঁদের হাতে তুলে দিয়ে আসব। সেই মতো বুধবার ওঁদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওই দিদির বাবা-মায়ের হাতে দুটি পদকই তুলে দিয়েছিলাম। তবে ওঁরা বললেন, আমিও ওঁদের মেয়ের মতোই। তাই একটি পদক তাঁরা রেখেছেন। আর একটি পদক আমার গলায় পরিয়ে দিয়েছেন।'
নির্যাতিতার বাড়িতে ওই মহিলা চিকিৎসকের বেডরুমেও গিয়েছিলেন সুস্মিতা। বলছিলেন, 'গোটা ঘর ঠাসা বইপত্রে। প্রচুর পড়াশোনা করতেন দিদি। আমি দিদির ছবিতে পদক পরিয়ে দিয়ে এসেছি। সঙ্গে রেখে এসেছি শ্রীমদভগবদগীতা। দিদিকে তো আর ফিরে পাব না। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। তবে প্রতিবাদের রাস্তা থেকে সরে আসব না। যতদিন না ন্যায় বিচার হচ্ছে, অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তি হচ্ছে, প্রতিবাদ চলবে। ন্যায় বিচার না পেলে আমার সব পদক গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়ে আসব।'
সুস্মিতার সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা। তাঁদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাবা-মা। সুস্মিতা বলছেন, 'আমি জানিয়েছি, যে কোনও রকম প্রয়োজনে সব সময় পাশে আছি। যখন খুশি ফোনে যোগাযোগ করতে বলেছি। ওঁরা বলেছেন, আমিও ওঁদের মেয়েই। সেই কারণে একটি পদক আমাকে পরিয়ে দিয়েছেন।' যোগ করলেন, 'ওই দিদি বিনামূল্যে এলাকায় রোগী দেখতেন। ভীষণ মন খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে, নৃশংসতার শিকার হয়ে মানুষটি আর আমাদের মধ্যে নেই।'
বুধবার রাত দখলের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা নির্যাতিতার বাবা-মায়ের। চোখের জল মুছে বৃহত্তর আন্দোলনের শপথ নিয়ে উদয়নারায়ণপুরের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে গেলেন সুস্মিতাও।
আরও পড়ুন: আলোড়ন ভারতীয় ক্রিকেটে, ফের কোচ হচ্ছেন রাহুল দ্রাবিড়?