এক্সপ্লোর
Advertisement
কঠোর লকডাউন ও আইসোলেশন, এই ফর্মুলাতেই করোনা জয় ভিলওয়ারার
যে হারে বাড়ছিল ভিলওয়ারার আক্রান্তের সংখ্যা, তা ভয় পেয়ে যাওয়ার মতোই ছিল। কিন্তু তারপরের ঘটনা শিহরণ জাগানোর মতোই।
নয়াদিল্লি: এক সময় করোনা আক্রান্তের উর্ধ্বগামী সংখ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল রাজস্থানের ভিলওয়ারা। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনে একেবারে বদলে গেল চিত্র। জেলা প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপে পরিস্থিতি আমূল বদলে গেল খুব অল্প সময়ে। দেশের কাছে উদাহরণ সৃষ্টি করল রাজস্থানের এই জেলা। এখন তাদের দেখেই অন্যান্য করোনা-পর্যুদস্ত এলাকাকে পা ফেলার পরামর্শ দিচ্ছে কেন্দ্র।
১৮ মার্চ। প্রথম কোভিড ১৯ আক্রান্তের সন্ধান মেলে রাজস্থানের ভিলওয়ারা জেলায়। জয়পুর থেকে ২৫০ কিলোমিটারের দূরত্বের এই অঞ্চলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। ৩০ মার্চ সংখ্য়াটা গিয়ে দাঁড়াল ২৬। চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন রাজস্থানের স্বাস্থ্য দফতরও। যে হারে বাড়ছিল ভিলওয়ারার আক্রান্তের সংখ্যা, তা ভয় পেয়ে যাওয়ার মতোই ছিল।
কিন্তু তারপরের ঘটনা আরও শিহরণ জাগানোর মতো। সবাই যেখানে প্রমাদ গুণছিল, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেখানকার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, সেখানে ঘটল একেবারে উলটপুরাণ। ৩০ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল, দিলওয়ারায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১। শুধু তাই নয়, ২৭ জন আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৭ জন। তার মধ্যে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৩ জন।
কিন্তু কীভাবে এমন অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলল ভিলওয়ারা?
সমীক্ষা বলছে, কঠোর লকডাউন ও আইসোলেশনই এর মন্ত্র। পরিস্থিতি বিচার করে ভিলওয়ারায় কার্ফু জারি হয়। নজরে রাখা হয় সেখানকার একটি বেসরকারি হাসপাতালকে, যেখানে ১৭ জন চিকিৎসক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই হাসপাতাল সিল করে দেওয়া হয় এবং সেখানকার সব মেডিক্যাল স্টাফকেই আইসোলেশনে পাঠানো হয়। ‘রুথলেস কনটেনমেন্ট’- এটা ছাড়া উপায় ছিল না, জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভিলওয়ারায় যাতে গোষ্ঠী সংক্রমণ না শুরু হয়, তার জন্য কঠোর হাতে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। স্বাস্থ্যকর্মীদের দলে দলে পাটিয়ে জেলার সকলের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়।
রাজস্থানের স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের মতে, ভিলওয়ারার পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্ফু জারি করা, গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ও জেলার সীমানা সিল করে দেওয়াই ছিল সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
প্রত্যেক করোনা আক্রান্ত কোথায় কোথায় গেছেন, কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁরা আবার কাদের সংস্পর্শে এসেছেন তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রশাসন নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীরা শহরাঞ্চলে ২ লাখের উপর বাড়ি গিয়ে গিয়ে ১০ লাখ মানুষের পরীক্ষা করেন। যেহেতু ভিলওয়ারায় ডাক্তাররাই ছিলেন আক্রান্ত, তাই এই ব্যাপারটি অন্য ভাবে দেখা হয়েছিল। শহর ও গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ২৬ লাখ মানুষকে পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া শহরের মধ্যেই ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়।
তাছাড়া জেলার বর্ডার সিল করে ২৭টি পুলিশ চৌকি বসানো হয়।
জেলার সবকটি হোটেলকে জেলাপ্রশাসনের অধীনে আনা হয়। তারপর সেখানে প্রায় দেড় হাজার জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়। এখনও সেখানে ৭০০র উপর মানুষ কোয়ারেন্টিন। মার্চের শেষের দিকে জরুরি দ্রব্যের দোকান খোলা থাকলেও ৩ এপ্রিলের পর থেকে সেগুলিও বন্ধ রাকা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে রেশন ও ওষুধ। অনুমতি ছাড়া একটি লোককেও বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না।
এই ভাবেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে ফিরে এসেছে রাজস্থানের ভিলওয়ারা। দেশের মধ্যে করোনা আক্রান্ত অন্যান্য এলাকাগুলিকে এই ফর্মুলাতেই এগনোর পরামর্শ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
ক্রিকেট
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement