Manipur Situation: পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বাঙ্কার, ড্রোন-রকেট-গুলিবর্ষণে হত ৬, সেনার অস্ত্র লুঠের চেষ্টাও, পরিস্থিতি বেগতিক মণিপুরে
Manipur Violence: শনিবার ভোরে প্রথমে মইরংয়ে রকেট হামলায় এক বৃদ্ধ মারা যান।
ইম্ফল: নতুন করে ফের উত্তপ্ত মণিপুর। পর পর গত কয়েক দিনে ড্রোন হামলা, রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল থেকে নতুন করে হিংসা ছড়িয়েছে, তাতে একদিনেই ছয় জন মারা গিয়েছেন। ইম্ফল থেকে ২২৯ কিলোমিটার দূরে, জিরিবামেই ওই ছয় জন মারা গিয়েছেন। মেইতেইদের উপর কুকি 'উগ্রপন্থী'রা নতুন করে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। (Manipur Situation)
শনিবার ভোরে প্রথমে মইরংয়ে রকেট হামলায় এক বৃদ্ধ মারা যান। মেইতেই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। ভোরবেলে উঠে পুজোয় বসেছিলেন। হামলার পর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর। এর পাশাপাশি, কুকি এহং মেইতেই গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি বিনিময় চলে, তাতে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে জিরিবাম থেকে। (Manipur Violence)
জিরিবামের পুলিশ সুপার এবং বিশার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। কিন্তু পুলিশকে লক্ষ্য করেও এলোপাথাড়ি গুলি চলে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় গুলি চালায় পুলিশও। ইম্ফলে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আইজি কে কাবিব জানান, কুকি 'উগ্রপন্থী'রা হামলা চালিয়েছে। বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই। তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। জঙ্গিদের দু'টি বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরই রকেট হামলা চালানো হয়।
এই জিরিবামেই গত মাসে শান্তিচুক্তির বৈঠক হয়, যাতে শামিল ছিলেন মেইতেই এবং হমার গোষ্ঠীর নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন সেনা এবং পুলিশ আধিকারিকরাও। শান্তির পক্ষে বিবৃতিও দেওয়া হয়। কিন্তু ওই শান্তিচুক্তিতে আপত্তি জানায় চূড়াচাঁদপুরের কুকি গোষ্ঠীগুলি। না কুকি, না মেইতেই, এই শান্তিচুক্তি শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের স্বার্থ পূরণ করছে বলে অভিযোগ করে তারা। হমার ইম্পুই গোষ্ঠীও এই চুক্তি মানতে অস্বীকার করে। সাম্প্রদায়িক সরকারের সামনে কোনও পরিস্থিতিতে মাথা নোয়ানো হবে বলে জানায় তারা।
এর পরই গত কয়েক দিন ধরে হিংসা বাড়তে শুরু করে। পর পর ড্রোনের মাধ্যমে বোমা হামলা, রকেট হামলার ঘটনা সামনে আসে। উত্তর-পূর্ব ভারতে এর আগে উগ্রপন্থীদের হাতে কখনও ড্রোন বা রকেটের মতো অস্ত্রের ব্যবহার চোখে পড়েনি। ফলে মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পুলিশ জানিয়েছে, ড্রোন প্রতিরোধী প্রযুক্তি নামানো হয়েছে। সেনার হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে লাগাতার। পাশাপাশি, সড়কপথেও চলছে নজরদারি। সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক পোস্টেও নজর রাখছে পুলিশ। পাহাড়ি অঞ্চলে বেশ কিছু বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে দ্বিতীয় এবং সপ্তম মণিপুর রাইফেলসের শিবিরে হানা দেয় উন্মত্ত ভিড়। সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুঠের চেষ্টা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়। শূন্যে গুলি ছুড়ে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করা হয়। খণ্ডযুদ্ধে আহত হন পুলিশের বেশ কয়েক জন। তবে সাধারণ বাসিন্দারা সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। যেভাবে রকেট এবং ড্রোন হামলা চলছে, তাতে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। আত্মরক্ষার কোনও উপায় তাঁদের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, প্রায় ৫০ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। তার পরও স্নাইপার ঘুরছে, ড্রোন ও রকেট হামলা চলছে। নিজের বাড়িতে খুন হচ্ছেন মানুষজন। তাই নিরাপত্তা কোথায়, প্রশ্ন তুলেছেন, স্থানীয়রা।