Uttar Pradesh BJP Elections Report: রামমন্দির নির্মাণের পরও কেন ভোটের ফল খারাপ? একাধিক কারণ দেখাল উত্তরপ্রদেশ BJP
Lok Sabha Elections 2024: লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে ৪৩টি আসনে জয়ী হয়েছে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেসের জোট। বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA পেয়েছে ৩৬টি আসন।
নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে একাধিক রাজ্যে বিজেপি-র অন্দরে মতানৈক্যের ছবি স্পষ্ট হয়ে ধরা দিয়েছে। সেই আবহেই উত্তরপ্রদেশে তুলনামূলক খারাপ ফল হওয়া নিয়ে দলের তরফে রিপোর্ট জমা দেওয়া হল। রামমন্দির নির্মাণের পরও উত্তরপ্রদেশে ফল খারাপ হওয়া নিয়ে একাধিক কারণ তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে, সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং রাজ্য সরকারের অতি সক্রিয়তা। (Uttar Pradesh BJP Elections Report)
লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে ৪৩টি আসনে জয়ী হয়েছে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেসের জোট। বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA পেয়েছে ৩৬টি আসন, যা ২০১৯ সালে প্রাপ্ত ৬৪টি আসনের প্রায় অর্ধেক। এই নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে দলের অন্দরে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে মতানৈক্য থেকে অন্তর্দ্বন্দ্ব, একাধিক তত্ত্ব উঠে এসেছে। সেই আবহেই ভোটের ফলের কারণ নিয়ে ১৫ পাতার একটি রিপোর্ট পেশ করল রাজ্য বিজেপি। (Lok Sabha Elections 2024)
উত্তরপ্রদেশ বিজেপি জানিয়েছে, দলের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে ৪০ হাজার মানুষের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। অযোধ্যা, অমেঠীর মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলিতে হারের কারণ বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি-র প্রতি জনসমর্থন ৮ শতাংশ কমেছে। আগামী নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই পদক্ষেপ করা উচিত বলে সুপারিশ রয়েছে ওই রিপোর্টে।
রাজ্যে খারাপ ফল হওয়া নিয়ে যে কারণগুলি তুলে ধরা হয়েছে, তা হল-
- রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের স্বেচ্ছাচারিতা এবং উশৃঙ্খল আচরণ।
- রাজ্য সরকারের প্রতি বিজেপি কর্মীদের মনে জমা হওয়া অসন্তোষ।
- গত ছ'বছর ধরে লাগাতার সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস। গত তিন বছরে অন্তত ১৫ বার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
- সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ নিয়ে বিরোধীদের যুক্তি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বিশেষ করে জেনারেল ক্যাটেগরির মানুষজন সাড়া দিয়েছেন তাতে। সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিরুদ্ধে জনসমর্থন আদায় করে নিয়েছেন বিরোধীরা।
- রাজপুত সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপি-কে নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
- সংবিধান পাল্টে দেওয়া নিয়ে দলীয় নেতাদের মন্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
- আগে থেকে টিকিট দিয়ে দেওয়ায় ষষ্ঠ এবং সপ্তম দফার আগে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন দলীয় কর্মীরা।
- পুরনো পেনশন নীতি তুলে দেওয়ার বিপক্ষে সরকারি কর্মী-আধিকারিকরা।
- অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে জনমনে অসন্তোষ।
- তৃণমূলস্তরে বিজেপি-র কোর ভোটারদের নাম মুছে দেওয়া হয়। ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোর ভোটারের নাম মুছে দেয় কমিশন।
- যাদব নন এমন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত কুড়মি, কোরি, মৌর্য, শাক্য এবং লোধ-দের থেকে প্রাপ্ত ভোটের হার কমেছে।
উত্তরপ্রদেশ নিয়ে এই মুহূর্তে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বিজেপি-র অন্দরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতেও সমর্থনে ভাঁটা পড়েছে বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে। এর আগে, রাজ্যে যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দিল্লিতে বিজেপি নেতৃত্বের মতবিরোধের কথাও উঠে এসেছে বার বার। প্রার্থীচয়নের ক্ষেত্রে যোগীর কোনও মতামতই গ্রাহ্য হয়নি বলে জানা গিয়েছে দলীয় সূত্রে। নির্বাচনের ফল যে খারাপ হয়েছে, তার দায়ও তাই দিল্লির নেতৃত্বের উপরই চাপিয়েছেন যোগী। সেই নিয়ে সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশ বিজেপি-র সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধরি এবং উপমুখ্যমন্ত্রী কেশপ্রসাদ মৌর্য। কিন্তু যোগী এবং কেশবের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে বলে খবর। সেই আবহে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই বিজেপি-কে ডুবিয়েছে বলে সম্প্রতি যোগী মন্তব্য করলেও, তা খারিজ করে দেন কেশব। রাজ্য নেতৃত্বকে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: NEET UG 2024: নিট প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে এইমস-র ৩ ডাক্তারি পড়ুয়াকে হেফাজতে নিল CBI