Everest Base Camp: প্রকৃতির উপর অত্যাচারের ফল, গলছে এভারেস্টের বরফ, ফাটল হিমবাহে, বেস ক্যাম্প সরাতে উদ্যোগী নেপাল
Nepal Government: এভারেস্ট পর্বতের খুম্বু হিমবাহের উপর বর্তমানে নেপালের বেস ক্যাম্পটি অবস্থিত। কিন্তু উষ্ণায়নের প্রভাবে বরফ গলতে শুরু করায়, হিমবাহটির চাদর পাতলা হতে শুরু করছে।
নয়াদিল্লি: বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে গলছে বরফ (Global Warming)। পাতলা হতে শুরু করেছে (Melting Ice) হিমবাহের চাদর (Khumbu Glacier)। তার জেরে এভারেস্ট পর্বতে (Mount Everest) নিজেদের বেস ক্যাম্প সরিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করল নেপাল (Nepal)। এই মুহূর্তে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ৩৬৪ মিটার উঁচুতে তাদের বেস ক্যাম্পটি অবস্থিত। সেটিকে ২০০ থেকে ৪০০ মিটার নীচে নামিয়ে আনার পক্ষপাতী সে দেশের সরকার।
এভারেস্ট থেকে বেস ক্যাম্প সরানোর তোড়জোড় নেপালের
এভারেস্ট পর্বতের খুম্বু হিমবাহের উপর বর্তমানে নেপালের বেস ক্যাম্পটি অবস্থিত। কিন্তু উষ্ণায়নের প্রভাবে বরফ গলতে শুরু করায়, হিমবাহটির চাদর পাতলা হতে শুরু করছে। পর্বতারোহীরা জানিয়েছেন, বেস ক্যাম্পে ঘুমোনোর সময় আরও বেশি করে ফাটল চোখে পড়তে শুরু করেছে। তাতেই বেস ক্যাম্প নামিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
নেপালের পর্যটন বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল তারানাথ অধিকারী সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘স্থানবদলের প্রস্তুতি শুরু করছি আমরা। শীঘ্রই এ নিয়ে সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। সকলের পরামর্শ নিয়ে শুরু হবে কাজ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে আমাদের। বেস ক্যাম্পে পরিবর্তন লক্ষ্য করছি আমরা। পর্বতারোহণ ব্যবসা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রেও বিষয়টি জরুরি হয়ে পড়েছে।’’
আরও পড়ুন: Agnipath Scheme Row: হিংসা-আগুনের অংশ ছিলেন না, প্রমাণিত হলে তবেই 'অগ্নিবীর', কড়া অবস্থান সেনার
এভারেস্ট পর্বত এলাকার পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করে নেপাল সরকার। বিশেষ করে পর্বতোরোহীদের নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখা হয়। তাতেই খুম্বু হিমবাহের চাদর পাতলা হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। উষ্ণায়নের প্রভাবেই এমন পরিবর্তন চোখে পড়ছে বলে মত বিজ্ঞানীদের। তবে খুম্বু হিমবাহ যে প্রতি বছর পাতলা হচ্ছে, তা ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ লিডসের গবেষকরা আগেই জানিয়েছিলেন।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, খুম্বু হিমবাহ পাথরের স্তূপের উপর বিস্তার করে রয়েছে। আবার বরফের খাড়া ঢালও রয়েছে ছড়িয়ে। বরফ গলতে শুরু করায় তাই পাথরের উপর হিমবাহের অবস্থানও নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে পাথরের চাঁইও গড়েয়ে পড়ার ঘটনাও ইদানীং বেড়েছে। তাই যে কোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। গবেষক স্কট ওয়াটসন জানিয়েছেন, খুম্বু হিমবাহ থেকে প্রতি বছর প্রায় ৯৫ লক্ষ কিউবিক মিটার জল বেরোতে শুরু করেছে।
যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা
বেস ক্যাম্প সরিয়ে কোথায় আনা হবে, এখনও তা নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে খিমলাল গৌতম হিমবাহে বেস ক্যাম্প নামিয়ে আনার সুপারিশ জমা পড়েছে সরকারের কাছে। ইদানীং কালে পর্বতারোহীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, রান্নায় তাঁদের ব্যবহৃত কেরোসিন, গ্যাসের ব্যবহারেও বরফ গলছে বলে অভিযোগ উঠছে। নেপালের এভারেস্ট বেসক্যাম্পের ম্যানেজার তথা দেশের দূষণ নিয়ন্ত্রক কমিটির সদস্য শেরিং তেনজিং শেরপা জানিয়েছেন, বেস ক্যাম্পে দিনে ৪ হাজার লিটার মূত্রত্যাগের রিপোর্ট পেয়েছেন তাঁরা। এ সবের জেরেই সাম্প্রতিক কালে হিমবাহে ধস নামার ঘটনা বেড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।