Joe Biden: গাজায় নিহত ৩০৯৬০, ‘থামতে জানতে হয়’, এবার ইজরায়েলকে কড়া বার্তা আমেরিকার
Israel Hamas War: গত বছর অক্টোবর থেকে ইজরায়েল বনাম হামাস যুদ্ধ চলছে।
নয়াদিল্লি: নয় নয় করে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এবার ইজরায়েল, বিশেষ করে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনায় মুখ খুলল আমেরিকা। গাজায় যেভাবে নিরীহ নাগরিকের মৃত্যু বেড়ে চলেছে, তার জন্য নেতানিয়াহুকে কাঠগড়ায় তুললেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্যালেস্তিনীয় সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতানিয়াহু যে অবস্থান নিচ্ছেন, তাতে ইজরায়েলের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন তিনি। (Joe Biden)
গত বছর অক্টোবর থেকে ইজরায়েল বনাম হামাস যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র গাজাতেই কমপক্ষে ৩০ হাজার ৯৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ৫২৪ জন মানুষ, যার মধ্যে অধিকাংশই মহিলা এবং শিশু। গত ২৪ ঘণ্টাতেই মারা গিয়েছেন ৮২ জন। এমন পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের সমালোচনায় সরব হলেন বাইডেন।
ইজরায়েল বনাম হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেনের বক্তব্য, "ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে অবশ্যই। কিন্তু যেভাবে নিরীহ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে, সেব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত নেতানিয়াহুর। তাঁর সিদ্ধান্তের ফলে কী ঘটছে, তা বিবেচনা করে দেখা উচিত। আমার মতে, ইজরায়েলের যত না উপকার করছেন নেতানিয়াহু, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি করছেন।" (Joe Biden)
গাজার দক্ষিণে রাফায় এই মুহূর্তে মুহুর্মুহু বোমা, গুলিবর্ষণ চলছে। গায়ের জোরে ইজরায়েল রাফা দখল করছে বলেও অভিযোগ সামনে আসছে। সব মিলিয়ে, রাফার ২৪ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ১৫ লক্ষ ঘরছাড়া বলে সামনে এসেছে রিপোর্ট। তাই যেখানে থামতে হয়, তা অতিক্রম করেছে ইজরায়েল, এমন দাবি তুলে সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলও। বাইডেনের বক্তব্য, "কোথাও রেখা টানতে হয়, লালরেখা পার করা যায় না। আরও ৩০ হাজার প্য়ালেস্তিনীয়র মৃত্যু মোটেই কাম্য নয়।"
আরও পড়ুন: Pakistan President : প্রত্যাবর্তন, দ্বিতীয়বারের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি
পরিস্থিতি যে অত্যন্ত সঙ্কটজনক, তা মেনে নিয়েছেন বাইডেনও। তাঁর কথায়, "কখনও ইজরায়েলের হাত ছাড়ব না। ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে অবশ্যই। অস্ত্রশস্ত্র কেড়ে নেওয়া যাবে না ওঁদের থেকে।" কিন্তু ইজরায়েল যে ঘোর বিপদ ডেকে আনছে, সেকথা নেতানিয়াহুকেও তিনি জানিয়েছেন বলে দাবি বাইডেনের। একদিন নেতানিয়াহুকে আফশোস করতে হবে, ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, দাবি বাইডেনের।
গত বছর ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে রকেট ছুড়ে প্রথম হামলা চালায় হামাস। সেই থেকে এযাবৎ ইজরায়েলকেই সমর্থন জানিয়ে এসেছে আমেরিকা। অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দেওয়া থেকে কূটনৈতিক মহলে ইজরায়েলকে রক্ষাকবচ দেওয়া, সবই করেছে আমেরিকা। কিন্তু গাজায় মৃতের সংখ্যা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে ইজরায়েলকে সমর্থন করা নিয়েই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে আমেরিকাকে।
আমেরিকার অন্দরেই রাজনীতিক থেকে বিশিষ্ট মহল, সকলেই বাইডেন সরকারের ভূমিকায় সরব হয়েছে। এযাবৎকালীন ইজরায়েল প্যালেস্তাইনের প্রতি যে আচরণ করেছে, সেই নিয়ে যেমন প্রতিবাদ শোনা যাচ্ছে, তেমনই যুদ্ধপরিস্থিতিতে নিরীহ প্যালেস্তিনীয়দের প্রতি তাদের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আমেরিকা কেন নিরীহ প্যালেস্তিনীয়দের প্রাণহানির ভাগীদার হবে, প্রশ্ন উঠছে দেশের অন্দরেই।
এমন পরিস্থিতিতে বাইডেন নেতানিয়াহুকে কড়া বার্তা দিলেন বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। এর নেপথ্যে নেতিনিয়াহুর সঙ্গে মতানৈক্যও দায়ী বেশ কিছুটা। ১৫ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রাফায় হামলা চালানো যাবে না বলে নেতানিয়াহুকে জানিয়েছিল বাইডেন সরকার। কিন্তু নেতানিয়াহু সেই অনুরোধ রাখেননি। গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠাতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমেরিকাকে। সেই কারণেই বাইডেন তাঁকে এমন বার্তা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও গোড়া থেকে আমেরিকা এই মানবিক আচরণ দেখালে, আজ এমন পরিস্থিতিই তৈরি হতো না বলেও মনে করছেন অনেকে।