Sahara Desert Floods: জল টলটলে হ্রদ, বালিয়াড়ি জুড়ে তালসারি, বানভাসি সাহারা মরুভূমিতে বাস্তব-কল্পনা মিলেমিশে একাকার
Floods in Sahara Desert: অতিক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে সেপ্টেম্বরের শুরুতে ভারী বৃষ্টি হয় সাহারা মরুভূমির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।
নয়াদিল্লি: অতিবৃষ্টিতে রুক্ষশুষ্ক সাহারায় সবুজের বিস্ফোরণ ঘটতে দেখা গিয়েছে আগেই। পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মরুভূমি সাহারার বানভাসি রূপ এবার সামনে এল। প্রায় অর্ধশতক পর, সাহারা মরুভূমিকে এই প্রথম জলমগ্ন অবস্থায় দেখা গেল। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে জলমগ্ন সাহারার নয়া রূপ চোখে পড়েছে। (Sahara Desert Floods)
অতিক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে সেপ্টেম্বরের শুরুতে ভারী বৃষ্টি হয় সাহারা মরুভূমির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এর পর সেখানে কার্যত সবুজের বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানা যায়। রুক্ষশুষ্ক মরুভূমিততে গজিয়ে ওঠা ঝোপঝাড়, গাছপালার ছবি সামনে এসেছিল সম্প্রতি। এবার অতিবৃষ্টির ফলে জলমগ্ন সাহারা ভূমির সামনে এল, যা দেখে হতবাক সকলে। (Floods in Sahara Desert)
উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গত ৭ এবং ৮ অক্টোবর ভারী বৃষ্টি হয়। এমনকি মরক্কো, আলজিরিয়া, টিউনিশিয়া, লিবিয়ার যে অঞ্চলে বৃষ্টি প্রায় হয়ই না, সেই অঞ্চলগুলি কার্যত ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। মরক্কো সরকার জানায়, মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় বেশ কিছু জায়গায়। মরক্কোর আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক হুসেন ইয়োআবেব জানান, এত অল্প সময়ে এই পরিমাণ বৃষ্টি গত ৫০ বছরে হয়নি।
🚨 Unbelievable! #Flooding in the #SaharaDesert on October 8, 2024. Extreme weather continues to surprise in the most unexpected places. 🌍 #ClimateChange #WeatherUpdate #SaharaFloods #StaySafe #GlobalWeather pic.twitter.com/PpL6SNNOHa
— Savage Earth (@Savagearth) October 11, 2024
মরুভূমিতে বন্যার এমন দৃশ্য চাক্ষুষ করতে ছুটে যান মানুষজন। সেখান থেকে যে ছবি সামনে এসেছে, তা অভিনব। ঢেউ খেলানো বালিয়াড়ির মাঝে নদীর আগারে এঁকেবেঁকে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে কোথাও। কোথাও আবার অনেকজটা জায়গা জুড়ে জমে রয়েছে, তার উপর ছায়া পড়েছে দীর্ঘ তালসারির। জমে থাকা জল কার্যত হ্রদের আকার ধারণ করেছে, যার একপ্রান্তে মরুদ্যান এবং বালির পাহাড় চোখে পড়ে। ঝোপঝাড়ও চোখে পড়েছে।
এর আগে, পর পর ছ'বছর খরার প্রকোপে যুঝতে হয় মরক্কোর বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে। চাষবাস ছেড়ে কৃষকরা শহরে চলে যান। গ্রামে গ্রামে বৃষ্টির জল মজুত করার কাজও শুরু হয়। সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টির পর অনেকেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। এতে মরুভূমির নীচে, ভূগর্ভের জলস্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী তাঁরা। NASA-র কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা গিয়েছে, জাগোরা এবং টাটার মাধে অবস্থিত ইরিকুই হ্রদটিতে জল ভরে গিয়েছে। গত ৫০ বছর ধরে খটখটে হয়েছিল হ্রদটি। তবে এই বন্যায় প্রাণহানি, সম্পত্তিহানিও হয়েছে।
যদিও সাহারা মরুভূমিতে অতিবৃষ্টি এবং বন্যার খবরে অশনি সঙ্কেতও দেখছেন অনেকে। বৃষ্টির পর এত দ্রুত রুক্ষ অঞ্চলে গাছপালা গজিয়ে ওঠা বা বন্যার নজির নেই। এর নেপথ্যে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবর্তন শীল আবহাওয়া রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আফ্রিকায় বর্ষার চরিত্রবদল ঘটেছে বলেও দাবি তাঁদের। ইতিহাস বলছে, পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম মরুভূমি সাহারা একসময় সবুজ বনভূমি ছিল। ঘন জঙ্গল, হাজার হাজার হ্রদ ছিল সেখানে। খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ সাল থেকে বর্ষা ক্রমশ দক্ষিণে সরে যেতে শুরু করে, তাতেই ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয় সাহারা। গত ১৩ হাজার বছর ধরে সাহারা মরুভূমি রূপেই বিরাজ করছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রতি ২০ বছর অন্তর সাহারা চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটে।