Pushpak Viman: বয়ে নিয়ে যেতে হবে না অক্সিজেন, নিরাপদে ফিরেও আসবে পৃথিবীতে, ISRO-র নয়া সৃষ্টি ‘পুষ্পক’
ISRO News: 'রামায়ণে'র পুষ্পক রথের নামানুসারেই ISRO-র নয়া মহাকাশযান উৎক্ষেপণযান।
নয়াদিল্লি: 'রামায়ণে'র গাথা থেকে একেবারে বাস্তবের মাটিতে। অসাধ্যসাধন করে দেখাল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO. পুনর্ব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান উৎক্ষেপণযান 'পুষ্পকে'র দ্বিতীয় সফল অবতরণ ঘটিয়েছে তারা। গত ২২ মার্চ 'পুষ্পকে'র দ্বিতীয় সফল অবতরণ ঘটানো হয়, যা মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। (Pushpak Viman)
'রামায়ণে'র পুষ্পক রথের নামানুসারেই ISRO-র নয়া মহাকাশযান উৎক্ষেপণযান। পুনর্ব্যবহারযোগ্য পুষ্পক মহাকাশযান উৎক্ষেপণযান তৈরির উদ্দেশ্য দু'টি, মহাকাশযান উৎক্ষেপণের খরচ কমিয়ে আনা এবং মহাকাশ অভিযানকে আরও সার্বিক করে তোলা। দেশীয় প্রযুক্তিতেই তৈরি করা হয়েছে এই মহাকাশযান উৎক্ষেপণের এই পুষ্পকযান। (ISRO News)
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বহুদিন ধরেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান উৎক্ষেপণের মাধ্যম তৈরি করতে আগ্রহী ছিল ISRO. এর জন্য বৃহত্তর প্রকল্পও রয়েছে তাদের, যার প্রাথমিক সংস্করণ এই পুষ্পকযান। সব উৎক্ষেপণে এই পুনর্ব্যবহারযোগ্য যান ব্য়বহার করা গেলে মহাকাশ অভিযানের খরচ বর্তমানের তুলনায় একধাক্কায় ৮০ শতাংশ নেমে আসবে বলে মত বিজ্ঞানীদের।
এই মুহূর্তে মহাকাশে এক কেজি ওজনের পেলোড পাঠাতে ১০ থেকে ১২.৫ লক্ষ টাকার মতো পড়ে। প্রতি কেজি পেলোড পাঠানোর এই খরচকে ৪০ থেকে ৮০ হাজারে নামিয়ে আনতে চায় ISRO. দুই ধাপে এই লক্ষ্যে পৌঁছতে চায় তারা, ১) পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎক্ষেপণযানের ব্যবহার এবং আরও কার্যকরী প্রপালসন প্রযুক্তির ব্যবহার, যার মধ্যে পড়ে Air Breathing Rocket-ও। Air Breathing Rocket অর্থাৎ পৃথিবী থেকে অক্সিজেন বয়ে না গিয়ে, বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে মহাকাশে পাড়ি দিতে সক্ষম মহাকাশযান।
মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে অক্ষত অবস্থায় কোনও যানকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত দুষ্কর। পুষ্পকের হাত ধরে সেই অসাধ্যসাধন করে দেখিয়েছে ISRO. বায়ুমণ্ডল পুনরায় প্রবেশের ক্ষেত্রে যাতে প্রচণ্ড তাপমাত্রায় সেটির ক্ষতি না হয়, তার ব্যবস্থা রয়েছে পুষ্পকে। ২০১৬ সালের মে মাসে পরীক্ষা চলাকীলন ৬৫ কিলোমিটার উঁচুতে উড়েছিল পুষ্পক, তার পর আবার তীব্র গতিতেই পুনরায় বায়ুণ্ডলে প্রবেশ করে।
ISRO-র পুনর্ব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান উৎক্ষেপণযানে তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, শক্তিশালী ইঞ্জিন, অক্ষত অবস্থায় পৃথিবীতে ফেরত আসে এবং নিরাপদ অবতরণ। অন্য মহাকাশযান উৎক্ষেপণযানের ইঞ্জিনের চেয়ে এই ইঞ্জিন একেবারেই আলাদা। উচ্চ গতিকে কাজে লাগিয়ে অক্সিজেন সংরক্ষণ করতে পারে এই স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন। ২০১৬ সালের ২৮ অগাস্ট শ্রহরিকোটার সতীশ ধওয়ন স্পেস সেন্টারে এর সফল পরীক্ষা হয় প্রথম। ৩০০ সেকেন্ডের উড়ান শেষে উৎক্ষেপণযানটি বঙ্গোপসাগরে অবতরণ করে। জ্বালানি হিসেবে সেবার হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয়। বায়ুমণ্ডল থেকে সংগ্রহ করে অক্সিজেন।
পৃথিবীতে ফিরে আসার পর উৎক্ষেপণযানকে নিরাপদে অবতরণ করানোও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ISRO-র। এক্ষেত্রে পুষ্পক একেবারে গ্লাইডারের মতো রানওয়েতে নেমে আসতে পারে যাতে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেবারে নির্ধারিত জায়গায় অবতরণ করতে সক্ষম পুষ্পক। স্বয়ংক্রিয় ভাবেই এই অবতরণ নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রতিকূল অবস্থাতেও হেরফের হবে না কোনও। এ নিয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।