Kurmi Protest: ৪৮ ঘণ্টা পার, কুড়মি আন্দোলনে স্তব্ধ রেল-সড়ক, দফায় দফায় বৈঠকেও অমিল সমাধান
Train Blockade: পুরুলিয়ায় আদ্রা ডিভিশনের কুস্তাউর ও পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়গপুর ডিভিশনের খেমাশুলি স্টেশনে চলছে রেল অবরোধ।
সুনীত হালদার, হংসরাজ সিংহ, সৌমেন চক্রবর্তী, হাওড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর: ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, কিন্তু অবস্থার একটুও কোনও বদল হয়নি। এখনও বন্ধ হয়ে রয়েছে ট্রেন। কারণ গোটা রেললাইন জুড়ে বসে চলছে অবরোধ। আর এতক্ষণ ধরে ট্রেন আটকে থাকায় তুমুল ভোগান্তি যাত্রীদের। পুরুলিয়ায় আদ্রা ডিভিশনের কুস্তাউর ও পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়গপুর ডিভিশনের খেমাশুলি স্টেশনে চলছে রেল অবরোধ। এই কারণেই ওই রেললাইনে ট্রেন যাতায়াত সম্পূর্ণ স্তব্ধ। একাধিক ট্রেন বাতিলও হয়ে গিয়েছে। বারবার আলোচনার পরেও জট কাটেনি।
কী কারণে আন্দোলন:
কুড়মিদের তফশিলি উপজাতি তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবিতে চলছে আন্দোলন। তাঁদের মাতৃভাষাকেও সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি নিয়ে চলছে আন্দোলন। সেই দাবি পূরণের জন্যই এমন আন্দোলন চলছে। তাঁদের দাবিপূরণের আশ্বাস চাইছেন আন্দোলনকারীরা। রাজ্য নাকি কেন্দ্র কে এই দাবি পূরণ করবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিকে ট্রেন আটকে থাকায় দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছে রাজ্য প্রশাসন।
বারবার আলোচনা:
একাধিক দাবিতে, মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে, বাংলা-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশায় রেল অবরোধের ডাক দেয় কুড়মি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন। তার জের ধরেই চলছে এই আন্দোলন। এই রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের দফায় দফায় বৈঠকের পরেও মেলেনি সমাধান সূত্র। ফলে দুদিনেরও বেশি সময় ধরে চলছে চরম ভোগান্তি।
একাধিক ট্রেন বাতিল:
অবরোধের জেরে বাতিল করা হয়েছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। বাতিল হয়েছে লোকাল ট্রেনও। বহু ট্রেন ঘুরপথে চালানো হচ্ছে। চরম ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা। বাতিল ট্রেনের মধ্যে রয়েছে টাটানগর-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেস, হাওড়া-বারবিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস, সাঁতরাগাছি-পুরুলিয়া রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, হাতিয়া-খড়গপুর এক্সপ্রেস, রাঁচি-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, খড়গপুর-ঝাড়গ্রাম মেমু স্পেশাল, খড়গপুর-টাটানগর মেমু স্পেশাল, ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া মেমু স্পেশাল ও ঝাড়গ্রাম-ধানবাদ এক্সপ্রেস। সাঁতরাগাছি-ঝাড়গ্রাম স্পেশালের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। কুড়মি আন্দোলনে চরম ভোগান্তি, আটকে ট্রেন থেকে পণ্যবাহী ট্রাক। একই ছবি ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গাতেও। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি রেল স্টেশনে আটকে রয়েছে বহু ট্রেন, বুধবার দেখা গিয়েছে এমন ছবি।
অবরূদ্ধ সড়ক:
মঙ্গলবার-বুধবার পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভ দেখানো হয়, ৬ নম্বর জাতীয় সড়কেও। বৃহস্পতিবারও অবরূদ্ধ একাংশ। যার জেরে, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ঝাড়খণ্ড যাওয়ার পথে আটকে পড়ে একের পর এক পণ্যবাহী লরি। লরি চালক ও দূরপাল্লার বাস চালকরা ভয়াবহ সমস্যায় পড়েছেন। খেমাশুলির ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, কলকাতার দিকে যাওয়ার সময় সার বেঁধে দাঁড়িয়ে রয়েছে লরি। রান্নার গ্যাস, অক্সিজেন সিলিন্ডারের গাড়িও আটকে রয়েছে। দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পানীয় জল নেই, খাবার নেই, ভয়াবহ সমস্যায় গাড়ি চালক-কর্মীরা। শৌচাগার নিয়েও মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।
কখন আলোচনা হবে? কখন উঠবে এই অবরোধ-আন্দোলন? যাত্রীদের সঙ্গেই অপেক্ষায় লরি-বাসের চালক-খালাসিরাও।
আরও পড়ুন: নিয়োগপত্র ঘিরে চরম বিভ্রান্তি, খবর সম্প্রচারের পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ জেলা প্রশাসনের