Siliguri on Covid19: করোনায় মৃতদের বাড়ি থেকে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা, শিলিগুড়ির পাশে 'মুক্তধারা'
ছোটবেলা থেকে বারবার শুনেছিলেন মেয়েদের শ্মশানে যেতে নেই, কিন্তু সেই ধ্যান ধারণাকে ভুল প্রমাণ করার রোখ ছোটবেলা থেকেই ছিল তাঁর।
সনৎ ঝা, দার্জিলিং: বাড়ি থেকে তাঁরাই মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছেন শ্মশানে। করছেন সৎকারের ব্যবস্থা। করোনা আবহে শিলিগুড়িবাসীর পাশে ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়েছে মুক্তধারার সদস্যরা। প্রশংসায় সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন। আর যে দলের কাণ্ডারি একজন মহিলা।
রোজ হাজার হাজার পরিবারের, পরিজনদের কেড়ে নিচ্ছে ভয়ঙ্কর করোনা। এরইমধ্যে অনেক জায়গায় অভিযোগ উঠছে, সংক্রমণের ভয়ে প্রতিবেশীরা যত না দূরে সরে যাচ্ছেন, তার থেকে বেশি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন মৃতের পরিজনরাই। কোথাও আবার করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য, লোক মিলছে না। এহেন পরিস্থিতিতে, ত্রাতার ভূমিকায় রাস্তায় নেমেছে শিলিগুড়ির সমাজসেবী সংগঠন ‘মুক্তধারা’। তাঁরাই বাড়ি থেকে করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করছেন। উদ্যোক্তা শিলিগুড়িরই মেয়ে কাবেরী চন্দ্র সরকার।
শিলিগুড়ির বাসিন্দা কাবেরী চন্দ্র সরকার বলেছেন, 'সৎকার করতে গিয়ে কীরকম সমস্যা। যাদের কেউ নেই, আমাদের খবর আসছে যাচ্ছি। করোনা রোগীর মৃতদেহ পুরিয়ে ফেরার পরে পাড়ার লোক ঢুকতে দিত না। পুলিশের সাহায্যে ঢুকতে পারি। শ্মশানেও বাধা পেতে হত। পুলিশের সহযোগিতা পেয়ে করছি। প্রতিদিন ৮-১০টা এরকম পাচ্ছি। বাড়ির থেকেও খবর আসছে, হাসপাতাল থেকে খবর আসছে।'
ছোটবেলা থেকে কাবেরী বারবার শুনেছিলেন, হিন্দু মেয়েদের নাকি শ্মশানে যেতে নেই। কিন্তু কথিত কথাকে ভুল প্রমাণিত করার জেদ একেবারে ছোটবেলা থেকেই ছিল শিলিগুড়ির উত্তর ভারত নগরের এই বাসিন্দার। শিলিগুড়ি বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্য মধুমিতা চক্রবর্তী যে প্রসঙ্গ সামনে তুলে ধরে বলেছেন, 'হিন্দু ধর্মে মেয়েদের শ্মশানে যেতে নেই। এখানে এরা একটা বিপ্লব নেই। সামাজিক রীতি ভুল ধারনা ভেঙে দিয়েছে, কুর্নিশ জানাই।
ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতিতে সকলে দু’হাত তুলে মুক্তধারার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন সকলেই। শিলিগুড়ি পুরসভার তরফেও মুক্তধারার কাজের প্রশংসা করা হয়েছে। শুধু করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহই নয়, সঙ্কটকালে অন্যান্য মৃতদেহের শেষকৃত্যেও এগিয়ে আসছে মুক্তধারা। শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের কাবেরীদের দেখে তাই একটাই প্রত্যাশা এরকম মুক্তধারা যেন জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে পরে।