Dire Wolf De-extinction: বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া শিকারি নেকড়েকে পৃথিবীতে ফেরালেন বিজ্ঞানীরা, মিহি গলায় সে কী হাঁক! ভিডিও ভাইরাল
Science News: আজ থেকে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় Dire Wolf, অর্থাৎ শিকারি নেকড়ে।

নয়াদিল্লি: ‘যারা চলে যায় ফেরে না তো হায় পিছু-পানে আর কেউ’, মানবজীবনের চরম সত্যকে কবিতায় তুলে ধরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু বিজ্ঞানের দৌলতে এবার সেই চরমসত্যও কার্যত পাল্টে গেল। কারণ হাজার হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া শিকারি নেকড়ে-কে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে সফল হলেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া কোনও প্রাণীকে পৃথিবীতে ফেরানো শুরু হল। (Dire Wolf De-extinction)
আজ থেকে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় Dire Wolf, অর্থাৎ শিকারি নেকড়ে। কিন্তু আমেরিকার বায়োটেকনোলজি সংস্থা Colossal Biosciences-এর বিজ্ঞানীরা এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। তাঁদের হাতে তিন-তিনটি শিকারি নেকড়ে শাবক জন্ম নিয়েছে পৃথিবীতে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মাধ্যমে এই কাজ সম্ভব হয়েছে, যাকে বিজ্ঞানীরা ‘World’s First De-extinction’ বলছেন। (Science News)
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শিকারি নেকড়ের যে প্রাচীন DNA ছিল, তার মাধ্যমে নতুন করে জিনোম গড়ে তোলা হয়। মানুষখেকো অন্য প্রাণীর থেকে প্রথমে শিকারি নেকড়ের DNA-র পৃথকীকরণ করেন বিজ্ঞানীরা। এর পর, এখনকার ধূসর নেকড়ের DNA সংগ্রহ করা হয়, যাতে ফিরিয়ে আনা প্রাণীর শরীরের জিন অনন্য হয়ে ওঠে। ধূসর নেকড়ের এগ সেল থেকে নিউক্লিয়াস সরিয়ে, তার মধ্যে সেই DNA প্রবেশ করানো হয়। এর পর, গবেষণাগারে কিছুদিন রেখে, সারোগেট সারমেয়দের গর্ভে তিনটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করেন বিজ্ঞানীরা।
You’re hearing the first howl of a dire wolf in over 10,000 years
— Science girl (@gunsnrosesgirl3) April 7, 2025
Back from extinction
using ancient DNA from fossils up to 72,000 years old, Colossal reconstructed a full genome , through precise CRISPR edits, and brought this species to life
pic.twitter.com/jMVtnKtT9m
সেই সারোগেট সারমেয়দের গর্ভ থেকেই তিন-তিনটি শিকারি নেকড়ে জন্ম নিয়েছে। তুষারশুভ্র সেই তিন শিকারি নেকড়ে শাবকের ছবি এবং ভিডিও-ও সামনে এসেছে, যেখানে তাদের নেকড়ের মতোই হাঁক ছাড়তে শোনা যায়। ওই তিন শিকারি নেকড়ে শাবকের নাম রাখা হয়েছে- Romulus, Remus এবং Khaleesi. এই নামকরণের সঙ্গে জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ 'গেম অফ থ্রোনস'-এর সংযোগ রয়েছে। সেখানে জন স্নো নামক যে চরিত্র ছিল, তার শিকারি নেকড়ে Ghost-এর সঙ্গে মিল পাওয়া যাচ্ছে এই তিন শিকারি নেকড়ে শাবকের।
Colossal Biosciences-এর সিইও বেন ল্যাম বলেন, "১৩০০০ বছর আগের দাঁত এবং ৭২ হাজার বছর আগের খুলি থেকে DNA সংগ্রহ করি আমরা। আর তা ব্যবহার করেই তিনটি সুস্থ শিকারি নেকড়ে সৃষ্টি করা গিয়েছে। উন্নত প্রযুক্তিকে জাদুর থেকে আলাদা করা যায় না বলে প্রচলিত ছিল একসময়। আজ সেই জাদু সকলের সামনে তুলে ধরতে পারলাম আমরা। "
এর আগে, ১৯৯৬ সালে Dolly নামের একটি ভেড়াকেও একই ভাবে ক্লোন করা গিয়েছিল। একটি প্রাণীর মতো হুবহু আর একটি প্রাণী সৃষ্টি করাকেই ক্লোনিং বলা হয়। একটি কোষকে আলাদা করে সেটিকে ডোনারের এগ সেলে প্রবেশ করানো হয় এক্ষেত্রে। ভ্রূণ তৈরি হলে সেটিকে এর পর সারোগেটের গর্ভে প্রবেশ করানো হয়। কিন্তু তুষার যুগের শেষে যেহেতু শিকারি নেকড়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়, জীবাশ্ম থেকে তিল তিল করে গোটা কোষটি গড়ে তুলতে হয় বিজ্ঞানীদের। অর্থাৎ জীবিত কোনও প্রাণীর থেকে জিনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি, তা সংগ্রহ করা হয় জীবাশ্ম থেকে। ডোনার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ধূসর নেকড়েকে, যাদের সঙ্গে শিকারি নেকড়েদের মিল রয়েছে।
এই কাজ সহজ ছিল না মোটেই। ১৪টি জিনের নমুনার মধ্যে ২০ রকমের পার্থক্য চোখে পড়ে। আকার থেকে গায়ের রোম, দাঁত থেকে হাঁক ছাড়ার ভঙ্গি, পার্থক্য ছিল একাধিক। ধূসর নেকড়ের শরীর থেকে কোষ এবং রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে এর ওই ১৪টি জিনের মধ্যে রদবদল ঘটানো হয়। শিকারি নেকড়ের জিনোম সিকোয়েন্সের সঙ্গে মিল পাওয়ার পরই তিনটি শাবক তৈরির দিকে এগোন বিজ্ঞানীরা। ধূসর নেকড়ের উপজাতি হিসেবে বিবেচিত হয় বর্তমান দিনের সারমেয়রা। তাই তাদের গর্ভেই ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর, ৬৫ দিন পর জন্ম হয় তিন শিকারি নেকড়ে শাবক Romulus এবং Remus-এর। তিন মাস পর জন্ম হয় Khaleesi-র। এর আগে, ২০০৩ সালে স্পেনের বিজ্ঞানীরাও একটি বুনো ছাগলকে অবলুপ্তি থেকে ফিরিয়ে আনেন।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
