![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Mohammed Shami Exclusive Interview: 'বিরাট ফাস্টবোলারদের মতো আগ্রাসী, গেল ভালবাসে হিন্দিতে কথা বলতে'
উত্তরপ্রদেশের আমরোহা থেকে ক্রিকেটের টানে কলকাতায়। বাংলা থেকে জাতীয় দলে স্বপ্নের অভ্যুত্থান। আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের সেরা পেস-অস্ত্র। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্য়াচে দুরন্ত বোলিং করেছেন। এবিপি লাইভকে খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিলেন মহম্মদ শামি।
![Mohammed Shami Exclusive Interview: 'বিরাট ফাস্টবোলারদের মতো আগ্রাসী, গেল ভালবাসে হিন্দিতে কথা বলতে' Cricketer Mohammed Shami speaks about Virat Kohli and Chris Gayle with ABP LIVE Mohammed Shami Exclusive Interview: 'বিরাট ফাস্টবোলারদের মতো আগ্রাসী, গেল ভালবাসে হিন্দিতে কথা বলতে'](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/04/15/bbf132504f130c7fc351f885d340ff44_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: উত্তরপ্রদেশের আমরোহা থেকে ক্রিকেটের টানে কলকাতায়। বাংলা থেকে জাতীয় দলে স্বপ্নের অভ্যুত্থান। আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের সেরা পেস-অস্ত্র। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্য়াচে দুরন্ত বোলিং করেছেন। অধরা আইপিএল ট্রফি জেতার জন্য কতটা প্রস্তুত বাংলার পেসার, চোট-কাঁটা কাটিয়ে কোন মন্ত্রে ঘটিয়েছেন প্রত্যাবর্তন, কোন জিনিসকে পয়মন্ত মানেন, মুম্বই থেকে এবিপি লাইভকে জুম কলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সব প্রশ্নেরই খোলামেলা জবাব দিলেন মহম্মদ শামি।
প্রশ্ন: পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন, বেন স্টোকস-রিয়ান পরাগের মতো দুটি মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন, মাঠে ফিরে কীরকম অনুভূতি হচ্ছে?
মহম্মদ শামি: দলের জন্য চেষ্টা করলে আর তাতে ফল পেলে খুব খুশি হই। চেষ্টা করার পরেও ফলাফল না পেলে খারাপ লাগে। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ফলাফল যে আমাদের পক্ষে গিয়েছে, তাতে আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। গত মরসুমেও এরকম হাড্ডাহাড্ডি কয়েকটা ম্যাচ হয়েছিল। ম্যাচটা জিততে পেরে খুব ভাল লাগছে কারণ টুর্নামেন্টের প্রথম ম্য়াচে সকলেরই একটা মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি থাকে, নানারকম হিসেবনিকেশ থাকে। প্রথম ম্য়াচ জিতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে।
প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়া থেকে চোট নিয়ে দেশে ফেরা, জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাবিলিটেশন, কতটা কঠিন ছিল সেই অধ্যায়?
শামি: এটাকে আমি কপাল বলব। কথায় বলে না, দানে দানে পে লিখা হোতা হ্যায় খানে ওয়ালে কা নাম। ভাগ্য যে দিকে নিয়ে যাবে, সেদিকেই যেতে হবে। মানসিকভাবে বেশি বিব্রত হওয়ার ব্য়াপার নেই। চোট পেয়েছিলাম ঠিক আছে। তারপর তো নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই। রিচার্জ করে নেওয়ার যুদ্ধ। আমি এরকম সময়ে মানসিকভাবে নিজেকে খুব শক্তিশালী রাখি। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আসতে দিই না। বরং এই ভাবে ভাবি যে, যদি ম্য়াচ খেলতাম হতে পারে আমি খারাপ পারফর্ম করতাম। যা হয়েছে ভালর জন্যই হয়েছে। আমি নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আসতে দিই না।
প্রশ্ন: জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে এত চর্চা, কতটা কঠিন এই জীবন?
শামি: খুব কঠিন। টাটকা বাতাসও প্রাণভরে যেন পাওয়া যায় না। গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত করে দেওয়া হয়। হোটেলের দুটি তলায় ঘোরাফেরা সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। সেখানেই নিজের ঘর, সেখানেই মিটিং রুম। তার বাইরে যাওয়া যায় না। বিশেষ করে খেলোয়াড়েরা সক্রিয় থাকতে, খোলামেলা থাকতে পছন্দ করে। আমাদের জন্য তাই বিষয়টা আরও কঠিন।
প্রশ্ন: নিজেকে তরতাজা রাখার জন্য কী করেন?
শামি: চাঙ্গা থাকার জন্য টাটকা খাবার খাই, প্রচুর জল ও ফলের রস পান করি। সকালে ঘুম থেকে উঠি। বন্ধু ও পরিবারের সকলের সঙ্গে কথা বলি। মনকে যতটা তাজা রাখা যায় আর কী। বায়ো বাবলে সিনেমা বা সিরিয়াল বা অন্য কোনও খেলা দেখা ছাড়া আর তো কোনও বিকল্প নেই। তাই করি। এতেই তাজা থাকি। খেলায় মনোনিবেশ করতে পারি। হোটেলের বাইরে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করার বিকল্প নেই। যা করতে হয় সবই নিজের ঘরে।
প্রশ্ন: কোন জিনিসটা নিজের জন্য পয়মন্ত মনে করেন?
শামি: আমি এসবে বিশ্বাস করি না। কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাস করি। পরিশ্রম যত বেশি করব, তত ভাল ফল পাব। ভাগ্য আলাদা জিনিস। তবে পরিশ্রমের বিকল্প হয় না।
প্রশ্ন: ক্রিস গেল তো খুব মজার চরিত্র। আপনার সঙ্গে গেলের সম্পর্ক কেমন? কোনও মজাদার অভিজ্ঞতার কথা বলুন...
শামি: ক্রিস গেল হিন্দি বলতে খুব ভালবাসে। হিন্দিতেই বেশিরভাগ মজা করে। ইংরেজিতে কথা বলতে বলতে আচমকা হিন্দি বলতে শুরু করে দেয়। আমরা যেমন গুনগুন করে গান গাই, ও সেভাবে হিন্দি বলে। আমাদের দলের পঞ্জাবি ক্রিকেটারেরা পঞ্জাবি ভাষা শেখায়। এতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এত অভিজ্ঞতা। মানুষ হিসাবে খুব ভাল। ভারতের সংস্কার খুব ভালবাসে। অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করে দেয় গেল।
প্রশ্ন: ভারতীয় দলের পেস বিভাগে এখন জায়গার জন্য লড়াই। মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, শার্দুল ঠাকুর, টি নটরাজন, যারাই সুযোগ পাচ্ছে, পারফর্ম করছে। নতুনদের সঙ্গে এই প্রতিযোগিটা কীভাবে দেখেন?
শামি: আমি এটাকে প্রতিযোগিতা হিসাবে দেখি না। নতুনরা আমাদের বেঞ্চ স্ট্রেংথ। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, নতুন যারা উঠে আসছে তারাই ভবিষ্যৎ। কেউ তো সারা জীবন খেলে যেতে পারে না। যতদিন দক্ষতা থাকবে, শরীর সঙ্গ দেবে, ততদিনই খেলব। জোর করে টেনে নিয়ে যাওয়ার মানে হয় না। আর ভাল রিজার্ভ বেঞ্চ তাই ভীষণ জরুরি। নতুন ছেলেরা ভাল খেলছে এটা দারুণ ইতিবাচক। ওদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়বে। বিভিন্ন পরিস্থিতির সঙ্গে সড়গড় হয়ে উঠবে। কোনও প্রতিযোগিতা নেই। এটা ভারতীয় দলের পক্ষে খুব ভাল খবর যে এত প্রতিভাবান ছেলেরা উঠে আসছে।
প্রশ্ন: টানা ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করার জন্য বাড়তি কী করেন?
শামি: আরে আমি তো ওই গতিতে গাড়িও চালাই (হাসি)। শরীরকে মজবুত করার ওপর জোর দিতে হয়। পেশির শক্তি বাড়াতে হয়। জিমে বেশি সময় দিতে হয়। ট্রেনিং, ডায়েট, দক্ষতা সব দরকার। ফাস্টবোলারদের জন্য গতি আর ছন্দ ধরে রাখা খুব জরুরি। এ ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।
প্রশ্ন: পঞ্জাব কিংসে অধিনায়ক কে এল রাহুল ও কোচ অনিল কুম্বলের কাছে কতটা সমর্থন পান?
শামি: কে এলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। ভারতীয় দলে একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। একে অপরকে খুব ভাল করে চিনি। ক্যাপ্টেনের সঙ্গে একজন খেলোয়াড়ার ভাল সম্পর্ক হওয়াটা ভীষণ জরুরি। তাতে কম্বিনেশন ভাল হয়। একে অপরকে ভাল বোঝা যায়। আর অনিল ভাইয়ের সঙ্গে ভারতীয় দলে আর আগেরবার আইপিএলে কাজ করেছি। সব সময় বোলারদের সাপোর্ট করে। অনিল ভাই জানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নানারকম নিয়মের বেড়াজালে বোলারদের কাজটা কতটা কঠিন। সব সময় বলে নিজের দক্ষতা আর ফিটনেসে জোর দাও। আর আমি সব জায়গাতেই খুব উপভোগ করি। কলকাতাতেও এভাবেই সময় কাটাই। বিন্দাস থাকি। নিজের কাজের ওপর জোর দিই।
প্রশ্ন: বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, এ বি ডিভিলিয়ার্স, কেন উইলিয়ামসন, কার উইকেট নিলে সবচেয়ে খুশি হবেন?
শামি: (হাসি) আমি তো এদের সকলের উইকেট নিলেই খুশি হব। সুযোগ এলে ছাড়ব কেন! ব্যাটসম্যানদের নাম নিয়ে ভাবি না। বিরাট মাঠে ভীষণ আগ্রাসী। বিরাটও ফাস্টবোলারের মতো আগ্রাসী থাকে সব সময়। যাঁদের নাম বললেন তাঁরা প্রত্যেকেই সিনিয়র। বড় প্লেয়ার। প্রচুর রান করেছে নিজের নিজের দলের হয়ে। তবে আমি কাকে বল করছি সেটা বড় কথা নয়। আমি সব সময় ভাবি আমিই সেরা।
প্রশ্ন: পঞ্জাব কিংস দলে মহম্মদ শামি-অর্শদীপ সিংহ পেস বোলিং জুটিকে নিয়ে কী বলবেন?
শামি: প্রত্য়েককে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া থাকে। সেটা কে কীভাবে পালন করল সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার ৬০-৭০ শতাংশ করতে পারলেও দল লাভবান হবে। সে মহম্মদ শামি হোক বা নতুন কোনও ছেলে। সকলকেই পরিশ্রম করতে হবে। অর্শদীপ গতবার ভাল খেলেছিল। এবারও ভাল শুরু করেছে। আমি চাই ওর মরসুমটা ভাল কাটুক। পঞ্জাব কিংসের জন্যও ভাল।
প্রশ্ন: আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে কোন ব্যাপারটা পঞ্জাব দলের কাছে ‘এক্স’ ফ্যাক্টর হতে পারে?
শামি: আরে এটা তো ভয়াবহ প্রশ্ন (হাসি)। যে কেউই বলে দেবে যে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে ম্য়াচ জিততে হবে। তবে লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে। নিজের দক্ষতায় বিশ্বাস করতে হবে। ম্যাচে পরিস্থিতি কত দ্রুত বুঝে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করছেন, সেটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে রয়েছে। গেম রিডিং ভাল হলে সেটাই হবে ‘এক্স’ ফ্যাক্টর। পরিকল্পনাগুলি কাজে লাগাতে হবে।
প্রশ্ন: বাংলার বন্ধু-বান্ধব ও ক্রিকেটপ্রেমীদের কী বলবেন?
শামি: আপনারা এত ভালবেসেছেন, সমর্থন করেছেন। ক্লাবের হয়ে খেললেও লোকে মাঠে চলে আসেন। সকলকে ধন্যবাদ। এভাবেই সমর্থন করে যান।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)