স্যানিটাইজ করে সঙ্গম, সোনাগাছির মেয়েদের রোজগারের বিকল্প পথ 'ফোন সেক্স'!
“স্মার্ট মেয়েরা ফোনে কাজ করছে। তবে অনেকেই ফোনে করতে চাইছেন না।”
কলকাতা: করোনা থাকবে, তার মধ্যেই জীবন ও জীবিকাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। থামলে চলবে না। অবলম্বন করতে হবে বিকল্প পথ। সেটাই করল সোনাগাছি। করোনাকালে সোনাগাছিতে কিছু আবশ্যক গাইডলাইন নিয়ে এসেছে দু্র্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। দেহব্যবসায় নিযুক্ত পেশাদারদের যেমন নিরাপদ রাখতে হবে তেমনই কোনও খদ্দেরও যেন বিপদে না পড়েন, সে কথা ভেবেই অভিনব পন্থা নিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: বিনা চাঁদায় দুর্গাপুজো, সোনাগাছি মানবে করোনা গাইডলাইন
গ্রাহকদের আপাদমস্তক স্যানিটাইজার করা তো বটেই সঙ্গে প্রয়োজনে স্নান করিয়ে নেওয়ার কথা বলছে দুর্বার। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বিশাখা লস্কর এবিপি আনন্দ-কে জানিয়েছেন, “মেয়েদের ঘরের সামনেই লাইফ বয় আর সাবানজল রাখা আছে। ক্লায়েন্ট এলে আগে স্যানিটাইজ করে তারপর আলাদা জায়গায় জামাকাপড় রাখতে বলছি। বিছানাও স্প্রে দিয়ে স্যানিটাইজ করে নিচ্ছে মেয়েরা।”
দু্র্বারের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত সমাজকর্মী মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়ও জানালেন একই কথা। সোনাগাছির মেয়েরা করোনাবিধি মেনেই কাজ করছে। নিজেরাই বানাচ্ছেন মাস্ক ও স্যানিটাইজার। সেই মাস্ক ও স্যানিটাইজার আবার সোনাগাছির হাজার হাজার মেয়েদের বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যদি কেউ তা কিনতে চায়, তাহলে দুর্বার সোনাগাছির মেয়েদের তৈরি মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিক্রি করতেও রাজি।
মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “সবার মধ্যেই করোনার ভয় রয়েছে। কার ভিতরে কী আছে, তা কি আর জানা সম্ভব? তাও যতটা সাবধানতা অবলম্বন করা যায় মেয়েরা তাই করছে। রাতারাতি তো আর পেশা বদল করা সম্ভব নয়। সর্দি, কাশি নিয়ে কেউ এলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। স্নান করিয়েই ক্লায়েন্টদের পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, করোনার মতো ছোঁয়াচে রোগের কথা মাথায় রেখে এই সময়ে অনেক মেয়েই ‘ফোন সেক্স’ করে রোজগার করছে। তবে এটা ঠিক, যারা ইন্টারনেট সম্পর্কে সেভাবে ওয়াকিবহল নন এবং স্মার্টফোন চালাতেও সড়গড় নন, তাঁদের খানিক অসুবিধাই হচ্ছে। দুর্বারের প্রেসিডেন্ট বিশাখা লস্করের কথায়, “স্মার্ট মেয়েরা ফোনে কাজ করছে। তবে অনেকেই ফোনে করতে চাইছেন না।”
দীর্ঘ একশো দিনের ওপর লকডাউনের কারণে সোনাগাছির অবস্থা সঙ্কটজনক। খদ্দের না আসার কারণে ধুঁকছে ব্যবসা। এই অবস্থায় কলকাতা ছাড়াও কালনা, ডোমজুর, শেওরাফুলি, সিঙ্গুর, পাণ্ডুয়া সহ একাধিক জেলার মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছে দুর্বার। ন্যূনতম চাল ডালের ব্যবস্থা করেছে তারা। তবে এভাবে আর কতদিন চলবে, তা নিয়েই রয়েছে বিরাট সংশয়!