Organ Donor Wakes Up: শরীর থেকে হৃদযন্ত্র বের করার সময় হঠাৎই জেগে উঠলেন 'মৃত'? আতসকাচের নীচে অঙ্গদান প্রক্রিয়া
Organ Donation: ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকার কেন্টাকিতে এই ঘটনা ঘটে। ব্রেনডেড ঘোষণা করা হয় তাঁকে।
নয়াদিল্লি: অঙ্গদান পবিত্র এবং মহৎ কাজ বলেই গন্য হয় গোটা পৃথিবীতে। কিন্তু সেই অঙ্গদান প্রক্রিয়া ঘিরে এবার জোর বিতর্ক আমেরিকায়। জানা যাচ্ছে, অপারেশন টেবিলে তোলার পর জেগে ওঠেন এক রোগী। তার পরও অস্ত্রোপচার চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃতের পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে অঙ্গদান প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্তও। (Organ Donor Wakes Up)
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকার কেন্টাকিতে এই ঘটনা ঘটে। টিজে হুভার নামের এক ব্যক্তি বেশিমাত্রায় মাদক নিয়ে ফেলেন, যার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরিবারের লোকজন হুভারকে ব্যাপটিস্ট হেলথ রিচমন্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে হুভারকে ব্রেনডেড ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর অঙ্গগুলি প্রতিস্থাপনের যোগ্য কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হয় প্রথমে। এক পর অপারেশন টেবিলে তোলা হয় তাঁকে। (Organ Donation)
আমেরিকার নিউ ইয়র্ক পোস্ট বিষয়টি তুলে ধরেছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপারেশন টেবিলে তোলার পরও হুভারের শরীরে প্রাণ রয়েছে বলে দেখতে পান হাসপাতালের কর্মীরা। অপারেশন টেবিলে ছটফট করছিলেন তিনি এবং তাঁর চোখ দিয়ে অশ্রুধারা গড়িয়ে পড়ছিল বলে দেখতে পান তাঁরা।
হাসপাতালের কর্মীদের উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, অঙ্গদানকারী ওই রোগীর অবস্থা দেখে দুই চিকিৎসক পিছু হটেন। ওই অবস্থায় রোগীর শরীর থেকে তাঁরা অঙ্গ বের করতে রাজি হননি। কিন্তু কেন্টাকি অর্গ্যান ডোনার অ্যাফিলিয়েটস (KODA)-র তরফে অন্য চিকিৎসকদের কার্য সম্পাদন করতে অনুরোধ জানানো হয়। ছটফট করতে থাকা হুভারকে নিস্তেজ করতে ওষুধ প্রয়োগ করা হয় তাঁর শরীরে। তার পরও তাঁর শরীর থেকে অঙ্গ বের করার পরিকল্পনা চলে।
হুভারের শরীর থেকে অঙ্গ বের করার কাজে যুক্ত ছিলেন নাতাশা মিলার। তিনি এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, কার্যতই ছটফট করছিলেন হুভার। আমি যখন পৌঁছই, স্পষ্ট দেখতে পাই ওঁর চোখ দিয় অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। KODA-র এক কর্মী জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্র অঙ্গদানের উপযুক্ত কি না, যখন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছিল, সেই সময়ই জেগে ওঠেন হুভার। ছটফট করছিলেন।
হুভারের দিদি ডনা রোরার এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন। তাঁর দাবি, ICU থেকে বের করে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাই চোখ খুলেছিলেন। তাঁরা বিষয়টি তুলে ধরলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, সেটি রিফ্লেক্স মাত্র। চোখ খোলার অর্থ বেঁচে থাকা নয়। কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে ডনার। তিনি বলেন, "ও যে বেঁচেছিল, তা-ই হয়ত বোঝাতে চাইছিল ও।"
শেষ পর্যন্ত যদিও হুভারের শরীর কেটে অঙ্গ বের করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে মতানৈক্য তৈরি হলে চিকিৎসকরা তো বটেই, KODA-র কর্মীরাও সরে দাঁড়ান। অনেকে পদত্যাগও করেন। যদিও KODA-র আধিকারিকরা যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কেন্টাকির অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, গোয়েন্দারা সবদিক খতিয়ে দেখছেন।
এই মুহূর্তে দিদির বাড়িতেই রয়েছেন হুভার। সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। তবে আগের মতো স্বাভাবিক হতে এখনও সময় লাগবে। স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছেন হুভার। হাঁটতে বা কথা বলতেও পারছেন না। অঙ্গদান নিয়ে কাজ করা KODA তো বটেই, অন্য সংস্থাগুলির ভূমিকাও এখন আতসকাচের নীচে।