ABP EXCLUSIVE: মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি? সূর্যকুমারের শটের বৈচিত্র্যে উচ্ছ্বসিত দীর্ঘদিনের সতীর্থ
Aditya Tare on Suryakumar Yadav: সূর্যকুমার যাদব সুযোগ পেয়েই কাজে লাগাতে শুরু করেছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাঁর ব্যাটের দাপটেই প্রথম ম্যাচে জিতেছে ভারত (Team India)।

কলকাতা: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি পা রেখেছেন মাস ছয়েক আগে। তারপর থেকে যে নিয়মিতভাবে দলে সুযোগ পেয়েছেন, তাও নয়। আইপিএলে দুরন্ত খেলার পরেও ভারতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ায় বিতর্কও হয়েছিল বিস্তর।
তবে সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) সুযোগ পেয়েই কাজে লাগাতে শুরু করেছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাঁর ব্যাটের দাপটেই প্রথম ম্যাচে জিতেছে ভারত (Team India)। আর কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা যুগের প্রথম জয়ে ম্যাচের সেরার স্বীকৃতি ছিনিয়ে নিয়েছেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটার সূর্যকুমারই। যাঁর শটের বৈচিত্র্য দেখে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে, তিনিই কি বিশ্বক্রিকেটের নতুন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি?
মুম্বইয়ের রাজ্য দল ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে দীর্ঘদিনের সতীর্থ আদিত্য তারে মনে করেন, সূর্যকুমারের মতো শটে বৈচিত্র্য ভারতীয় দলে আর কারও নেই। তাই বিশ্বক্রিকেটের নতুন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি সূর্যকুমারই।
এ বি ডিভিলিয়ার্স উইকেটের চারদিকে এতরকম শট খেলতে পারেন, এবং সেটাও শরীর ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে এত অবলীলায় খেলেন যে, তাঁকে মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি বলে থাকেন সকলে। ঘটনা হচ্ছে, শুক্রবারই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা করেছেন এ বি। আর সেই শূন্যস্থানেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পথে যাত্রা শুরু করেছেন সূর্যকুমার।
সূর্যকুমারই কি পরবর্তী মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি? সতীর্থের দাপট দেখে মুম্বই থেকে ফোনে এবিপি লাইভকে আদিত্য তারে বললেন, 'আমি একমত। ভারতের বর্তমান দলের আর কোনও ক্রিকেটার এতরকম শট খেলতে পারে না। কে এল রাহুলের শটেও বৈচিত্র্য রয়েছে। তবে তা সূর্যর মতো নয়। আপার কাট হোক বা স্কুপ, পুল হোক বা হুক – এতরকম শট আর কেউ খেলতে পারে না। ওকে মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি বলাই যায়। মুম্বইয়ের হয়ে খেলার সময় থেকেই এতরকম শট খেলে সূর্যকুমার। গত কয়েক মরসুমে সাদা বলের ক্রিকেটে শটে আরও বৈচিত্র্য এনেছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ব্যাটিং অর্ডারের নীচের দিকে নামত বলে শটে আরও অভিনবত্ব যোগ করেছে।'
সূর্যর সঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন আদিত্য। বলছিলেন, 'জাতীয় দলে সুযোগ ওর প্রাপ্য ছিল। যে কোনও পজিশনে ব্যাট করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, ওর শটের বৈচিত্র্য। স্পিনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী। পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও সাবলীল। মাঠের সব জায়গায় বল পাঠাতে পারে। উইকেটের সামনে হোক বা পিছনে। অবলীলায় স্কুপ মারতে পারে। আবার লং অন বা লং অফের ওপর দিয়ে বল গ্যালারিতে ফেলে দিতে পারে। যে কারণে ও বিপজ্জনক ব্যাটার।' যোগ করলেন, 'সূর্যকুমার দারুণ ক্রিকেটার। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করেছে। গত তিন-চার বছর ধরে আইপিএলেও প্রচুর রান করেছে। ২০১৮ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ফিরে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরের দিকে নামা শুরু করে। প্রচুর রান করতে শুরু করে।'
সূর্যোদয়ের নেপথ্যে আদিত্য কৃতিত্ব দিচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের রগড়ানিকে। বলছেন, 'ঘরোয়া মরসুমে ও আইপিএলে প্রচুর রান ওকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। তিরিশ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলছে বলে ও বাকিদের থেকে অনেকটাই আলাদা। অনেক পরিণত ক্রিকেটার। অনেকে খুব তাড়াতাড়ি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটিয়ে পরে হারিয়ে যায়। সূর্যকুমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য তৈরি হয়ে নেমেছে। তাই ওর দাপট দেখা যাচ্ছে। পিছনে ফিরে তাকাতে হচ্ছে না। মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে না।' যোগ করলেন, 'অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটে একসঙ্গে খেলেছি। সেই থেকেই চিনি। আমার দু-এক বছর পরেই ও দলে আসে। ২০১১-১২ থেকে মুম্বইয়ের হয়ে নিয়মিত খেলছে। জুনিয়র ক্রিকেটে ভাল খেলার পর সিনিয়র দলে সুযোগ পায়। সব ধাপ পেরিয়ে এসেছে বলেই ওকে এত প্রত্যয়ী দেখাচ্ছে। খুব প্রাণখোলা মানুষ। হইচই করতে ভালবাসে। মাঠেও উপভোগ করে। মাঠে ও মাঠের বাইরে ক্রিকেট অন্ত প্রাণ।'
সূর্যকুমারের সঙ্গে মাঠের সেরা মুহূর্ত হিসাবে আদিত্য বেছে নিচ্ছেন রঞ্জি ট্রফি ও আইপিএল জয়কে। 'একসঙ্গে মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফি জিতেছি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছি। মাঠের সেরা মুহূর্ত ওগুলোই,' বলছিলেন আদিত্য। যোগ করলেন, 'ঘরোয়া ক্রিকেটে ও আইপিএলে যেভাবে ব্যাট করে চলেছে, তাতে আরও অনেক কিছু অপেক্ষা করে রয়েছে।'
প্রতিপক্ষ বোলাররা শুনছেন কি?
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
