এক্সপ্লোর

Debosree-Sourav Exclusive: মুখে কালি মেখে ৪ ঘণ্টা শ্যুটিং, রোজ 'কেমিস্ট্রি' মুখস্থ করা.. গল্পে দেবশ্রী-সৌরভ

Debosree-Sourav Exclusive Interview: এবিপি লাইভ খুঁজল দেবশ্রী রায় আর সৌরভ চক্রবর্তীর 'কেমিস্ট্রি'

তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: কালো টপ আর নীল ডেনিমের সঙ্গে গাঢ় লিপস্টিক। একের পর এক সাক্ষাৎকার দিয়ে চলেছেন তিনি। প্রাণখোলা হাসির আওয়াজ মাঝে মাঝেই শোনা যাচ্ছিল কাচের দরজার এপার থেকেও। সাক্ষাৎকার নেওয়ার যখন ডাক এল, তখন পরিচালক এক কাপ কফি হাতে ছোট্ট একটা বিরতি নিয়েছেন। তবে নায়িকার যেন কোনও বিরতির প্রয়োজনই নেই। দিব্যি ঝলমলে, সাবলীল, প্রাণবন্ত... তা সে যতই দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল পার হয়ে সন্ধে নামুক না কেন। শুরু হল আড্ডা.. পরিচালকও ফিরলেন কয়েক মিনিটের মধ্যেই। ক্যামেরা নেই, ফলে বাধা নেই হঠাৎ যাতায়াতেও। এবিপি লাইভ (ABP Live) রেকর্ডিং অন করে খুঁজল দেবশ্রী রায় (Debashree Roy) আর সৌরভ চক্রবর্তী (Sourav Chakraborty)-র 'কেমিস্ট্রি'

প্রশ্ন: শ্যুটিংয়ের সময় বলেছিলেন, 'কেমিস্ট্রি মাসি'-কে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। সিরিজ মুক্তির পরে আপনি নিজের কাজে কতটা তৃপ্ত?

দেবশ্রী রায়: ডাবিংয়ের সময় দেখেছিলাম সিরিজটা। কিন্তু তারপরে আর দেখার সময় হয়নি। সরস্বতী পুজোর ব্যস্ততা ছিল, মিঠুনদা দেখতে গিয়েছিলাম একবার। সব মিলিয়ে এত ক্লান্ত ছিলাম আর হয়ে ওঠেনি। আসলে একসময় আমার নাচের স্কুলে সরস্বতী পুজো হত। সেটা এখন ভীষণ মিস করি। তবে পুজোর দিন মনে হল ভোগ খাব না! কয়েকজন নিমন্ত্রণ করেছিলেন, চলে গেলাম। কাজ সরস্বতী পুজোর দিন মুক্তি পেয়েছে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে। আমি, সৌরভ সবাই নিজেদের সেরাটা দিয়েছি। বাকিটা মানুষের ওপর।

প্রশ্ন: আপনি যখন প্রথম পর্দায় কাজ শুরু করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অস্তিত্ব ছিল না। এখন বিভিন্ন মাধ্যম এসেছে, প্রচারের ধরণ বদলেছে। মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয় কখনও?

দেবশ্রী: আমি চিরকালই ভীষণ লড়াকু। যখন যেমন পরিস্থিতি, সেভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি। অসুবিধা হয় না।

প্রশ্ন: কেমিস্ট্রি পড়াতে গিয়ে কী স্কুলের পড়াও মনে পড়ে গেল?

দেবশ্রী: খুব ভয় করত আমার। একদম পড়তে চাইতাম না। সৌরভ প্রায় কান ধরে নিয়ে এসে আমায় পড়াতে বসাত আর কি..

কথার মধ্যেই হাসতে হাসতে ঘরে পরিচালকের প্রবেশ। কান ধরার কথা শুনে প্রায় নিজেরই কান ধরে বললেন, 'ভাবাই সম্ভব নয়...'। দেবশ্রী হাসতে হাসতে বললেন, 'নাহ.. ওটা আমার কল্পনায় আর কি..'

প্রশ্ন: পড়ানোর দৃশ্যে অভিনয় করার আগে বাড়িতে পড়া ঝালিয়ে নিতে হত নাকি?

সৌরভ: আমি দেখতাম, পড়ানোর দৃ্শ্যগুলোর আগে দেবশ্রীদি প্রায় চিত্রনাট্যটা ভাজা ভাজা করে ফেলতেন। এত্তবার করে পড়তেন। আর আমায় বারে বারে বলে রাখতেন, পড়ানোর দৃশ্যের অন্তত ১দিন আগে যেন ওঁকে বলা হয়। উনি ভীষণ সতর্ক থাকতেন প্রত্যেকটা টার্মস নিয়ে।

দেবশ্রী: আমার চরিত্রটা হল আমিই পড়াচ্ছি। সেখানে যদি ভুল বলি, সঠিক উচ্চারণ করতে না পারি, তাহলে ভীষণ খারাপ লাগে। ওটা চাইছিলাম না।

প্রশ্ন: দেবশ্রী রায়কে পরিচালনা করছি.. টেনশন হয়েছিল?

সৌরভ: মারাত্মক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমরা তো ওঁর ছবি দেখে বড় হয়েছি। বিভিন্ন ধারার ছবিতে ওঁর অবারিত যাতায়াত। এখন বুঝতে পারি, ওঁর কাজগুলো বাঙালির মনে কতটা স্টেরয়েডের মতো কাজ করে। 'কেমিস্ট্রি মাসি'-র চিত্রনাট্য লেখার পরে যখন মাকে বলেছিলাম দেবশ্রীদিকে কাস্ট করতে চাই, উনি ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। আমি বুঝেছিলাম, দেবশ্রীদি ১০ বছর কাজ করেননি তাতে ওঁর অনুরাগীদের সত্যিই কিছু যায় আসে না। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একটা জায়গা অর্জন করেন। সেটা ওঁর মতো অভিনেত্রীর পক্ষে এত সহজে চলে যায় না। তবে হ্যাঁ.. শ্যুটিংয়ে গিয়ে আমি একটু নার্ভাসই ছিলাম। মনে হচ্ছিল , কীভাবে ওঁকে বলব.. কী ভাববেন... তবে, শ্যুটিংটাকে কীভাবে শান্তভাবে করতে হয় সেটা ওঁর থেকে শেখার মতো। পরিচালনার দিক থেকে, অভিনয়ের দিক থেকেও।

দেবশ্রী: সৌরভ শ্যুটিংয়ে ভীষণ গম্ভীর থাকে আর সেটাই ছিল আমার একমাত্র অভিযোগ। কাজ করছি ঠিক আছে, কিন্তু একটুও হাসে না কেন... (হাসি)

প্রশ্ন: ১০ বছরের বিরতিতে দেবশ্রীর অভিনয়ের খিদেটাকে কোন কোন বিষয় বাঁচিয়ে রেখেছিল?

দেবশ্রী: মানুষের ভালবাসা। আমি যে কাজই করেছি, মানুষ গ্রহণ করেছেন, আমার নতুন কাজের অপেক্ষা করেছেন। দর্শকেরা আমায় আশীর্বাদ করছেন, মনের জোর দিয়েছেন। এরপরে হয়তো আমি বসেই থাকব...

সৌরভ: মোটেই না, দেবশ্রীদিকে বসে থাকতে হবে না। অফারের বন্যা বইছে।

দেবশ্রী: আমার বসে থাকতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু একটা সঠিক অফার পাওয়া চাই। দর্শকদের যেন একটা ভাল ছবি, ভাল কাজ উপহার দিতে পারি। তার জন্য ৩ মাস, ৪ মাস, ৬ মাস অপেক্ষা করতে হলেও করব।

প্রশ্ন: 'কেমিস্ট্রি মাসি'-তে কোনটা ফুটিয়ে তোলা সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল?

দেবশ্রী: পড়ানোটা..

সৌরভ: আমি একটা বলতে পারি। দেবশ্রীদি বলেই বোধহয় ওই দৃশ্যটা করতে রাজি হয়েছিলেন। একটা কালি ছোঁড়ার দৃশ্য ছিল। সেইদিন কালি ছুঁড়তে গিয়ে ওঁর চোখে কালি ঢুকে যায়, চুলেও লেগে যায়। ক্ষতির সম্ভাবনা তো ছিল অবশ্যই। ৯০ শতাংশ মানুষই হয়তো বলতেন, আর শ্যুট করব না। কিন্তু পরের কোর্টরুম ড্রামাটাও উনি অবলীলায় অভিনয় করে গেলেন ওই কালি নিয়েই। প্রায় ৪ ঘণ্টা। তবে এই শটটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা শট হয়ে রয়েছে। দেবশ্রীদি একবারও বলেননি, মুখটা বাঁচিয়ে কালি দিও। এটা ভীষণ শিক্ষণীয়। 

প্রশ্ন: কর্মক্ষেত্রে কোন ৩টে নীতি যেটা আপনারা মেনে চলেন?

দেবশ্রী: প্রথমত, খারাপ ব্য়বহার করা যাবে না। সবসময় হাসিমুখে কথা বলতে হবে, সে যেই হোক। দ্বিতীয়ত, শ্যুটিংয়ের সময় এদিক-ওদিক হলে সেটা নিজের মতো করে সামাল দেওয়া। পরিচালক আমায় ৬টায় ছুটি দেবেন বলেও যদি দিতে না পারেন, তাহলে বুঝতে হবে নিশ্চয়ই কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। আর....

সৌরভ: আমি বলে দিই? তোমাকে দেখে মনে হয় না তুমি দেবশ্রী রায়। (হাসি)।

দেবশ্রী: আসলে অনেকে আমার মুখ, তাকানো দেখে মনে করেন আমি খুব রাগী। আদৌ তাই না। তবে হ্যাঁ.. আমি রেখে যাই। আমি বাঙাল, রাগবোই। জিনিস উল্টোপাল্টা হলে আমি রাগবই। নাকের ডগায় রাগ রয়েছে। কিন্তু সব ঠিক থাকলে আমি মাটির মানুষ। 

সৌরভ: আমার ক্ষেত্রে মনে রাখি, কখনও যেন কোনও কাজে সাবলীল না হয়ে যাই। কমফোর্ট জোনে পড়ে গেলেই থেমে যেতে হয়। কাজটা একটা নেশার মতো। দ্বিতীয়ত, হিট-ফ্লপ যেন কোনোটাই মাথার ওপর চলে না যায়। আমার কাজ গল্প বলা। হিট-ফ্লপ ভাবলে সেটা পারব না। তৃতীয়ত, কখনও যেন আমার সাধারণের সঙ্গে মেলামেশাটা বন্ধ না হয়ে যায়। রাস্তাঘাটে বেরতে না পারলে, নিজের চোখে সমস্যাগুলো দেখতে না পারলে আমি গল্প লিখতে পারব না। তখন বাস্তব সমস্যাগুলো আর দেখতে পাব না, বানিয়ে লিখতে হবে। সাধারণের থেকে দূরত্বটা যেন বেড়ে না যায়।

দেবশ্রী: ও হ্যাঁ... আমি ৩ নম্বরটা বলতে পারিনি। ওটা হল.. আমি যে কাজ করতে রাজি হয়েছি, আমার মনে হয়েছে পরিচালক কাজটা জানে। সে হচ্ছে ক্যাপ্টেন অফ দ্য শিপ। আমি বাধ্য ছাত্রীর মতোই তাঁর কথা মানব।

 

 

আরও পড়ুন: 'Pariah': প্রথম সপ্তাহ টানা হাউজফুল, তাও 'নন্দন ২' থেকে সরছে 'পারিয়া', 'আমরা আশাহত', প্রতিক্রিয়া পরিচালকের

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।

 

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

Mukul Roy Injured: বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট! কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি মুকুল রায়
বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট! কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি মুকুল রায়
Narendra Modi: সংসদে মোদির মুখে চোপড়া-কাণ্ড! নাম না করে নিশানায় তৃণমূল?
সংসদে মোদির মুখে চোপড়া-কাণ্ড! নাম না করে নিশানায় তৃণমূল?
Kolkata News: ছানি অপারেশনের পর চোখে 'আঁধার', হাসপাতালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
ছানি অপারেশনের পর চোখে 'আঁধার', হাসপাতালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
Rohit Sharma: 'ঘরে ফিরছি...আপনাদের চাই', বিশ্বজয় উদযাপনে সবাইকে ডাকলেন রোহিত, কবে? কোথায়? কখন?
'ঘরে ফিরছি...আপনাদের চাই', বিশ্বজয় উদযাপনে সবাইকে ডাকলেন রোহিত, কবে? কোথায়? কখন?
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Doctor Death: চিকিৎসক অনির্বাণ দত্তের রহস্যমৃত্যুতে অবশেষে FIR দায়ের। ABP Ananda LiveKolkata Shoot Out:  তরুণীকে লক্ষ্য করে গুলি, গুরুতর জখম অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি তরুণীSubodh Singh: ৭ বছর জেলে, অর্জুন সিংহের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই : সুবোধ সিংহNadia News: কৃষ্ণনগরের জলঙ্গি নদীতে ধরা পড়ল কুমির! ABP Ananda Live

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Mukul Roy Injured: বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট! কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি মুকুল রায়
বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট! কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি মুকুল রায়
Narendra Modi: সংসদে মোদির মুখে চোপড়া-কাণ্ড! নাম না করে নিশানায় তৃণমূল?
সংসদে মোদির মুখে চোপড়া-কাণ্ড! নাম না করে নিশানায় তৃণমূল?
Kolkata News: ছানি অপারেশনের পর চোখে 'আঁধার', হাসপাতালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
ছানি অপারেশনের পর চোখে 'আঁধার', হাসপাতালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
Rohit Sharma: 'ঘরে ফিরছি...আপনাদের চাই', বিশ্বজয় উদযাপনে সবাইকে ডাকলেন রোহিত, কবে? কোথায়? কখন?
'ঘরে ফিরছি...আপনাদের চাই', বিশ্বজয় উদযাপনে সবাইকে ডাকলেন রোহিত, কবে? কোথায়? কখন?
Anant Ambani-Radhika Merchant: বিয়েতে বাকি নেই আর এক সপ্তাহও, আজ অনন্ত এবং রাধিকার 'মামেরু', অ্যান্টিলিয়ায় বাড়ছে ভিড়
বিয়েতে বাকি নেই আর এক সপ্তাহও, আজ অনন্ত এবং রাধিকার 'মামেরু', অ্যান্টিলিয়ায় বাড়ছে ভিড়
Hardik Pandya: সমালোচনা অতীত, দুরন্ত বিশ্বকাপের পর ইতিহাস গড়লেন হার্দিক, হলেন এক নম্বর অলরাউন্ডার
সমালোচনা অতীত, দুরন্ত বিশ্বকাপের পর ইতিহাস গড়লেন হার্দিক, হলেন এক নম্বর অলরাউন্ডার
Kanchankanya Express: তখনও চলছিল রেললাইন পারাপার; সবুজ সিগন্যাল দেখে ছুটে আসছিল কাঞ্চনকন্যা, কীভাবে রক্ষা?
তখনও চলছিল রেললাইন পারাপার; সবুজ সিগন্যাল দেখে ছুটে আসছিল কাঞ্চনকন্যা, কীভাবে রক্ষা?
Hathras Satsang Stampede: মরা ভাগ্নিকে বাঁচানোর ভান করে জেল খেটেছিলেন, 'ভোলেবাবা'র কীর্তি শুনলে চমকে যাবেন
মরা ভাগ্নিকে বাঁচানোর ভান করে জেল খেটেছিলেন, 'ভোলেবাবা'র কীর্তি শুনলে চমকে যাবেন
Embed widget